ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর ২০২৫, ২২ আশ্বিন ১৪৩২

তরুণ প্রজন্ম জেগেছে আবরারের আত্মত্যাগে: মাহমুদুর রহমান      

২০২৫ অক্টোবর ০৭ ১৪:৩৯:১২








তরুণ প্রজন্ম জেগেছে আবরারের আত্মত্যাগে: মাহমুদুর রহমান




 
 



 

নিজস্ব প্রতিবেদক :বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র শহিদ আবরার ফাহাদের স্মরণে অনুষ্ঠিত এক সেমিনার ও চিত্র প্রদর্শনীতে বক্তৃতা দিয়েছেন আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান। তিনি বলেন, “ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে আবরার শহিদ হতে পেরেছেন, আমি পারিনি।”

মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সকাল ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার আর্টস অডিটোরিয়ামে “ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব: স্মরণে শহিদ আবরার ফাহাদ” শীর্ষক সেমিনার ও “স্মরণে মননে শহিদ আবরার ফাহাদ” চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানটির উদ্বোধন করেন আবরারের বাবা মো. বরকত উল্লাহ, সভাপতিত্ব করেন ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম। বিশেষ অতিথি ছিলেন রেজাউল করিম রনি, আবরারের ভাই আবরার ফাইয়াজ এবং মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ড. মো. আব্দুর রব।

ড. মাহমুদুর রহমান বলেন, “আমার সঙ্গে শহিদ আবরারের অনেক মিল আছে। আমরা দুজনই বুয়েটের ছাত্র, দুজনেই শেরেবাংলা হলে থাকতাম, দুজনেই ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কথা বলেছি। তবে পার্থক্য হলো—আবরার শহিদ হয়েছেন, আমি পারিনি।” তিনি স্মরণ করেন, ২০১৮ সালে কুষ্টিয়ায় তার ওপর হামলা হয়েছিল, কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছায় তিনি বেঁচে যান। “আবরারের আত্মত্যাগ আজ দেশের তরুণ প্রজন্মকে জাগিয়ে তুলেছে। আমার দশকের লেখার চেয়ে আবরারের রক্তই বেশি মানুষকে নাড়া দিয়েছে,” যোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, আবরার কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না, তবুও দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। সেই অবস্থানের কারণেই তাকে হত্যা করা হয়। “কিন্তু তার রক্ত বৃথা যায়নি, তিনি জাতিকে জাগিয়ে তুলেছেন,” মন্তব্য করেন মাহমুদুর রহমান।

সেনাবাহিনী ও সার্বভৌমত্ব ইস্যুতে তিনি বলেন, “সম্প্রতি দেখা গেছে, বাংলাদেশের কিছু জেনারেল ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। অথচ তাদের মধ্যে একজন ছিলেন দেশের গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান। প্রশ্ন হলো—কে প্রকৃত দেশপ্রেমিক? ওই জেনারেল, না আবরার?” তিনি জোর দিয়ে বলেন, “আমাদের মুক্তির জন্য প্রয়োজন আবরারের মতো দেশপ্রেমিক তরুণ, ক্ষমতার দাস জেনারেল নয়।”

প্রগতিশীলতা নিয়ে মাহমুদুর রহমান বলেন, “বাংলাদেশে প্রগতিশীলতার সংজ্ঞা বিকৃত হয়েছে। এখানে প্রগতিশীল মানে হয়ে গেছে ইসলামবিদ্বেষী ও ভারতের প্রতি নিঃশর্ত আনুগত্য। এই ভণ্ড প্রগতিশীলতার মুখোশ উন্মোচন করতে হবে। প্রকৃত প্রগতিশীলতা মানে জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষা।”

তিনি বলেন, “আমাদের দেশ এক জটিল ভূরাজনৈতিক অবস্থানে রয়েছে—একদিকে হিন্দুত্ববাদী ভারত, অন্যদিকে মিয়ানমার। এই অবস্থায় আমাদের সংগ্রাম দীর্ঘমেয়াদি হবে, আর সেই সংগ্রামের মূল শক্তি হবে তরুণরা।”

শেষে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “তরুণরা জেগে উঠেছে। জুলাই বিপ্লব প্রমাণ করেছে, বাংলাদেশ এখন স্বাধীনতার আসল অর্থ বুঝতে শুরু করেছে। শহিদ আবরার সেই জাগরণের প্রতীক।”

অনুষ্ঠানের শুরুতে আবরারের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। পরে “স্মরণে মননে শহিদ আবরার ফাহাদ” শীর্ষক চিত্র প্রদর্শনীতে তরুণ শিল্পীরা আবরারের আদর্শ ও দেশপ্রেমকে শিল্পকর্মের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলেন।

ডুয়া/নয়ন

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত

বিশ্ববিদ্যালয় এর অন্যান্য সংবাদ