ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১ পৌষ ১৪৩২

২০ কোম্পানির শেয়ারে মুভিং এভারেজ,ম্যাকডি, এঙ্গালফিং ‘বাই সিগনাল’

মো. সালাউদ্দিন:
মো. সালাউদ্দিন:

শেয়ারবাজার বিশ্লেষক

২০২৫ নভেম্বর ০১ ১১:১৪:২৬

২০ কোম্পানির শেয়ারে মুভিং এভারেজ,ম্যাকডি, এঙ্গালফিং ‘বাই সিগনাল’

মো. সালাউদ্দিন: শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের জন্য সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হচ্ছে টেকনিক্যাল সিগন্যাল। কারণ, এগুলো অনেক সময় কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন বা বাজারের সামগ্রিক পরিস্থিতির আগেই সম্ভাব্য ট্রেন্ড সম্পর্কে ধারণা দেয়। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) লেনদেন শেষে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) তালিকাভুক্ত ২০টি কোম্পানির শেয়ারে একসাথে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ টেকনিক্যাল সিগন্যাল— মুভিং এভারেজ, এমএসিডি (MACD) এবং এঙ্গালফিং প্যাটার্ন—গঠিত হয়েছে। স্টকনাও এ তথ্য জানিয়েছে।

এই ২০ কোম্পানি হলো: বিডি থাই ফুড, বেস্ট হোল্ডিংস, ডেল্টা ব্র্যাক হাউজিং-ডিবিএইচ, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, ফু-ওয়াং সিরামিক, গোল্ডেন সন, জিপিএইচ ইস্পাত, ইসলামিক কর্মাশিয়াল ইন্স্যুরেন্স, জেএমআই হসপিটাল, কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্স, মোজাফফর হোসেন স্পিনিং, এমএল ডাইং, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ফার্মা এইড, ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্স, শাইনপুকুর সিরামিকস, ট্রাস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্স এবং ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড।

মুভিং এভারেজের গুরুত্ব

মুভিং এভারেজ মূলত শেয়ারের দামের একটি নির্দিষ্ট সময়ের গড় মানকে বোঝায়। সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো ৫০ দিনের ও ২০০ দিনের মুভিং এভারেজ।

• কোনো শেয়ারের দাম যদি ৫০ দিনের মুভিং এভারেজের উপরে উঠে যায়, তাহলে সেটা সাধারণত স্বল্পমেয়াদি বুলিশ সিগন্যাল ধরা হয়।

• আবার দাম যদি ২০০ দিনের মুভিং এভারেজের উপরে থাকে, তাহলে সেটি দীর্ঘমেয়াদি শক্ত অবস্থান নির্দেশ করে।

এই ২০টি কোম্পানির অনেকগুলোতেই মুভিং এভারেজ ইতিবাচক ট্রেন্ড দেখাচ্ছে, যা বিনিয়োগকারীদের কাছে বাড়তি আস্থা তৈরি করছে।

ম্যাকডি (MACD) সিগন্যাল

MACD বা মুভিং এভারেজ কনভারজেন্স ডাইভারজেন্স হলো বাজারের ট্রেন্ড ও মোমেন্টাম বোঝার সবচেয়ে জনপ্রিয় টেকনিক্যাল টুল।

• যখন MACD লাইন সিগন্যাল লাইনকে অতিক্রম করে ওপরে উঠে যায়, তখন তাকে শক্তিশালী কেনার সিগন্যাল ধরা হয়।

• আবার নিচে নেমে গেলে সেটা বিক্রির ইঙ্গিত দেয়।

এই ২০টি কোম্পানির শেয়ার MACD চার্টে পজিটিভ ক্রসওভার দেখা যাচ্ছে। এটি বাজার বিশ্লেষকদের মতে আগাম আপট্রেন্ডের ইঙ্গিত হতে পারে।

এঙ্গালফিং প্যাটার্নের শক্তি

এঙ্গালফিং ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন হলো সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য রিভার্সাল সিগন্যালগুলোর একটি।

• বুলিশ এঙ্গালফিং মানে বাজারে নতুন করে কেনার চাপ আসতে পারে।

• আর বিয়ারিশ এঙ্গালফিং হলে সেটি সতর্কবার্তা দেয়, দাম নামতে পারে।

এই ২০টি কোম্পানির শেয়ারে বুলিশ এঙ্গালফিং দেখা গেছে, যা বিনিয়োগকারীদের কাছে ইতিবাচক সিগন্যাল হিসেবে ধরা হচ্ছে।

বাজারসংশ্লিষ্টদের মন্তব্য

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, “টেকনিক্যাল সিগন্যাল সবসময় শতভাগ নির্ভুল নয়, তবে এগুলো বাজারে বিনিয়োগকারীদের মনস্তত্ত্ব ও ট্রেন্ড বোঝার সবচেয়ে কার্যকর উপায়। একসাথে তিনটি সিগন্যাল মিলে গেলে বিনিয়োগকারীদের বাড়তি সতর্কতা ও আগ্রহ দুই-ই তৈরি হয়।”

বিনিয়োগকারীদের জন্য বার্তা

বাজারে মুভিং এভারেজ, এমএসিডি ও এঙ্গালফিং—এই তিনটি সিগন্যাল একসাথে পাওয়া অনেক সময় বড় পরিবর্তনের পূর্বাভাস দেয়। তবে বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে শুধু টেকনিক্যাল চার্ট নয়, কোম্পানির মৌলভিত্তি, ডিভিডেন্ড ইতিহাস এবং কোম্পানিভিত্তিক সাম্প্রতিক পরিস্থিতিও বিবেচনায় নেওয়া জরুরি।

লেখক একজন শেয়ারবাজার বিশ্লেষক।

শেয়ারবাজারের বিশ্লেষণ ও ইনসাইড স্টোরি পেতে আমাদের পেজ ফলো করুন।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত