ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২
শহর না গ্রামে : মোবাইলের চালক শক্তি কোথায় বেশি ?

বাংলাদেশে স্মার্টফোন, ল্যাপটপসহ বিভিন্ন ডিজিটাল ডিভাইসের ব্যবহার গত কয়েক বছরে ভয়ংকর রূপে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ডিজিটাল প্রবাহ এত দ্রুতগতিতে বাড়ছে যে, এটি সমাজে এক নতুন রূপান্তরের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, দেশের প্রতি চারটি পরিবারের মধ্যে তিনটিতেই এখন অন্তত একটি স্মার্টফোন রয়েছে। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিপিআরসি-এর ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জরিপে প্রকাশ, দেশে বর্তমানে ৭৪% পরিবারে স্মার্টফোন রয়েছে, যেখানে ২০২৩ সালে এই হার ছিল ৬৩.৩%।
গ্রাম ও শহরের তুলনায় দেখা গেছে, মোবাইল ফোন মালিকানায় গ্রাম এগিয়ে—গ্রামে ৯৮.৩% ও শহরে ৯৭.৭% পরিবারের কাছে মোবাইল রয়েছে। স্মার্টফোন ব্যবহারে শহরের হার ৮১.৬% এবং গ্রামের ৭১.৮%।
এই ব্যবহারের বিস্তারের পেছনে রয়েছে মানুষের আর্থিক অবস্থার উন্নয়ন, ইন্টারনেট সুবিধার সহজলভ্যতা, কম দামের স্মার্টফোন, এবং ডিজিটাল সেবা গ্রহণের চাহিদা।
তরুণ প্রজন্ম এই পরিবর্তনের মূল চালক। যেসব পরিবারে তরুণদের উপস্থিতি বেশি, সেখানে স্মার্টফোনের ব্যবহারও বেশি। বর্তমানে দেশের ৬৪% পরিবারে ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে, যার মধ্যে ৮০% মোবাইল নেটওয়ার্ক-নির্ভর।
ল্যাপটপ বা কম্পিউটারের ব্যবহার এখনো সীমিত। দেশে মাত্র ৫% পরিবারের কাছে ল্যাপটপ রয়েছে—শহরে প্রতি ১০টির মধ্যে ১টি এবং গ্রামে প্রতি ৪০টির মধ্যে ১টি পরিবারে এই যন্ত্র ব্যবহৃত হয়।
স্মার্টফোন মূলত ব্যবহৃত হচ্ছে যোগাযোগ, পড়াশোনা, বিনোদন, মোবাইল ব্যাংকিং, চাকরি ও ব্যবসায়িক কাজে। গবেষণা বলছে, প্রায় ৫০% স্মার্টফোন মোবাইল আর্থিক সেবায় এবং ৮০% সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যবহৃত হয়।
শিক্ষাক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়লেও তা এখনো সীমিত পর্যায়ে রয়েছে। প্রায় ৫০% ল্যাপটপ এবং ২০% স্মার্টফোন শিক্ষামূলক কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে।
নারী-পুরুষের ব্যবহারে পার্থক্য ক্রমেই কমছে। বর্তমানে দেশের ৮৮.২% মানুষ মোবাইল ব্যবহার করেন—এর মধ্যে পুরুষ ৯০.৩% এবং নারী ৮৬.১%। ইন্টারনেট ব্যবহারেও নারী অংশগ্রহণ ধীরে ধীরে বাড়ছে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে ইন্টারনেট ব্যবহার ১৩% বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৪.৮%। কম্পিউটার ব্যবহার ৯.২%—শহরে ২১.৯% এবং গ্রামে মাত্র ৩.৭%।
গ্রামে মোবাইল ব্যবহারের অন্যতম কারণ হলো প্রবাসীদের সঙ্গে যোগাযোগের প্রয়োজন। পাশাপাশি আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি ও সাশ্রয়ী ডিভাইসের সহজলভ্যতাও এর পেছনে ভূমিকা রেখেছে।
প্রযুক্তির এই বিপুল বিস্তার ডিজিটাল উন্নয়নের ইঙ্গিত দিলেও, তা নিয়ন্ত্রণ ও সচেতনতার অভাবে সামাজিক, শিক্ষাগত ও অর্থনৈতিক বৈষম্য আরও গভীর করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- তিন কোম্পানির কারখানা বন্ধ, ক্ষোভ বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের
- আইসিবি’র বিশেষ তহবিলের মেয়াদ ২০৩২ সাল পর্যন্ত বৃদ্ধি
- কেয়া কসমেটিক্সের ৮ হাজার কোটি টাকা উধাও, চার ব্যাংককে তলব
- সম্ভাবনার নতুন দিগন্তে শেয়ারবাজারের খান ব্রাদার্স
- ব্লুমবার্গের টেকসই তালিকায় বাংলাদেশের ১১ তালিকাভুক্ত কোম্পানি
- মূলধন ঘাটতিতে দুই ব্রোকারেজ হাউজ, ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ
- দুই খবরে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ শেয়ারের চমক
- চলতি বছর শেয়ারবাজারে আসছে রাষ্ট্রায়াত্ব দুই প্রতিষ্ঠান
- সাকিবের মোনার্কসহ ৮ ব্রোকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ
- ২৩ আগস্ট : শেয়ারবাজারের সেরা ৮ খবর
- হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে প্রতারণা, বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করল ডিএসই
- বিএসইসির নতুন মার্জিন বিধিমালার খসড়া অনুমোদন
- কোম্পানির অস্বাভাবিক শেয়ারদর: ডিএসইর সতর্কবার্তা
- বিমা আইন সংস্কার: বিনিয়োগ ও আস্থায় নতুন দিগন্ত
- শেয়ারবাজারের জন্য সুখবর: কমছে ট্রেজারি বিল ও বন্ডের সুদ