ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১ আশ্বিন ১৪৩২

বন্ডবাজার চাঙা করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন উদ্যোগ

২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৬ ১৭:২২:২৩

বন্ডবাজার চাঙা করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন উদ্যোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের বন্ডবাজারের উন্নয়নে এবার সরাসরি উদ্যোগ নিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি বন্ড ইস্যুর খরচ আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কমানোর প্রস্তাব দিয়েছেন, যা এই খাতকে আরও গতিশীল করে তুলবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশে গঠিত 'বন্ড মার্কেট ডেভেলপমেন্ট' বিষয়ক যৌথ কমিটির এক প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে গভর্নর এই প্রস্তাব দেন। গত সপ্তাহে কমিটি তাদের প্রতিবেদনে বন্ডবাজারের উন্নয়নের পথে থাকা বাধাগুলো চিহ্নিত করে সেগুলোর সমাধানে বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরেছে।

বর্তমানে বন্ড ইস্যু করার জন্য বিভিন্ন পর্যায়ে উচ্চ ফি দিতে হয়। যেমন, ইস্যু ম্যানেজাররা মোট তহবিলের ০.৫০ শতাংশ ফি নেয়, যা বড় অঙ্কের বন্ডের ক্ষেত্রে কিছুটা কম। এর পাশাপাশি, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)-কে বন্ড আবেদনের জন্য ১০ হাজার টাকা এবং ইস্যু আকারের ০.১০ শতাংশ সম্মতি ফি দিতে হয়। এর বাইরে ট্রাস্টি আবেদন ফি, রেজিস্ট্রেশন ফি এবং বার্ষিক ফি বাবদও বড় অঙ্কের খরচ হয়। যৌথ কমিটি তাদের প্রতিবেদনে এই অতিরিক্ত খরচগুলো কমানোর সুপারিশ করেছে।

এছাড়াও, কমিটির প্রতিবেদনে বন্ডবাজারের উন্নয়নে প্রধান বাধা হিসেবে সহজ ব্যাংক ঋণ এবং সঞ্চয়পত্রের উচ্চ সুদের হারকে চিহ্নিত করা হয়েছে। গভর্নর এই সমস্যাগুলো সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।

কমিটির একটি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ হলো, বড় কর্পোরেশনগুলোর জন্য ব্যাংক ঋণের ওপর নির্ভরশীলতা কমানো। যেসব কোম্পানির ঋণ-ইক্যুইটি অনুপাত ৬০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে, তাদের দীর্ঘমেয়াদী তহবিলের জন্য শেয়ারবাজারের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের সুপারিশ করা হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের জন্য ঋণ দিতে পারবে।

ড. মনসুর কমিটির এই সুপারিশগুলোকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং বিএসইসি-এর মাধ্যমে বন্ড ইস্যুর সময় ও খরচ কমানোর ওপর জোর দিয়েছেন। সংশ্লিষ্টদের মতে, একটি শক্তিশালী বন্ডবাজার দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়নের একটি স্থিতিশীল উৎস হতে পারে, যা ব্যাংক ঋণের ওপর চাপ কমাবে এবং দেশের সামগ্রিক আর্থিক ব্যবস্থাকে আরও সুসংহত করবে। বিএসইসি-এর প্রতিনিধিরাও বিশ্বাস করেন যে, এই সমন্বিত পদক্ষেপ পুঁজিবাজার এবং দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি উভয়কেই সমর্থন করবে।

এএসএম/

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

সর্বোচ্চ পঠিত