ঢাকা, বুধবার, ৪ জুন ২০২৫, ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
লাইভে এসে হিরো আলমের আ-ত্ম-হ-ত্যা

প্রতারণার শিকার হয়ে ভিডিও কলে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার সময় ময়মনসিংহের নান্দাইলে সৌদি প্রবাসী যুবক রাজিব মিয়া ওরফে হিরো আলম (৩২) আত্মহত্যা করেছেন।
নিহত রাজিব মিয়া ওরফে হিরো আলম উপজেলা সিংরুল ইউনিয়নের মহাবৈ গ্রামের বাসিন্দা।
সোমবার (২ জুন) সকালে উপজেলা সিংরুল ইউনিয়নের মহাবৈ গ্রামের স্ত্রী-সন্তানসহ আত্মীয়দের সঙ্গে কথা বলে সৌদিতে একটি গাছে ঝুঁলে আত্মহত্যা করে হিরো আলম। আকষ্মিক এমন ঘটনার পর পরিবারের মাঝে চলছে আহাজারি। এ ঘটনায় এলাকায় চলছে ব্যাপক আলোচনা।
সৌদি আরবে কর্মরত হিরো আলমের আত্মহত্যার খবরে শোকস্তব্ধ তার পরিবার। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন ৮০ বছর বয়সী মা আনোয়ারা বেগম। তিনি ছেলের মৃত্যুর খবরে বারবার আহাজারি করে বলেন, “আমার বাজানরে মাইর্যালছে আজিজুইল্যা। হেরে তোমরা ধরো। আমি অহন কারে লইয়া বাঁচবাম?” এ কথা বলতে বলতেই হঠাৎ তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের উত্তর গোবিন্দপুর গ্রামের আবেদ আলীর ছেলে হিরো আলম। প্রায় এক বছর আগে পাশের গ্রামের এক আদম ব্যবসায়ী আজিজুল হকের মাধ্যমে পাঁচ লাখ টাকা দিয়ে সৌদি আরবের দাম্মামে পাড়ি জমান। কথা ছিল একটি ফ্যাক্টরিতে মাসে ৪০ হাজার টাকা বেতন পাবেন। কিন্তু বাস্তবে সেখানে গিয়ে আকামা না থাকায় কোনো কাজ জোটেনি। অবশেষে ভাইয়ের সহায়তায় অস্থায়ীভাবে কোনো রকমে টিকে থাকলেও নিজের খরচ চালাতেই হিমশিম খেতে হচ্ছিল তাকে।
এদিকে দেশে থাকা পরিবারের ওপর চাপ বাড়তে থাকে। ঋণের টাকা শোধ করতে না পারায় পাওনাদাররা হিরো আলমের স্ত্রী চাঁদনি বেগমের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। প্রতিদিন ফোনে স্বামীর সঙ্গে কথা হতো চাঁদনির। কিন্তু হিরো আলম নিজের আর্থিক অক্ষমতার কথা জানিয়ে টাকা পাঠাতে না পারায় দাম্পত্য কলহ তৈরি হয়। শেষপর্যন্ত পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
সোমবার সকাল ১১টার দিকে হিরো আলম একটি ভিডিও কলে স্ত্রী চাঁদনির সঙ্গে কথা বলেন। টাকা নিয়ে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের একপর্যায়ে ফোনটি তার ভাবি নিপা আক্তারের কাছে দিতে বলেন। আলম তখন জানিয়ে দেন তিনি আর দেশে টাকা পাঠাতে পারবেন না। নিজের সংসারও চলছে কষ্টে। মা ও সন্তানদের দেখভালের অনুরোধ জানান তিনি।
এরপর বড় মেয়ে আশা মনি (১২) ও ছোট মেয়ে হাবিবা আক্তার (৭)-কে ফোনে কথা বলতে বলেন। ছোট মেয়ে হাবিবার সঙ্গে শেষ কথা বলার সময় হিরো আলম তাকে বলেন, "ভালো করে পড়ালেখা করিস আর আমার জন্য দোয়া করিস।" এই কথা বলেই ফোনের স্ক্রিন অন্ধকার হয়ে যায়—তিনি একটি গাছে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
কিছুক্ষণ পর সৌদি আরব থেকে বড় ভাই আরিফুল ইসলাম পরিবারের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে নিশ্চিত করেন হিরো আলম আত্মহত্যা করেছেন।
এলাকার লোকজন জানায়, হিরো আলম খুবই ভালো ছেলে ছিল। সংসারের ব্যয় মিটাতে না পেরে একটা স্বপ্ন নিয়ে সৌদি আরব গিয়েছিল। কিন্তু আদম ব্যবসায়ীর কথার ফাঁদে পড়ে এখন সবই শেষ হলো। এ ঘটনার জন্য আদম ব্যবসী আজিজুলের বিচার চান তারা।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর ১.৪ বিলিয়ন ডলারের শেয়ার বিক্রির ঘোষণা
- শেয়ারবাজারের ৬৬ কোম্পানির প্রতি বিএসইসি’র কঠোর বার্তা
- গভীর রাতে ঢাবি শিবির সভাপতির ফেসবুক পোস্টে তোলপাড়
- বনানীতে ঢাবির সাবেক ছাত্রীর ম’রদেহ উদ্ধার
- লাইভে এসে হিরো আলমের আ-ত্ম-হ-ত্যা
- শেয়ারবাজারের ১৮ ব্যাংককে ডিভিডেন্ড না দেওয়ার নির্দেশ
- ড. ইউনূসকে ‘আক্রমণ’!
- শিক্ষা ক্যাডারে ৪৯তম বিশেষ বিসিএস সার্কুলার প্রকাশে পিএসসির চেয়ারম্যানকে স্মারকলিপি
- শেয়ারবাজার ধসের দায় চাপছে বিএসইসি নেতৃত্বের ওপর
- ঈদের ছুটি নিয়ে নতুন প্রস্তাবনা
- ফাঁস হলো হাসনাত-সার্জিসকে হ-ত্যার ভ'য়ঙ্কর পরিকল্পনা
- ঘুরে দাঁড়ানোর পথে দেশের শেয়ারবাজার: দৃশ্যমান হচ্ছে ইতিবাচক পদক্ষেপ
- ভারতে রেড অ্যালার্ট জারি!
- ‘নো ডিভিডেন্ড’ ঘোষণা করেছে দুই কোম্পানি
- ছাত্রদল সভাপতির পদ হারিয়েছেন রাকিব! যা জানা গেল