ঢাকা, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

দুই দিনের আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র-চীনের বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত

ডুয়া নিউজ- আন্তর্জাতিক
২০২৫ জুন ১১ ২২:৩৪:৫২
দুই দিনের আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র-চীনের বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত

দুই দিনব্যাপী আলোচনার পর যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র চীনের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় দুর্লভ খনিজ পদার্থ আমদানি করতে পারবে। একইসঙ্গে, চীনা শিক্ষার্থীরা যুক্তরাষ্ট্রের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবেন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির বরাতে জানা যায়, লন্ডনে অনুষ্ঠিত আলোচনায় চীনের দুর্লভ খনিজ রপ্তানি ছিল মূল বিষয়বস্তু। চুক্তিটি কার্যকর করতে এখন শুধু ট্রাম্প ও চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের অনুমোদনের অপেক্ষা রয়েছে।

ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছেন, “চীনের সঙ্গে একটি চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। এখন কেবল প্রেসিডেন্ট সি ও আমার অনুমোদন প্রয়োজন। চীন প্রয়োজনীয় খনিজ রপ্তানিতে সম্মত হয়েছে এবং আমরা চীনা শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সুযোগ দিচ্ছি।”

মার্কিন বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লুটনিক বলেন, এই চুক্তির ফলে খনিজ ও ম্যাগনেট রপ্তানিতে আরোপিত নানা সীমাবদ্ধতার অবসান ঘটবে। দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করে আসছিল, স্মার্টফোন, বৈদ্যুতিক যান ও অন্যান্য প্রযুক্তিপণ্য তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় খনিজের রপ্তানি চীন ইচ্ছাকৃতভাবে বিলম্ব করছে।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রও চীনের ওপর প্রযুক্তি ও শিক্ষা খাতে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে—বিশেষ করে সেমিকন্ডাক্টর ও এআই-সংক্রান্ত পণ্যে। এর পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় চীন মার্কিন কিছু কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

গত ৫ জুন দুই রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে ফোনালাপের পর আলোচনার পথ প্রশস্ত হয়। চীনের উপবাণিজ্যমন্ত্রী লি চেংগ্যাং নিশ্চিত করেছেন, দুই দেশ একটি নীতিগত কাঠামোতে একমত হয়েছে এবং এটি বাস্তবায়নের অপেক্ষায় রয়েছে।

চলতি বছরের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বৃদ্ধির জেরে বেইজিং পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছিল, যা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে টানাপোড়েনের মধ্যে ফেলে। পরবর্তীতে মে মাসে জেনেভায় আলোচনা শেষে উভয় দেশ সাময়িকভাবে শুল্ক কমাতে সম্মত হয়—যুক্তরাষ্ট্র ১৪৫ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশে এবং চীন ১২৫ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে।

তবে দুই সপ্তাহের মধ্যেই উভয় পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ তোলে। যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করে, চীন এখনো কিছু মার্কিন কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা বজায় রেখেছে, যেটা চুক্তিবিরোধী। চীন পাল্টা অভিযোগে বলে, যুক্তরাষ্ট্র হুয়াওয়ের চিপ ব্যবহারে বাধা, শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল এবং সফটওয়্যার রপ্তানি বন্ধ করে চুক্তি লঙ্ঘন করেছে।

চলমান আলোচনার অংশ হিসেবে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা কিছু দুর্লভ খনিজের রপ্তানির জন্য লাইসেন্স দিয়েছে। যদিও কোন কোন দেশ এই অনুমোদনের আওতায় পড়ছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়নি।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত