ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৫, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

ভূমিকম্পের ভয়াবহতার শীর্ষে থাকা দেশগুলোর নাম জানেন কি?

২০২৫ নভেম্বর ২৪ ১৬:৪০:১৩

ভূমিকম্পের ভয়াবহতার শীর্ষে থাকা দেশগুলোর নাম জানেন কি?

ডুয়া ডেস্ক :ভূমিকম্প পৃথিবীর অন্যতম শক্তিশালী এবং ধ্বংসাত্মক প্রাকৃতিক ঘটনা। জনবহুল এলাকায় এটি মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি সৃষ্টি করতে পারে এবং কখনো কখনো সুনামি ও ভূমিধসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণও হয়ে দাঁড়ায়। ভূমিকম্পের প্রধান কারণগুলোতে টেকটোনিক প্লেটের নড়াচড়া, আগ্নেয়গিরির চৌম্বকীয় পদার্থের সঞ্চালন, তাপমাত্রা বা পানির চাপের পরিবর্তন, এবং তীব্র বাতাস অন্তর্ভুক্ত। যদিও ভূমিকম্পকে পুরোপুরি প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়, তবে কিছু নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে এর সময় নিজেকে নিরাপদ রাখা সম্ভব। ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় বসবাস মানেই প্রতিদিন ভূমিকম্প হবে—এমন নয়। তবে বাড়িতে জরুরি সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখা, পরিবারের সবাইকে দুর্যোগ পরিকল্পনার সঙ্গে পরিচিত করা এবং পরিস্থিতি গুরুতর হলে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়া জরুরি। আশপাশের পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন থাকা ও নিরাপত্তামূলক পদক্ষেপ নেওয়ায় ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব।

বিশ্বের সবচেয়ে ভূমিকম্পপ্রবণ দেশগুলোর মধ্যে জাপান শীর্ষে রয়েছে। প্রশান্ত মহাসাগরের রিং অফ ফায়ারের ওপর অবস্থান করায় দেশটি সবসময় টেকটোনিক কার্যকলাপ ও ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে থাকে। জাপান উন্নত প্রযুক্তি ও সিসমিক মনিটরিং ব্যবস্থা তৈরি করেছে, যা ক্ষুদ্রতম ভূমিকম্পও শনাক্ত করতে সক্ষম। দেশে এক হাজারের বেশি সিসমোমিটার স্থাপন করা হয়েছে, যা আগাম সতর্কতা দেয়। ইন্দোনেশিয়া প্রায় প্রতি বছরই ৬ মাত্রার বেশি শক্তিশালী ভূমিকম্পের কবলে পড়ে। ২০১৮ সালে দেশটিতে ৬-এর বেশি নয়টি ভূমিকম্পে হাজারো মানুষ নিহত হয়েছে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় রিং অফ ফায়ারের ওপর অবস্থানের কারণে দেশটি ভূমিকম্পের পাশাপাশি আগ্নেয়গিরি, খরা, বন্যা ও সুনামির ঝুঁকিতেও রয়েছে।

চীনের ভূমিকম্প ইতিহাস দীর্ঘ এবং ভয়াবহ। ২০০৮ সালে সিচুয়ান প্রদেশে ৭.৯ মাত্রার ভূমিকম্পে ৮৭ হাজারের বেশি মানুষ নিহত বা নিখোঁজ হয়। দেশটি একাধিক সক্রিয় টেকটোনিক প্লেটের ওপর অবস্থান করায় ক্রমাগত ভূত্বকে চাপ সৃষ্টি হয়, যা ভূমিকম্পের ঝুঁকি বাড়ায়। ফিলিপাইনও রিং অফ ফায়ারের ধার ঘেঁষে অবস্থান করায় নিয়মিত ভূমিকম্পে ভোগে। পাহাড়ি ভূপ্রকৃতি ভূমিকম্পের সময় ভূমিধসের ঝুঁকি বাড়ায়। এছাড়া টাইফুন ও গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড়ও দেশটিকে প্রাকৃতিক বিপদে ফেলে। বাসিন্দারা নিজেদের সুরক্ষায় মজবুত ঘরবাড়ি নির্মাণ এবং নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে।

ইরান বহু বছর ধরে বিধ্বংসী ভূমিকম্পের কবলে পড়েছে। দেশটির বিভিন্ন ফল্ট লাইনের ওপর অবস্থান এবং প্লেট সীমানার কারণে ভূমিকম্পের হার খুবই বেশি। ১৯৯০ সালে গিলান প্রদেশে একটি ভূমিকম্পে ৪০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল। এসব ট্র্যাজেডির পরও ইরানিরা দেশে বসবাস চালিয়ে যাচ্ছেন। কারণ তারা ভূমিকম্পসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার উপায় সম্পর্কে সচেতন ও জ্ঞান অর্জন করেছেন।

ডুয়া/নয়ন

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত