ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর ২০২৫, ২২ আশ্বিন ১৪৩২

বদলি নিয়ন্ত্রণে বড় পরিবর্তন, ক্ষোভে ফুঁসছে শিক্ষা ক্যাডাররা

২০২৫ অক্টোবর ০৭ ২২:৫৮:১৬

বদলি নিয়ন্ত্রণে বড় পরিবর্তন, ক্ষোভে ফুঁসছে শিক্ষা ক্যাডাররা

নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারি কলেজের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বদলি ও পদায়নে একক ক্ষমতা নিজেদের হাতে নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, যা নিয়ে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। এতদিন প্রভাষক ও সহকারী অধ্যাপক পদে বদলি করতে পারতেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) মহাপরিচালক, আর সহযোগী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক পদে বদলি করতো শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিন্তু 'সরকারি কলেজের শিক্ষক বদলি/ পদায়ন নীতিমালা, ২০২৫' অনুযায়ী, এখন সব ধরনের বদলি ও পদায়ন সম্পূর্ণ অনলাইনে শিক্ষা মন্ত্রণালয় করবে।

গত ৩০ জুন থেকে কার্যকর হওয়া এই নীতিমালায় প্রভাষক থেকে অধ্যাপক এবং অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ পদ পর্যন্ত বদলি ও পদায়নের আবেদন অনলাইনে জমা দিতে হবে। প্রতিটি আবেদন অধ্যক্ষ বা প্রতিষ্ঠানপ্রধানের মাধ্যমে অনলাইনে অগ্রায়ন করতে হবে এবং কোনো আবেদন পেন্ডিং রাখা যাবে না।

বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার সমিতির নেতারা এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, মন্ত্রণালয়ের কাজ নীতি-নির্ধারণ করা, বদলি করা নয়। যখন সব জায়গায় বিকেন্দ্রীকরণ করা হচ্ছে, তখন শিক্ষা মন্ত্রণালয় ক্ষমতা কুক্ষিগত করছে। তাদের মতে, এটি শিক্ষা ক্যাডারদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়াচ্ছে এবং চাপিয়ে দেওয়া এই সিদ্ধান্ত ভালো কিছু বয়ে আনবে না। তারা আশঙ্কা করছেন যে, এর ফলে সচিবালয়ে ভিড় ও তদবির বাড়বে।

মন্ত্রণালয় ও মাউশি সূত্রে জানা যায়, এ বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনায় অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ পদে বদলির নিয়ন্ত্রণ মন্ত্রণালয় চেয়েছিল এবং দ্বিতীয় দফায় সহকারী অধ্যাপক পর্যন্ত বদলির নিয়ন্ত্রণ মাউশির কাছে রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই নীতিমালা পরিবর্তন করে সব ক্ষমতা মন্ত্রণালয় নিজেদের হাতে নিয়েছে, যা শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাদের কাছে অপ্রত্যাশিত।

নতুন নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, অনলাইন ব্যতীত অন্য কোনো উপায়ে পাঠানো আবেদন বিবেচনা করা হবে না। প্রতিটি আবেদন প্রতি ১৫ দিন অন্তর মূল্যায়ন করে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে এবং একজন শিক্ষক একবার আবেদন করলে পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে পুনরায় আবেদন করতে পারবেন না। এছাড়াও, বদলির ক্ষেত্রে রাজনৈতিক তদবির, আধাসরকারি পত্র (ডিও লেটার) বা অন্য কোনোভাবে চাপ প্রয়োগকে অসদাচরণ হিসেবে গণ্য করা হবে। অসম্পূর্ণ বা হালনাগাদহীন পিডিএস গ্রহণ করা হবে না এবং বদলি সংক্রান্ত বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে।

যদিও শিক্ষা মন্ত্রণালয় অনলাইনে বদলি-পদায়নের মাধ্যমে স্বচ্ছতা আনার কথা বলছে, তবে শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা মনে করেন এক্ষেত্রেও অনিয়মের সুযোগ রয়েছে।

এসপি

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত