ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০ ভাদ্র ১৪৩২
শেয়ারবাজারে টেলিকম সেক্টরে সালমান এফ রহমানের সিন্ডিকেট: ৬২৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ

ডুয়া ডেস্ক : টেলিকম সেক্টরেও শেয়ারবাজারের মতো শক্তিশালী প্রভাব বিস্তার করেছেন সালমান এফ রহমান। আন্তর্জাতিক কল পরিচালনার জন্য নিয়োজিত আন্তর্জাতিক গেটওয়ে (আইজিডব্লিউ) অপারেটরের ব্যবসা নিজের হাতে তুলে নিয়ে তিনি ২৬টি প্রতিষ্ঠানকে নিয়ন্ত্রণ করেন, যেখানে প্রায় ৬২৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন এবং এখান থেকে পুরো টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
আইজিডব্লিউতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলেও, সালমানের প্রভাবের কারণে কেউ বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে সাহস পায়নি। টাকার অপ্রাপ্তি এবং স্বার্থ সিদ্ধির জন্য তিনি পাঁচটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন এবং ২০১৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত অপারেটরদের বাধ্যতামূলকভাবে তার প্রতিষ্ঠানে অর্থ প্রেরণ করতে বাধ্য করেন।
এছাড়া, রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকেও সালমান সাবেক এমপি শামীম ওসমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, এবং আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানককে আইজিডব্লিউ লাইসেন্স প্রদান করেন, যার মাধ্যমে বড় ধরনের অর্থ লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে। রাজনৈতিক প্রভাব কাজে লাগিয়ে এই লাইসেন্স প্রদান করা হয় এবং চারটি প্রতিষ্ঠান নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে, তবে এ বিষয়ে কেউ প্রকাশ্যে কথা বলেনি।
সালমান এফ রহমান ১৮টি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের চাপ দিয়ে তার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন, যার ফলে বিটিআরসি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে দুদকের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে। বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. এমদাদ উল বারী জানিয়েছেন, গেটওয়েতে অর্থ সংগ্রহের ক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলা দেখা গেছে এবং টেলিকম খাতে এক ধরনের অনিয়মের অভয়ারণ্য সৃষ্টি হয়েছে।
২০১২ সালে সালমান ২৩টি বেসরকারি অপারেটরের মধ্যে ১৮টি প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে আইজিডব্লিউ গঠন করেন। এর মধ্যে তিনি নিজের নামে পাঁচটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন।
সালমানের প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো কম্পিউটার লিমিটেড ২৪৯ বার, বাংলাট্রাক ২৫ বার, গ্লোবাল ভয়েস টেলিকম ৪২ বার, ডিজিকন ২৫ বার এবং ইউনিক ইনফোওয়ে ১ বার টাকা প্রেরণ করেছে। তবে, ২০১৩ সালে ডিজিকন টেলিকমের লাইসেন্স বিটিআরসি রাজস্ব না দেয়ার কারণে ব্লক করা হয়।
এছাড়া, একটি 'মার্কেট ডেভেলপমেন্ট ফান্ড' তৈরি হলেও তা কার্যকর হয়নি। প্রতি মাসে নেটওয়ার্ক উন্নয়নের নামে ১০ শতাংশ অর্থ কেটে নেয়া হয়েছে, যার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬২৫ কোটি টাকা। তবে, এই অর্থ কোথায় এবং কীভাবে ব্যয় হয়েছে, সে বিষয়ে স্পষ্ট তথ্য নেই।
এ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে দুই হাজার কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ রয়েছে। আইজিডব্লিউ অপারেটরের রাজস্বের ৪০ শতাংশ বিটিআরসি, ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ আইসিএক্স এবং ২২ দশমিক ৫ শতাংশ এএনএসকে পরিশোধ করা হয়, তবে ৯ বছরের মধ্যে আইওএস অপারেটররা নন-আইওএস অপারেটরের চেয়ে বেশি আয় করেছে। এই সিন্ডিকেটের কারণে অনেক অপারেটর আর্থিকভাবে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে শেয়ারবাজারের ১১ কোম্পানিতে
- কোম্পানি পুরোদমে উৎপাদনে, তারপরও শঙ্কায় বিনিয়োগকারীরা!
- বিও অ্যাকাউন্টের ফি নিয়ে বিনিয়োগকারীদের সুখবর দিল বিএসইসি
- মার্জারের সাফল্যে উজ্জ্বল ফার কেমিক্যাল
- এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ উচ্চতায় ৫ কোম্পানি
- শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পর প্রথম ‘নো ডিভিডেন্ড’
- শেয়ারবাজারে মিডল্যান্ড ব্যাংকের নতুন যাত্রা
- তদন্তের খবরে থামছে দুই কোম্পানির ঘোড়দৌড়
- আট কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কাড়াকাড়ি
- নতুন উচ্চতায় অগ্রসর হচ্ছে দেশের শেয়ারবাজার
- সর্বনিম্ন দামে আটকে গেল ৭ কোম্পানির শেয়ার
- ডেনিম উৎপাদন বাড়াতে এভিন্স টেক্সটাইলসের বড় পরিকল্পনা
- চলতি সপ্তাহে ঘোষণা আসছে ৫ কোম্পানির ডিভিডেন্ড-ইপিএস
- পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কার পথে এগোচ্ছে বাংলাদেশের শেয়ারবাজার
- তিন কোম্পানির অস্বাভাবিক শেয়ারদর: ডিএসইর সতর্কবার্তা