ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর ২০২৫, ২২ আশ্বিন ১৪৩২

‘আবরার ফাহাদের শাহাদাত জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বড় প্রেরণা’

২০২৫ অক্টোবর ০৭ ২১:১৩:১৭

‘আবরার ফাহাদের শাহাদাত জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বড় প্রেরণা’

নিজস্ব প্রতিবেদক: তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম বলেছেন, শহিদ আবরার ফাহাদের শাহাদত জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের জন্য বড় প্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করেছে। তাঁর আত্মত্যাগ বৃথা যায়নি, বরং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভিন্ন মত প্রকাশের নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে, যা শিক্ষার্থীরা কাজে লাগিয়েছে।

মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে আবরার ফাহাদের ষষ্ঠ শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে প্রদর্শিত প্রামাণ্যচিত্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মাহফুজ আলম এসব কথা বলেন। প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়।

বিগত সরকারের ১৬ বছরের শাসনামলের সমালোচনা করে উপদেষ্টা বলেন, ওই সময় আবরার ফাহাদের মতো হাজার হাজার শিক্ষার্থী নিপীড়নের শিকার হয়েছে। মৃতপ্রায় অবস্থায় অনেক শিক্ষার্থী বেঁচে গেছেন। তখন প্রক্টর ও প্রভোস্টরা শিক্ষার্থীদের পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন। কারাগারেও ভিন্ন মতের শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা দেওয়া হয়নি, এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে শিবিরের নামে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মারধর করা হতো।

মাহফুজ আলম বলেন, আবরার ফাহাদের শাহাদতের তাৎপর্য বোঝা শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা যে ভুল করেছেন, আমরা সেই ভুল পুনরাবৃত্তি করতে চাই না। ফ্যাসিজম যে প্রক্রিয়ায় তৈরি হয়, আমরা সেই পথে প্রবেশ করতে চাই না।

তিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শক্তির মধ্যে বিভাজনকে অপ্রত্যাশিত ও দুঃখজনক আখ্যা দেন এবং বলেন, বিভাজন এড়িয়ে চলা ও নাগরিকদের জন্য নিরাপদ রাষ্ট্র ও সরকারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার কাজ করতে হবে।

নিজেকে রাষ্ট্র গড়ার পক্ষের লোক দাবি করে মাহফুজ আলম বলেন, ফ্যাসিবাদী সাংস্কৃতিক ব্যবস্থার বিপরীতে জনগণের সামনে ভালো বিকল্প উপস্থাপন করতে হবে। যদি তা করতে ব্যর্থ হই, জনগণ পুরনো সাংস্কৃতিক ব্যবস্থায় ফিরে যাবে। তিনি দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সাংস্কৃতিক লড়াই চালিয়ে যাওয়ার গুরুত্বের ওপরও জোর দেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, ২০১৯ সালে বুয়েটে ছাত্রলীগের একাংশ আবরার ফাহাদকে হত্যা করেছে। তারা মনে করেছিল, আবরারের হত্যা করে আধিপত্যবিরোধী কণ্ঠ স্তব্ধ করা যাবে। তবে ইতিহাস প্রমাণ করে, এমন কণ্ঠ কখনো স্তব্ধ করা যায় না।

ফারুকী আরও বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারীরা আবরারের প্রেরণা ধারণ করেছেন। আবরারের আত্মত্যাগকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা উচিত। তিনি গণঅভ্যুত্থানের বয়ান তৈরি ও বিগত সরকারের ১৬ বছরের দুঃশাসনের বয়ান রেকর্ড করার প্রয়োজনীয়তাও উল্লেখ করেন। সাংস্কৃতিক বৈষম্যকে ফ্যাসিবাদের অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করে বলেন, ধর্ম বা রাজনৈতিক বিশ্বাসের কারণে কাউকে আলাদা করা যাবে না; সকল জাতিগোষ্ঠীকে একত্রিত হতে হবে।

মাহফুজ আলম ও ফারুকী উভয়ই আহ্বান জানান, এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে হবে যা ইতিহাসের সব অধ্যায় ধারণ করবে এবং বাংলাদেশপন্থায় একভাবে একত্রিত থাকবে।

উদ্বোধনী পর্বে আরও বক্তব্য দেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত