ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ১২ আষাঢ় ১৪৩২
ইরান ইস্যু : শান্তির দ্বার খুললো নাকি বড় যুদ্ধ আসন্ন?

গত ১৩ জুন আকস্মিক এক হামলার মাধ্যমে শুরু হওয়া ইরান-ইসরায়েল সংঘাত ১২ দিন পর আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধবিরতির ঘোষণায় পৌঁছেছে। যদিও আপাতত দুই পক্ষের মধ্যে বড় কোনো হামলার খবর নেই তবুও প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে—এই বিরতি কি স্থায়ী শান্তির ইঙ্গিত নাকি আরও বড় সংঘাতের আগে একটি বিরামমাত্র?
সংঘাতের সূচনা কীভাবে?
ইসরায়েল প্রথমে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা ও সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালায় যখন পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে আলোচনা ভেস্তে যায়। এই হামলায় ইরান হারায় সেনাপ্রধানসহ বহু শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও পরমাণু বিজ্ঞানীকে। এর পরপরই শুরু হয় ইরানের প্রতিশোধ। একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে তারা ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে কার্যত অকার্যকর করে তোলে। চাপ বাড়লে ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রকে সরাসরি হামলায় যুক্ত হওয়ার অনুরোধ জানায়।
নবম দিনে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় ক্লাস্টার বোমা হামলা চালায় এবং সবকিছু মিলিয়ে পরিস্থিতি দ্রুতই বিস্তৃত যুদ্ধের রূপ নিতে শুরু করে।
যুদ্ধবিরতির ঘোষণা কিন্তু শান্তি কি নিশ্চিত?
১২তম দিনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দেন যে ইসরায়েল ও ইরান একটি চূড়ান্ত যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছেছে। কিন্তু এর কয়েক ঘণ্টা পরই ইসরায়েল দাবি করে, ইরান দুটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে যার পাল্টা জবাবে তেহরানের কাছে একটি রাডার স্টেশনে হামলা চালানো হয়। যদিও ইরান ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার অভিযোগ অস্বীকার করে এই পাল্টাপাল্টি অবস্থান যুদ্ধবিরতির বাস্তবতা নিয়েই প্রশ্ন তোলে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দুইটি সম্ভাব্য পথ রয়েছে:
আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধানে চুক্তির পথ:
২০১৫ সালের জেসিপিওএ চুক্তির মতো একটি নতুন পারমাণবিক চুক্তিতে পৌঁছানো হতে পারে একটি সম্ভাবনা। ইউরোপীয় দেশগুলো এর পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওও ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচির বিষয়ে ইতিবাচক ইঙ্গিত দিয়েছেন।
চুক্তি ভেস্তে যাওয়ার ঝুঁকি:
অতীতে ট্রাম্প নিজেই জেসিপিওএ থেকে সরে গিয়েছিলেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে ইসরায়েল কোনো নতুন চুক্তিকে সহজভাবে মেনে নেবে না বলে মনে হচ্ছে। তার ওপর ইরানের পার্লামেন্ট সম্প্রতি জাতিসংঘের পরমাণু সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিতের পক্ষে আইন পাস করেছে। তেহরানের অবস্থান এখনও কঠোর।
সামনে কী অপেক্ষা করছে?
যদিও আপাতত যুদ্ধবিরতি কার্যকর তবে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ইরানের অনমনীয় মনোভাব এবং ট্রাম্পের ‘কোনোভাবেই ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রম চালু হতে দেব না’ মন্তব্য পরিস্থিতিকে পুনরায় উত্তপ্ত করে তুলতে পারে। ফলে এই বিরতি হয়তো শান্তির নয় বরং বড় সংঘাতের আগে এক নিঃশ্বাস নেওয়ার সুযোগমাত্র।
চূড়ান্ত বিশ্লেষণে ‘ইরান সংকট’ শেষ হয়েছে বলা যতটা আশাবাদী বাস্তবতা হয়তো ততটাই জটিল।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- সরাসরি পারমাণবিক অ'স্ত্র পাবে ইরান!
- প্রথম প্রান্তিকে মুনাফা থেকে লোকসানে গেল চার ব্যাংক
- সাত কোম্পানির বিনিয়োগকারীদের পুঁজির বড় অংশ উধাও
- যেসব শর্তে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলো ইরান
- ইরানে বড় ধ্বংসলীল : ৬ বিমানবন্দরে একযোগে হামলা
- পাঁচ কোম্পানিতে বেড়েছে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের শেয়ার
- হা'মলার পর হন্যে হয়ে ইরানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের
- ভিডিও ফাঁস করার বিষয়ে মুখ খুলেছেন শরীয়তপুরের সেই ডিসি
- খোঁজ মিলছে না আয়াতুল্লাহ খামেনির!
- মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা; উত্তেজনা তুঙ্গে
- জবাব দিতে শুরু করেছে ইরান
- শেয়ার কিনেছেন চার কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকরা
- মোবাইলে কল এলেই ইন্টারনেট বন্ধ? এক মিনিটেই সমাধান!
- পর্যাপ্ত রিজার্ভ থাকা সত্বেও ফেসভ্যালুর নিচে ১৬ ব্যাংকের শেয়ার
- মুন্নু সিরামিকের বিনিয়োগকারীদের জন্য দারুণ সুখবর