ঢাকা, বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৩ কার্তিক ১৪৩২
ভয়াবহ অবস্থায় ভারতের অর্থনীতি
ডুয়া নিউজ : বিশ্বের অন্যতম এবং দ্রুত বর্ধনশীল দেশ হলো ভারত। সেই ভারত পড়েছে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সমস্যায়। দেশটির সর্বশেষ জিডিপি’র তথ্যে এই চিত্র ফুটে উঠেছে। ভারতীয় সাংবাদিক সৌতিক বিশ্বাস ‘ইন দ্য ফাস্টেস্ট-গ্রোয়িং বিগ ইকোনমি লুজিং স্টেম?’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ কথাই বলেছেন। বার্তা সংস্থা বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
সৌতিক বিশ্বাস লিখেছেন, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে দেশটির অর্থনীতি সেভেন-কোয়ার্টারে কমে দাঁড়িয়েছে শতকরা ৫.৪ ভাগ। অথচ রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (আরবিআই) এই সংখ্যা শতকরা ৭ ভাগ বলে পূর্বাভাস দিয়েছিল। ফলে ওই সময়ে আরবিআইয়ের পূর্বাভাসের চেয়ে অনেক কম জিডিপি অর্জিত হয়েছে। যদিও এই চিত্র উন্নত দেশগুলোর তুলনায় এখনো শক্তিশালী। তবুও এই জিডিপি অর্থনীতি ধীরগতির হওয়ার ইঙ্গিত দেয়।
দেশটির অর্থনীতিবিদরা বলেন, এরই মধ্যে ভোক্তাদের চাহিদা দুর্বল হয়েছে বা কমে গেছে। কয়েক বছর ধরে কমেছে বেসরকারি বিনিয়োগ। সরকারি খরচের খাত একটি অত্যাবশ্যকীয় চালিকাশক্তি। তবে তা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পিছিয়ে নেয়া হয়েছে। দেশটির বৈশ্বিক রপ্তানি ২০২৩ সালে এসে দাঁড়ায় শতকরা মাত্র ২ ভাগ। ফাস্ট-মুভিং কনজ্যুমার গুডস (এফএমসিজি) বিষয়ক কোম্পানিগুলো তাদের রিপোর্টে বলছে, তাদের বিক্রি কমেছে। প্রকাশ্যে যেসব প্রতিষ্ঠান বাণিজ্য করে তাদের বেতন বিষয়ক বিল গত তিন মাসে সংকুচিত হয়েছে। এর আগে সমালোচিত আরবিআই ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের জন্য প্রবৃদ্ধি শতকরা ৬.৬ ভাগ অর্জন হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে। অর্থনীতিবিদ রাজেশ্বরী সেনগুপ্ত বলেছেন, এটা স্পষ্ট যে, অর্থনীতিতে পরিষ্কারভাবে স্লোডাউন বা ধীরগতি দেখা দিয়েছে।
একই সঙ্গে (ভোক্তাদের) চাহিদা একটি গুরুতর সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। তবে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন অর্থনীতির একটি উজ্জ্বল চিত্র এঁকেছেন। গত সপ্তাহে তিনি বলেছেন, অর্থনীতির এই পতন ধারাবাহিক নয়। কিন্তু নির্বাচনের দিকে দৃষ্টি দেয়ার সময়ে সরকারি ব্যয় কমানোর ফলে এমনটা হয়েছে। তিনি আশা করেন, তৃতীয় চতুর্ভাগে প্রবৃদ্ধি এই পতনকে পুষিয়ে নেবে।
সীতারমন বলেন, নির্দিষ্ট মজুরির ফলে অভ্যন্তরীণ ভোক্তা চাহিদায় প্রভাব ফেলছে। বৈশ্বিক চাহিদাও ধীরগতির হচ্ছে। তাছাড়া আছে কৃষিতে জলবায়ুজনিত বাধা। এসব চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও ভারত সম্ভবত সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ হিসেবে অবস্থান করবে।
দেশেটির কেন্দ্রীয় সরকারের সিনিয়র একজন মন্ত্রীসহ অর্থনীতিবিদ, আরবিআই-এর অর্থনৈতিক নীতি বিষয়ক গ্রুপের একজন সাবেক সদস্য যুক্তি দেখান যে, মুদ্রাস্ফীতি কমাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুদের হার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। এর ফলে প্রবৃদ্ধির গলা টিপে ধরেছে। তবে ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের ক্ষেত্রে ঋণের ক্ষেত্রে অধিক হার নির্ধারণ করা হয়েছে। এর ফলে বিনিয়োগ কমেছে। ভোক্তাদের চাহিদা কমেছে। এ দু’টি বিষয়ই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি। রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া প্রায় দুই বছর ধরে সুদের হার অপরিবর্তিত রেখেছে। প্রাথমিকভাবে এটা করা হয়েছে ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির কারণে। অক্টোবরে সেখানে মুদ্রাস্ফীতি শতকরা ৬.২ ভাগ ছাড়িয়ে যায়। অথচ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বোচ্চ সীমা শতকরা ৪ ভাগ অতিক্রম করেছে এবং তা ১৪ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চে পৌঁছেছে। প্রধানত এ ঘটনায় ঘটেছে খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধি।
এ বিষয়ে দিল্লিতে অবস্থিত জওয়াহেরলাল নেহরু ইউনিভার্সিটির উন্নয়ন বিষয়ক অর্থনীতিবিদ হিমাংশু বলেন- ভোক্তা চাহিদা যদি শক্তিশালী না হয় তাহলে সুদের হার কমিয়েও আপনি প্রবৃদ্ধিকে বাড়াতে পারবেন না। যখন চাহিদা থাকে শুধু তখনই বিনিয়োগকারীরা ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করেন। কিন্তু এখন সেই পরিস্থিতি নেই। রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার বিদায়ী গভর্নর শক্তিকান্ত দাস বিশ্বাস করেন, ভারতের প্রবৃদ্ধির গল্প এখনো অক্ষত আছে। তিনি আরও যোগ করেন- মুদ্রাস্ফীতি এবং প্রবৃদ্ধির মধ্যে ভারসাম্য বজায় আছে। তবে অর্থনীতিবিদরা বলেন, রেকর্ড পরিমাণ খুচরা ঋণ এবং অনিরাপদ ঋণ বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে ইঙ্গিত মেলে যে, উচ্চ হারের সুদের মধ্যেও জনগণ অর্থনৈতিক চাহিদা মেটাতে ঋণ নিচ্ছেন। শহরে চাহিদা দুর্বল হচ্ছে।
মুম্বইভিত্তিক ইন্দিরা গান্ধী ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট রিসার্সের সহযোগী প্রফেসর মিস সেনগুপ্ত বলেন, ভারতের অর্থনীতির চলমান সংকটের সূচনা হয়েছে ‘দুই রকম গতিসম্পন্ন প্রক্ষেপণ থেকে, যা চালিত হয়েছে পুরনো এবং নতুন অর্থনীতি দিয়ে। কনসাল্টিং পার্ম ডেলোইটের মতে, উপসাগরীয় সহযোগিতা সংগঠন জিসিসি বিশ্ব জুড়ে যে পরিমাণ কাজ করে তার শতকরা কমপক্ষে ৫০ ভাগ এখন ভারতে। এই প্রতিষ্ঠানটি দৃষ্টি দেয় আরঅ্যান্ডডি, ইঞ্জিনিয়ারিং ডিজাইন এবং কনসাল্টিং সার্ভিসে। এ খাত থেকে রাজস্ব আসে ৪৬০০ কোটি ডলার। তাদের প্রতিষ্ঠানে কর্মরত উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন ২০ লাখ মানুষ। আরও সংশয়মূলক ইঙ্গিত আছে।
২০১৩ থেকে ২০১৪ সালে ভারতের গড় শুল্কহার বৃদ্ধি পেয়েছে শতকরা ৫ ভাগ থেকে ১৭ ভাগে। ডলার কিনতে ক্রেতাদেরকে অবশ্যই অর্থ পরিশোধ করতে হচ্ছে রুপিতে। এর ফলে বাজারে তারল্য কমেছে।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে মুন্নু ফেব্রিক্স
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ১৯ কোম্পানি, দেখুন এক নজরে
- আজ বাংলাদেশ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ: কখন, কোথায়-যেভাবে দেখবেন সরাসরি(LIVE)
- ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া: খেলাটি সরাসরি ফ্রিতে দেখুন(LIVE)
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে অগ্নী সিস্টেমস
- ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া:কখন, কোথায়-যেভাবে দেখবেন লাইভ
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে জেএমআই হসপিটাল
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে সিমটেক্স ইন্ডাষ্ট্রিজ
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে তালিকাভুক্ত২৪ কোম্পানি
- নেগেটিভ ইকুইটি মুক্ত করতে মার্জিন ঋণে তালা মারছে বিএসইসি
- ২১ দাবিতে নতুন বেতন কাঠামোর প্রস্তাব, সর্বনিম্ন ৩৫ হাজার
- ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া: খেলাটি সরাসরি দেখুন(LIVE)
- শেয়ারবাজারের তালিকায় যুক্ত হলো আরও এক বন্ধ কোম্পানি
- এবারও বিনিয়োগকারীদের হতাশ করল মিরাকেল ইন্ডাস্ট্রিজ
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস