ঢাকা, বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

‘জনগণ দায়িত্ব দিলে আবারও দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়বে বিএনপি’

২০২৫ ডিসেম্বর ০৯ ১১:৪৬:২৪

‘জনগণ দায়িত্ব দিলে আবারও দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়বে বিএনপি’

নিজস্ব প্রতিবেদক: দুর্নীতি দমন করার জন্য জনগণ যদি দায়িত্ব দেয়, বিএনপি আবারও এই লড়াই নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, “দূরত্বে যাওয়া দরকার নেই, শুধু একজন গ্র্যাজুয়েটের সঙ্গে মেধার ভিত্তিতে চাকরি খুঁজতে গিয়ে দেখা সমস্যাগুলো দেখলেই বোঝা যায়। মাসের পর মাস ধরে সাধারণ সরকারি সেবা পেতে হিমশিম খাওয়া কৃষকের ভোগান্তি দেখুন। হাসপাতালে গিয়ে তরুণদের পরিবার কিভাবে কষ্টে পড়ে, তা পর্যবেক্ষণ করুন। অথবা ব্যবসা বাঁচাতে ঘুষ দিতে বাধ্য উদ্যোক্তাদের কষ্টও চোখে পড়ে।”

আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উপলক্ষে ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে তারেক রহমান বলেন, “খাবারের দাম কেন বাড়ে, স্কুলে ভালো শিক্ষা কেন মেলে না, রাস্তায় নিরাপত্তা নেই সবকিছুর পেছনে মূল কারণ দুর্নীতি। এটি প্রতিদিন লাখো মানুষের জীবনকে দমবন্ধ করে দিয়েছে।”

তিনি বলেন, “বাংলাদেশে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই নতুন নয়; বহু যুগ ধরে এই আলোচনা চলছে। আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস আমাদের সেই সংগ্রামের কথা মনে করিয়ে দেয়। সেই সময়টাও স্মরণ করে, যখন বাংলাদেশ সত্যিকারের অগ্রগতি করেছিল, মূলত বিএনপির আমলে।”

তারেক রহমান আরও উল্লেখ করেন, “রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান প্রশাসনে শৃঙ্খলা ফিরিয়েছিলেন, সরকারি সেবা পরিচ্ছন্ন ও অর্থনীতিকে মুক্ত করতে উদ্যোগ নিয়েছিলেন, যা অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহার কমিয়েছে। পরে প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আমলে সরকারি প্রতিষ্ঠানে আধুনিকায়ন শুরু হয়। নতুন ক্রয় নীতি, কঠোর আর্থিক আইন, শক্তিশালী অডিট ব্যবস্থা ও পরিষ্কার নজরদারি প্রতিষ্ঠিত হয়। সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ ছিল ২০০৪ সালে স্বাধীন ‘দুদক’ গঠন, যা সরকারের হস্তক্ষেপ ছাড়া কাজ করতে সক্ষম। তখনকার সময়ের এই সংস্কার বিশ্বব্যাংক, এডিবি সহ আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রশংসা পেয়েছিল। টিআইবির জরিপেও ২০০২-২০০৫ সালের মধ্যে দুর্নীতি কমেছে বলে পাওয়া গেছে।”

বিএনপির নেতৃত্বাধীন সময়ে গৃহীত বড় পরিবর্তনগুলো তুলে ধরেছেন তারেক রহমান-

  • শক্তিশালী অর্থ ব্যবস্থাপনা: বাজেট নিয়ন্ত্রণ, অডিট, ব্যাংকিং ও মানি লন্ডারিং-বিরোধী আইন।
  • স্বচ্ছ ক্রয় নীতি: প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র এবং নিয়মের মধ্যে সরকারি ক্রয়।
  • উন্মুক্ত বাজার: টেলিকম, মিডিয়া, বিমান পরিবহন খাতে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি।
  • ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ: প্রশাসন সহজ ও জবাবদিহি বাড়ানো।

ভবিষ্যতের পরিকল্পনাও জানিয়েছেন তিনি-

  • প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা: আদালত, দুদক, নির্বাচন কমিশন, সরকারি সেবা; রাজনৈতিক চাপমুক্ত।
  • পূর্ণ স্বচ্ছতা: উন্মুক্ত দরপত্র, সম্পদ বিবরণী, রিয়েল-টাইম অডিট, শক্তিশালী তথ্য অধিকার আইন।
  • বিচার ও আইন-শৃঙ্খলা সংস্কার: পেশাদার পুলিশিং, দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি, ডিজিটাল তথ্য-প্রমাণ।
  • ই-গভর্ন্যান্স: লাইসেন্স, জমি, পেমেন্ট অনলাইনে, ঘুষের সুযোগ কমানো।
  • হুইসলব্লোয়ার সুরক্ষা: অনিয়ম ফাঁসকারীদের নিরাপত্তা।
  • নৈতিক শিক্ষা: স্কুল-কলেজে সততার চর্চা।
  • শক্তিশালী আর্থিক নজরদারি: ডিজিটাল ব্যয় ট্র্যাকিং ও স্বাধীন অডিট, সংসদের তদারকি।

সবশেষে তারেক রহমান বলেন, “দীর্ঘ বছরের অব্যবস্থাপনার পর দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই কঠিন হবে। তবে ইতিহাস প্রমাণ করে, সৎ নেতৃত্ব, শৃঙ্খলা ও জনগণের সমর্থন একসাথে থাকলে পরিবর্তন সম্ভব। জনগণ যদি দায়িত্ব দেয় বিএনপি আবারও সেই লড়াইয়ের নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত।”

ইএইচপি

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত