ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
হরিয়ানায় গুঁ'ড়িয়ে দেওয়া হল ম'সজিদ

ডুয়া ডেস্ক: যত দিন যাচ্ছে ততই ভয়াবহ হচ্ছে ভারতে সংখ্যালঘু মুসলিমদের জীবন-জীবিকা। এমনকি ধর্মীয় স্থাপনাও টার্গেটে পরিণত হচ্ছে। আর এটা অনেক জায়গায় রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় হচ্ছে। সম্প্রতি মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের মাজার ভাঙা নিয়ে আন্দোলন করেছিল একদল উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা। তবে সেটা সম্ভব না হলেও দেশটির বিভিন্ন মসজিদ-মাদ্রাসা ভেঙে ফেলা হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে আইন সংশোধন করেই এগুলো করা হচ্ছে। এবার ভারতের হরিয়ানা রাজ্যে ৫০ বছরের পুরোনো একটি মসজিদ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজ্যটিতে উগ্র হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার ক্ষমতায় রয়েছে এবং দিন দুয়েক আগে রাজ্যটির ফরিদাবাদ পৌরসভা কর্তৃপক্ষ মসজিদটি ভেঙে ফেলে।
তবে প্রশাসনের দাবি, এটি বেআইনি স্থাপনা ছিল, তাই নিয়ম মেনেই ভাঙা হয়েছে। এদিকে অর্ধশত বছরের পুরোনো এই মসজিদ ভেঙে ফেলায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
গতকাল বুধবার (১৬ এপ্রিল) পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম মুসলিম মিরর এবং সিয়াসত ডেইলি।
এ প্রসঙ্গে মুসলিম মিরর বলছে, হরিয়ানার ফরিদাবাদে অবস্থিত বড়খাল গ্রামের আকসা মসজিদ — যার বয়স প্রায় ৫০ বছর — গত ১৫ এপ্রিল সোমবার ভেঙে দিয়েছে ফরিদাবাদ পৌর কর্পোরেশন। মসজিদ ভাঙার এই সিদ্ধান্ত ঘিরে স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
মসজিদটি এখনও আদালতে বিচারাধীন থাকা সত্ত্বেও সেটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। ঘটনার সময় এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ছিল, এমনকি উপস্থিত ছিলেন তিনজন সহকারী পুলিশ কমিশনারও। স্থানীয়দের দাবি, মসজিদ সংক্রান্ত মামলা এখনো ভারতের সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মুশতাক জানান, “এটা অত্যন্ত কষ্টদায়ক। সুপ্রিম কোর্টের কোনও চূড়ান্ত রায় এখনও দেওয়া হয়নি। তাহলে মসজিদ ভাঙা হল কেন?”
তিনি দাবি করেন, প্রশাসন প্রথমে মসজিদের পাশের দোকানগুলো সরিয়ে দেয়, তারপর মসজিদ গুঁড়িয়ে দেয়। তার ভাষায়, “সবটা পরিকল্পনা করেই করা হয়েছে। আমাদের কোনো সময় পর্যন্ত দেওয়া হয়নি।”
তিনি আরও বলেন, “মসজিদটি প্রায় ৫০ বছর আগে গ্রামের সাবেক এক সারপঞ্চের দেওয়া জমিতে তৈরি হয়েছিল। ৬০০–৭০০ বর্গগজ জায়গা জুড়ে থাকা এই মসজিদ বহু বছর ধরে এলাকার মুসলিমদের শান্তিপূর্ণভাবে নামাজ পড়ার স্থান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।”
মুশতাক বলেন, “এই জমি সংক্রান্ত বিরোধ বহু পুরোনো—প্রায় ২৫ বছরের। এতদিন পর হঠাৎ করে এখন এটাকে অবৈধ বলা হচ্ছে।”
তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মসজিদটি একটি অবৈধ স্থাপনা ছিল এবং বিধি মেনেই তা অপসারণ করা হয়েছে। ফরিদাবাদ পৌর কর্পোরেশনের দাবি, এটি কোনো হঠাৎ সিদ্ধান্ত ছিল না, বরং পূর্ব পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ভাঙার কার্যক্রম চালানো হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, “এই মসজিদসহ আরও কয়েকটি অবৈধ স্থাপনা সরকারিভাবে চিহ্নিত হয়েছিল। আমরা আদালতের নির্দেশ মেনেই পদক্ষেপ নিয়েছি।”
এদিকে মসজিদ ভাঙার ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বাসিন্দা ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা এর সময় ও প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বিশেষ করে, যখন বিষয়টি দেশের সর্বোচ্চ আদালতে বিচারাধীন, তখন প্রশাসনের এমন পদক্ষেপকে অনেকেই “উসকানিমূলক ও অমানবিক” বলে অভিহিত করছেন।
এই ঘটনার পর স্থানীয় পর্যায়ে প্রতিবাদ ও অসন্তোষ দানা বাঁধছে, আর সোশ্যাল মিডিয়াতেও ব্যাপক প্রতিক্রিয়া ও ক্ষোভ দেখা যাচ্ছে।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- বাতিল হচ্ছে ২০ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স, তালিকায় শেয়ারবাজারের ১৪টি
- ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর ১.৪ বিলিয়ন ডলারের শেয়ার বিক্রির ঘোষণা
- শেয়ারবাজারের ৬৬ কোম্পানির প্রতি বিএসইসি’র কঠোর বার্তা
- গভীর রাতে ঢাবি শিবির সভাপতির ফেসবুক পোস্টে তোলপাড়
- বনানীতে ঢাবির সাবেক ছাত্রীর ম’রদেহ উদ্ধার
- শেয়ারবাজারের ১৮ ব্যাংককে ডিভিডেন্ড না দেওয়ার নির্দেশ
- ড. ইউনূসকে ‘আক্রমণ’!
- শেয়ারবাজার ধসের দায় চাপছে বিএসইসি নেতৃত্বের ওপর
- ঈদের ছুটি নিয়ে নতুন প্রস্তাবনা
- জেড ক্যাটাগরি ও ন্যুনতম শেয়ারধারণে ব্যর্থ কোম্পানিতে বসছে স্বতন্ত্র পরিচালক
- ফাঁস হলো হাসনাত-সার্জিসকে হ-ত্যার ভ'য়ঙ্কর পরিকল্পনা
- শিক্ষা ক্যাডারে ৪৯তম বিশেষ বিসিএস সার্কুলার প্রকাশে পিএসসির চেয়ারম্যানকে স্মারকলিপি
- ঘুরে দাঁড়ানোর পথে দেশের শেয়ারবাজার: দৃশ্যমান হচ্ছে ইতিবাচক পদক্ষেপ
- ভারতে রেড অ্যালার্ট জারি!
- ‘নো ডিভিডেন্ড’ ঘোষণা করেছে দুই কোম্পানি