ঢাকা, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ৩ কার্তিক ১৪৩২
গভীর সংকটের দিকে শেয়ারবাজার, তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ জরুরী

ডুয়া নিউজ: বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে দীর্ঘ সময় ধরে ধারাবহিক পতন এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থার ঘাটতি ক্রমাগত গভীর সংকটের দিকে এগোচ্ছে। সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের বৈঠক, আশ্বাস ও নির্দেশনা সত্ত্বেও বাজার স্থিতিশীল হতে পারছে না। কখনো কখনো সামান্য ইতিবাচক প্রবণতা দেখা দিলেও তা স্থায়ী হচ্ছে না। সংশ্লিষ্টদের মতে, এখন কেবল বক্তব্য ও পরিকল্পনায় আস্থা ফিরছে না, প্রয়োজন বাস্তব এবং দ্রুত বাস্তবায়নযোগ্য জরুরী পদক্ষেপ।
প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকের আগের দিন ৮ মার্চ উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে কিছুটা চাঙ্গাভাব দেখা দেয়। বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা ছিল উচ্চপর্যায়ের ওই বৈঠক থেকে বাজার চাঙ্গা করার মতো তাৎক্ষণিক কোনো সিদ্ধান্ত আসবে।
১১ মে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা শেয়ারবাজার উন্নয়নে পাঁচটি নির্দেশনা দেন। তবে নির্দেশনাগুলো দীর্ঘমেয়াদী ভিত্তিক হওয়ায় বাজারে তাৎক্ষণিক কোনো ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারেনি। বরং বৈঠকের পরদিন থেকেই বাজার ফের পূর্বের মতো পতনের ধারায় চলে যায়।
এরপর প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি, দুই স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই ও সিএসই) এবং সিডিবিএল-এর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। সেখানে বাজার স্থিতিশীল করতে কিছু প্রস্তাবনা ও করণীয় নির্ধারণ করা হলেও অধিকাংশ পরিকল্পনা মধ্যমেয়াদি বা দীর্ঘমেয়াদি হওয়ায় বাজারে তাৎক্ষণিক ইতিবাচক পরিবর্তন আসেনি।
পরবর্তীতে ডিএসই কার্যালয়ে (১৮ মে) স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি আবারও আশ্বাস দেন, শেয়ারবাজার উন্নয়নে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। তবে ব্রোকারেজ হাউজগুলোর প্রতিনিধিরা সেখানে সাফ জানিয়ে দেন, আশ্বাসে আস্থা ফেরানো সম্ভব নয়। তারা সরকারের কাছে দ্রুত কিছু দৃশ্যমান প্রণোদনা দাবি করেন, যার মধ্যে বিও হিসাবের বার্ষিক ফি মওকুফ, মূলধন লাভ কর অব্যাহতি, ব্রোকার কমিশন হ্রাস, ডিভিডেন্ড কর অব্যাহতি এবং অগ্রিম আয়কর হ্রাস উল্লেখযোগ্য।
আজ ১৯ মে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে লেনদেন শুরুতে বাজারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিলেও প্রথমভাগেই সূচক পতনের দিকে যায়। পরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর আসে যে বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া নির্দেশনার বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনায় অর্থ মন্ত্রণালয়ে অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করছেন। এ খবরে বাজারে সাময়িক স্বস্তি ফেরে এবং সূচক ঘুরে দাঁড়ায়। একপর্যায়ে বাজারে চাঙ্গাভাবও লক্ষ্য করা যায়।
তবে বড় ব্রোকারেজ হাউজ ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সাপোর্ট না পাওয়ায় বাজারের সেই ইতিবাচক ধারা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ফলে দুপুরের পর থেকে সূচক আবারও নেতিবাচক দিকে মোড় নেয় এবং লেনদেন শেষে উভয় বাজারেই পতন স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পরিস্থিতি আর গভীর সংকটের দিকেই যাচ্ছে। এখন শুধু নিয়ন্ত্রক সংস্থা বা বিনিয়োগকারীদের ভূমিকা যথেষ্ট নয়, বরং সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপ ও কার্যকর সমর্থন জরুরি হয়ে পড়েছে। তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, সময়মতো কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে শেয়ারবাজার আরও গভীর বিপর্যয়ের দিকে ধাবিত হবে, যা দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য অশনিসংকেত হয়ে দেখা দিতে পারে।
শেয়ারবাজারের বিশ্লেষণ ও ইনসাইড স্টোরি পেতে আমাদের পেজ ফলো করুন।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- বাংলাদেশ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা, খেলাটি সরাসরি দেখুন (LIVE)
- ৪০ বছরের ইতিহাসে ডিভিডেন্ডে নজির ভাঙল এপেক্স ট্যানারি
- ডিভিডেন্ড ঘোষণায় রেকর্ড ভাঙ্গল লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্স!
- একদিনে 'এ' ক্যাটাগরিতে ফিরল দুই কোম্পানি
- বস্ত্র খাতের ৮ কোম্পানিতে বেড়েছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ
- মার্জিন ঋণ আতঙ্কে হঠাৎ ধস নামলো শেয়ারবাজারে!
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে মুন্নু এগ্রো
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করবে তালিকাভুক্ত ৪ কোম্পানি
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করবে তালিকাভুক্ত তিন কোম্পানি
- ১৪ অক্টোবর: এক নজরে শেয়ারবাজারের ২০ খবর
- ইপিএস প্রকাশ করেছে ৮ কোম্পানি
- ১০ কোম্পানির কারণে ৩ মাস পেছনে গেল শেয়ারবাজার
- শেয়ারবাজার কি ধ্বংসের পথে? আর কত রক্তক্ষরণ?
- পাকিস্তান বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা: নোমান আলীর শিকার মার্করাম
- ডিভিডেন্ড ঘোষণার তারিখ জানাল ৯ কোম্পানি