ঢাকা, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২

জাতিসংঘ মানবাধিকার অফিস চালুর বিষয়ে সরকারের ব্যাখ্যা

ডুয়া নিউজ- জাতীয়
২০২৫ জুলাই ১৯ ১৬:৫৫:৩৬
জাতিসংঘ মানবাধিকার অফিস চালুর বিষয়ে সরকারের ব্যাখ্যা

ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনের মিশন চালুর বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যাখ্যা দিয়েছে।

শনিবার (১৯ জুলাই) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মানবাধিকারের সুরক্ষা ও বিকাশে সহায়তা করার লক্ষ্যে একটি মিশন খোলার জন্য জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের অফিস এবং বাংলাদেশ সরকার ৩ বছর মেয়াদি একটি সমঝোতা স্মারক সই করেছে।

মিশনটির মূল উদ্দেশ্য হলো বিভিন্ন সরকারি সংস্থা ও নাগরিক সংগঠনকে প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহায়তা প্রদান, যাতে করে মানবাধিকার সংরক্ষণে সক্ষমতা বৃদ্ধি, আইনি সহায়তা এবং প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোকে শক্তিশালী করা যায়। এই উদ্যোগ বাংলাদেশের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বাধ্যবাধকতা পূরণে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে ঘটে যাওয়া গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রেক্ষাপটে গৃহীত সংস্কার এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতিরই প্রতিফলন এই উদ্যোগ। তবে জাতিসংঘের কিছু মানবাধিকার সংস্থার আদর্শিক অবস্থান নিয়ে সমাজের একটি অংশের উদ্বেগ রয়েছে যা সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে। বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থা একটি গভীর সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ঐতিহ্যের ভিত্তিতে গঠিত। অনেক নাগরিক মনে করেন, যেকোনো আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে এসব মূল্যবোধের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা উচিত।

এই প্রেক্ষাপটে, ও এইচসিএইচআরের মিশন মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর ঘটনাগুলো প্রতিরোধ ও প্রতিকারে গুরুত্ব দেবে এবং পূর্ববর্তী সরকারের সময় ঘটে যাওয়া লঙ্ঘনের ঘটনায় জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার চেষ্টা করবে। এ মিশন দেশের স্বীকৃত আইন, সমাজ ও সংস্কৃতির বাইরে গিয়ে কোনো সামাজিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা করবে না।

সরকার আশা করে, মিশনের কার্যক্রম সর্বদা স্বচ্ছ থাকবে এবং স্থানীয় অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার ভিত্তিতে পরিচালিত হবে। জাতিসংঘও বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় বাস্তবতাকে সম্মান জানিয়ে কার্যক্রম চালানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

সরকার স্পষ্ট করেছে, জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে এই অংশীদারিত্ব সামঞ্জস্যপূর্ণ না থাকলে বাংলাদেশ এই সহযোগিতা থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেওয়ার সার্বভৌম অধিকার সংরক্ষণ করে।

উল্লেখযোগ্য যে, অতীতে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও গণহত্যার যেসব ঘটনা ঘটেছে, সেসময় এ ধরনের একটি কার্যকর সংস্থা থাকলে অনেক অপরাধ হয়তো সঠিকভাবে তদন্ত, নথিভুক্ত ও বিচারের আওতায় আনা যেত। বর্তমান সময়ে মানবাধিকারের প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতি যেন শুধু আদর্শিক না হয়ে বাস্তব ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে গড়ে ওঠে।

সরকার মনে করে, এই অংশীদারিত্ব আমাদের প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি নাগরিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে যা আইনের শাসন, মূল্যবোধ এবং জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতার ভিত্তিতে পরিচালিত হবে।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত