ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ১২ আষাঢ় ১৪৩২

দুর্বল বীমা কোম্পানিগুলোর দায়িত্বও নিচ্ছে সরকার

ডুয়া নিউজ- শেয়ারবাজার
২০২৫ জুন ২৬ ১২:১৮:২০
দুর্বল বীমা কোম্পানিগুলোর দায়িত্বও নিচ্ছে সরকার

দেশের বীমা খাতে অনিয়ম, দাবি নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রতা এবং আর্থিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে সরকার এবার ব্যাংক খাতের আদলে দুর্বল বীমা কোম্পানিরও সাময়িক মালিকানা গ্রহণ করতে যাচ্ছে। পলিসিধারীদের স্বার্থ রক্ষা এবং বীমা খাতের শৃঙ্খলা ফেরাতে প্রস্তাবিত হয়েছে ‘বীমাকারীর রেজল্যুশন অধ্যাদেশ-২০২৫’।

প্রস্তাবিত খসড়া অধ্যাদেশ তৈরি করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। অধ্যাদেশ অনুযায়ী, সরকার প্রয়োজনে কোনো দুর্বল বা সমস্যাগ্রস্ত বীমা প্রতিষ্ঠানের সাময়িক মালিকানা গ্রহণ, প্রশাসক নিয়োগ, অবসায়ন, একীভূতকরণ অথবা তৃতীয় পক্ষের কাছে বিক্রির ক্ষমতা পাবে।

১৫টি বীমা কোম্পানির ওপর নজরদারি

বর্তমানে ১৫টি জীবন বীমা কোম্পানির আর্থিক অবস্থার উপর বিশেষ নিরীক্ষা চলছে। এসব কোম্পানির পলিসিধারীদের প্রায় ৪ হাজার ৬১৫ কোটি টাকার দাবি এখনো অনিষ্পন্ন, যার মধ্যে প্রায় ৩ হাজার ৯৮০ কোটি টাকার দাবি এখনও পরিশোধ করা হয়নি।

নিরীক্ষাধীন ১৫টি জীবন বীমা কোম্পানি

সানফ্লাওয়ার লাইফ, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ, সানলাইফ, পদ্মা ইসলামী লাইফ, প্রগ্রেসিভ লাইফ, প্রটেক্টিভ ইসলামী লাইফ, বেস্ট লাইফ, হোমল্যান্ড লাইফ, প্রাইম ইসলামী লাইফ, যমুনা লাইফ, ডায়মন্ড লাইফ, স্বদেশ লাইফ, গোল্ডেন লাইফ, বায়রা লাইফ এবং এনআরবি ইসলামিক লাইফ।

এদের ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত তিন বছরের আর্থিক বিবরণী নিয়ে নিরীক্ষা চলছে। অডিট ফার্মগুলোকে ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

খসড়া অধ্যাদেশে প্রস্তাবিত প্রধান বিষয়সমূহ

মালিকানা হস্তান্তর ও অবসায়ন

সরকার বা আইডিআরএ প্রয়োজনে কোনো বীমা কোম্পানিকে একীভূত, অবসায়ন বা আংশিক/সম্পূর্ণভাবে তৃতীয় পক্ষের কাছে বিক্রি করতে পারবে।

কর্মকর্তা অপসারণ ও প্রশাসক নিয়োগ

আইডিআরএ কোম্পানির চেয়ারম্যান, পরিচালক, প্রধান নির্বাহীসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের অপসারণ করতে পারবে। কোম্পানির কার্যক্রম পুনর্গঠনে প্রশাসকও নিয়োগ দেওয়া যাবে।

ব্রিজ বীমাকারী প্রতিষ্ঠান গঠন

মালিকানা হস্তান্তরের আগে একটি সাময়িক ‘ব্রিজ বীমা কোম্পানি’ গঠন করতে হবে। এর মেয়াদ হবে ২ বছর, যা সর্বোচ্চ ৫ বছর পর্যন্ত বাড়ানো যাবে। এ প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় থাকবে পর্ষদ, প্রধান নির্বাহী এবং তা দেশি-বিদেশি উৎস থেকে অর্থায়ন পাবে।

গ্রাহক সুরক্ষা তহবিল ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কাউন্সিল

প্রস্তাবিত রেজল্যুশন অধ্যাদেশে একটি ‘গ্রাহক সুরক্ষা তহবিল’ গঠনের প্রস্তাব রাখা হয়েছে, যা দাবি নিষ্পত্তিতে ব্যবহার করা যাবে। পাশাপাশি বীমা খাতে কাঠামোগত ঝুঁকি মোকাবেলায় একটি ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কাউন্সিল গঠনের সুপারিশ রয়েছে।

শেয়ারহোল্ডার ও পাওনাদারদের ক্ষতিপূরণ

ব্যাংক রেজল্যুশন আইনের তুলনায় এখানে কিছু ভিন্নতা আনা হয়েছে। এখাতে কেবল আমানতকারী নয়, শেয়ারহোল্ডার ও পাওনাদাররাও ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অধিকার রাখবে।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত