ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ আগস্ট ২০২৫, ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২
বিদেশগামী শিক্ষার্থী ও ব্যয় এখন ইতিহাসে সর্বোচ্চ: কারণ কী?

উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের বিদেশ গমনের প্রবণতা ক্রমশ বেড়েই চলেছে, যা এখন ইতিহাসে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বিদেশে শিক্ষার পেছনে ব্যয় হয়েছে ৬৬ কোটি ২০ লাখ ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮ হাজার ৭৯ কোটি টাকা। কেবল ব্যয়ই নয়, বরং ইউনেস্কোসহ বিভিন্ন সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বিদেশগামী শিক্ষার্থীর সংখ্যাও এখন সর্বোচ্চ।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, মানসম্মত শিক্ষার অভাব, কর্মসংস্থান সংকট, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তাহীনতার মতো কারণগুলো তাদের বিদেশ যেতে উৎসাহিত করছে। অনেকে গণঅভ্যুত্থানের পর দেশে বড় ধরনের পরিবর্তন আশা করলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। 'রিভার্স ব্রেইন ড্রেইন'-এর যে প্রত্যাশা ছিল, সেটিও ঘটেনি। বরং, চাকরির বাজারে অনিশ্চয়তা এবং সরকারি নিয়োগে ধীরগতির কারণে তরুণদের মধ্যে হতাশা বাড়ছে। ফলে উন্নত জীবন ও স্থায়ী হওয়ার উদ্দেশ্যে বিদেশে যাওয়ার প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে।
ইউনেস্কোর প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৩ সালে বাংলাদেশ থেকে ৫২ হাজার ৭৯৯ জন শিক্ষার্থী পড়াশোনার জন্য ৫৫টি দেশে গেছেন, যা এক দশক আগের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। শিক্ষাসংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, অনেক শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষাকে বিদেশ যাওয়ার একটি মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করছেন এবং তাদের অধিকাংশই আর দেশে ফিরছেন না। তাদের বক্তব্য হলো- 'দেশে স্নাতক শেষ করে যেখানে ১৫ হাজার টাকার চাকরি পাওয়া কঠিন, সেখানে বিদেশে একই ডিগ্রিতে ১ থেকে ৩ লাখ টাকা বেতন পাওয়া যায়। এছাড়া বিদেশে জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত হলেও দেশে তা নেই।'
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, গত পাঁচ বছরে বিদেশে শিক্ষার্থীদের ব্যয় আড়াই গুণের বেশি বেড়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ব্যয় হয়েছে ৬৬ কোটি ২০ লাখ ডলার, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ১২ কোটি ৮৮ লাখ ডলার বেশি। জার্মানির নিদারাইন ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপ্লায়েড সায়েন্সে পড়া সুমাইয়া রশিদ জানান, জার্মানির শিক্ষার মানের সঙ্গে দেশের শিক্ষার অনেক পার্থক্য। সেখানে ইন্টার্নশিপের সময় চাকরির নিশ্চয়তা মেলে, যা বাংলাদেশে সহজে হয় না।
বর্তমানে শিক্ষার্থীদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। 'ওপেন ডোরস রিপোর্ট অন ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশনাল এক্সচেঞ্জ'-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৭ হাজার ৯৯ জন, যা আগের বছরের তুলনায় ২৬ শতাংশ বেশি। শিক্ষার্থীরা বলছেন, দেশে ভালো চাকরির সুযোগ বা জীবনের নিরাপত্তা নেই। বিসিএস সম্পন্ন হতে যেখানে চার-পাঁচ বছর লাগে, সে সময়ে বিদেশে ভালো একটি ক্যারিয়ার গড়া সম্ভব। গণঅভ্যুত্থানের পর এসব ক্ষেত্রে পরিবর্তন আশা করেছিলাম, কিন্তু এখন আর তেমন কিছু হবে বলে মনে হচ্ছে না।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- ডিভিডেন্ড দিতে পারছে না বস্ত্র খাতের ১৩ কোম্পানি
- মার্জিন ঋণে মিউচুয়াল ফান্ড ও বন্ডে বিনিয়োগ করা যাবে না
- শেয়ারবাজারের ৬ ব্যাংকের রেকর্ড মুনাফা, ৫ ব্যাংকের লোকসান
- চলতি সপ্তাহে ঘোষণা আসছে ৭ প্রতিষ্ঠানের ডিভিডেন্ড-ইপিএস
- ১২ আগস্ট : শেয়ারবাজারের সেরা ৯ খবর
- মার্জিন ঋণ নিয়ে গুজব: ফের অস্থির শেয়ারবাজার
- ডিএসইর সতর্কবার্তার জালে দুর্বল দুই কোম্পানির শেয়ার
- অস্বাভাবিক শেয়ার দাম: ডিএসইর সতর্কবার্তা জারি
- দুই কোম্পানির অস্বাভাবিক শেয়ারদর: ডিএসইর সতর্কবার্তা জারি
- সামিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র কিনছে আরব আমিরাতের কোম্পানি
- বিসিএসে স্বতন্ত্র বিভাগে অন্য বিভাগ অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ
- রবির অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তের মুখে গ্রামীণফোন
- টানা পতনেও শেয়ারবাজারে পুনরুজ্জীবনের সংকেত
- বেসরকারি হাসপাতাল মালিকদের নতুন কমিটির অভিষেক শনিবার
- ডিভিডেন্ড পেল দুই কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা