ঢাকা, রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২২ ভাদ্র ১৪৩২
১৫০ বছর বাঁচার আকাঙ্ক্ষা পুতিন-শির

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সম্প্রতি বেইজিংয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের ব্যক্তিগত কথোপকথন নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। পুতিন ম্যান্ডারিন ভাষায় অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বারবার প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে "অনির্দিষ্টকালের জন্য" বার্ধক্য ঠেকিয়ে ১৫০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকার সম্ভাবনার কথা বলেছেন। যদিও এটি কিছুটা ঠাট্টা ছিল বলে মনে করা হচ্ছে, তবে এই আলোচনার পেছনে বৈজ্ঞানিক ভিত্তি কতটা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
যুক্তরাজ্যের 'ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের (এনএইচএস) ব্লাড অ্যান্ড ট্রান্সপ্লান্ট' বিভাগ জানিয়েছে, অঙ্গ প্রতিস্থাপন জীবন বাঁচায় এবং প্রযুক্তির উন্নতির ফলে প্রতিস্থাপিত অঙ্গ দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে। কিছু রোগীর কিডনি ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ করছে। তবে অঙ্গের মেয়াদ নির্ভর করে দাতা ও গ্রহীতার স্বাস্থ্য এবং যত্নের ওপর। যেমন, জীবিত দাতার কিডনি ২০-২৫ বছর এবং মৃত দাতার কিডনি ১৫-২০ বছর টিকতে পারে। লিভার প্রায় ২০ বছর, হার্ট ১৫ বছর এবং ফুসফুস ১০ বছর স্থায়ী হতে পারে।
পুতিন ও শি একাধিকবার অঙ্গ প্রতিস্থাপনের কথা বললেও, বারবার অস্ত্রোপচারের ঝুঁকি অনেক বেশি। বর্তমানে অঙ্গ প্রতিস্থাপনকারীরা আজীবন 'ইমিউনোসাপ্রেসেন্টস' নামক শক্তিশালী অ্যান্টি-রিজেকশন ড্রাগ গ্রহণ করেন, যার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে উচ্চ রক্তচাপ ও সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা প্রতিস্থাপিত অঙ্গকে "বহিরাগত" হিসেবে চিহ্নিত করে আক্রমণ করতে পারে।
বিজ্ঞানীরা 'রিজেকশন ফ্রি অর্গান' তৈরির জন্য গবেষণা করছেন। জিনগতভাবে পরিবর্তিত শূকরকে দাতা হিসেবে ব্যবহার করে মানুষের জন্য সামঞ্জস্যপূর্ণ অঙ্গ তৈরির চেষ্টা চলছে। 'CRISPR' জিন এডিটিং টুল ব্যবহার করে শূকরের জিন পরিবর্তন করা হচ্ছে। যদিও এই পদ্ধতি পরীক্ষামূলক, তবে একটি হার্ট এবং একটি কিডনি প্রতিস্থাপন সার্জারি হয়েছে, যদিও গ্রহীতাদের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া, নিজস্ব মানব কোষ ব্যবহার করে নতুন অঙ্গ তৈরির গবেষণা চলছে, যেখানে স্টেম সেলের ক্ষমতা কাজে লাগানো হচ্ছে। তবে এখনো কোনো দল সম্পূর্ণ কার্যকরী প্রতিস্থাপনযোগ্য মানব অঙ্গ তৈরি করতে পারেনি।
লন্ডনের 'গ্রেট অরমন্ড স্ট্রিট' হাসপাতালের বিজ্ঞানীরা রোগীর টিস্যু থেকে স্টেম সেল ব্যবহার করে মানুষের অন্ত্রের টিস্যু প্রতিস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছেন, যা শিশুদের অন্ত্রের সমস্যার সমাধানে সহায়ক হতে পারে। তবে এসব অগ্রগতির উদ্দেশ্য রোগ নিরাময়, মানুষকে ১৫০ বছর বাঁচিয়ে রাখা নয়।
কিংস কলেজ লন্ডনের ড. জুলিয়ান মুটজ মনে করেন, অঙ্গ প্রতিস্থাপন ছাড়াও প্লাজমা প্রতিস্থাপনের মতো পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা চলছে, কিন্তু এগুলোর জীবনকালের ওপর অর্থবহ প্রভাব অনিশ্চিত। এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নীল ম্যাবট মনে করেন, মানুষের আয়ুর ঊর্ধ্বসীমা ১২৫ বছর, যেমন ফরাসি নারী জেনি ক্যালমেন্ট ১২২ বছর বেঁচেছিলেন। তিনি জোর দেন যে, আয়ু বাড়ানোর চেয়ে সুস্থ জীবনযাপনে মনোযোগ দেওয়া বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ম্যাবট বলেন, "অনেক বেশি দিন বাঁচা কিন্তু বার্ধক্যজনিত একাধিক রোগে ভোগা এবং অন্য টিস্যু প্রতিস্থাপনের জন্য হাসপাতালে ক্রমাগত যাতায়াত করাটা অবসর কাটানোর জন্য কোনো আকর্ষণীয় পন্থা বলে আমার মনে হয় না।"
এসপি
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে শেয়ারবাজারের ১১ কোম্পানিতে
- কোম্পানি পুরোদমে উৎপাদনে, তারপরও শঙ্কায় বিনিয়োগকারীরা!
- পাকিস্তান বনাম সংযুক্ত আরব আমিরাত সাম্প্রতিক ম্যাচের পরিসংখ্যান
- বিও অ্যাকাউন্টের ফি নিয়ে বিনিয়োগকারীদের সুখবর দিল বিএসইসি
- এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ উচ্চতায় ৫ কোম্পানি
- শেয়ারবাজারে দ্রুত মুনাফা তোলার ৫টি ট্রেডিং টিপস
- শেয়ারবাজারে মিডল্যান্ড ব্যাংকের নতুন যাত্রা
- তদন্তের খবরে থামছে দুই কোম্পানির ঘোড়দৌড়
- আট কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কাড়াকাড়ি
- নতুন উচ্চতায় অগ্রসর হচ্ছে দেশের শেয়ারবাজার
- সর্বনিম্ন দামে আটকে গেল ৭ কোম্পানির শেয়ার
- পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কার পথে এগোচ্ছে বাংলাদেশের শেয়ারবাজার
- তিন কোম্পানির অস্বাভাবিক শেয়ারদর: ডিএসইর সতর্কবার্তা
- শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের মাথাব্যথার ১১ শেয়ার
- রবির মাধ্যমে দেশে আসছে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট