ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০ ভাদ্র ১৪৩২
সীমান্তে সর্ববৃহৎ বিমানঘাঁটি বানাচ্ছে ভারত

চীনের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদারে বড় পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত। লাদাখের মুধ-নিওমায় গড়ে তোলা হচ্ছে দেশের সর্ববৃহৎ এবং কৌশলগতভাবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিমানঘাঁটি। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৩,৭০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এই ঘাঁটিটি অক্টোবরের মধ্যেই পূর্ণাঙ্গভাবে কার্যকর হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে ভারতের প্রতিরক্ষা সংস্থা।
নিওমা ঘাঁটিটি প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) থেকে মাত্র ৪৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এই দূরত্ব একে ভারতের সীমান্ত ঘেঁষা বিমানঘাঁটিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে গড়ে তুলেছে। ২.৭ কিলোমিটার দীর্ঘ শক্তিশালী রানওয়ে বিশিষ্ট এই ঘাঁটি থেকে নিয়মিত উড়তে পারবে সুখোই-৩০ এমকেআই, রাফাল, তেজস এবং সি-১৩০জে ও এন-৩২ ধরনের পরিবহন বিমান।
কৌশলগত গুরুত্ব ও সামরিক সুবিধা:
নিওমা বিমানঘাঁটি নির্মাণের ফলে সীমান্ত এলাকায় দ্রুত সেনা মোতায়েন, অস্ত্র সরবরাহ এবং নজরদারির কাজ আগের চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর হবে। লাদাখের দুর্গম ও পাহাড়ি ভূপ্রকৃতিতে স্থলপথে পৌঁছানো কঠিন হওয়ায় বিমানঘাঁটিটি ভারতীয় বিমানবাহিনীকে (আইএএফ) অতুলনীয় সুবিধা দেবে।
২০২১ সালে অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পটির বাজেট প্রায় ২১৪ কোটি টাকা। এখানে রাডার স্টেশন, রক্ষণাবেক্ষণ ইউনিট, বিমানবাহিনীর সদস্যদের আবাসনসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ চলছে। নির্মাণকাজের তত্ত্বাবধানে থাকা সীমান্ত সড়ক সংস্থার (বিআরও) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল রঘু শ্রীনিবাসন জানিয়েছেন কাজ অক্টোবরের মধ্যেই শেষ হবে।
চীনের উদ্বেগ ও ভারতের প্রতিক্রিয়া:
চীন নিওমা ঘাঁটির নির্মাণে অসন্তোষ প্রকাশ করলেও ভারত তাদের চাপ উপেক্ষা করে দ্রুত গতিতে কাজ চালিয়ে গেছে। ২০২০ সালে পূর্ব লাদাখে চীনের সেনা উপস্থিতি বাড়ার পর সীমান্তে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এর জবাবে ভারতও সীমান্তে সেনা সংখ্যা বৃদ্ধি করে। সেই সময় থেকেই নিওমা ঘাঁটিকে কার্যকর রূপ দেওয়ার পরিকল্পনা নেয় নয়াদিল্লি।
চলমান উত্তেজনার মধ্যেই দেপসাং ও দেমচোক অঞ্চলে ভারত-চীন সেনা বিচ্ছিন্নতার (ডিসএনগেজমেন্ট) প্রেক্ষাপটে নিওমার কৌশলগত গুরুত্ব আরও বেড়েছে।
নিওমা ছাড়াও বর্তমানে লাদাখে লেহ, কার্গিল ও থোইস–এই তিনটি কার্যকর বিমানঘাঁটি রয়েছে। পাশাপাশি দৌলত বেগ ওল্ডি, ফুকচে ও চুশুলে রয়েছে ছোট আকারের রানওয়ে। তবে নিওমা ঘাঁটি হবে সবচেয়ে আধুনিক ও কার্যকর যেখানে যুদ্ধকালীন সময়েও বিভিন্ন ধরণের সামরিক অভিযান চালানো যাবে।
ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে সীমান্তের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে সড়কপথে পৌঁছানোর লক্ষ্যে কাজ করছে। অনেক দুর্গম সামনের পোস্ট যেগুলোতে কেবল পায়ে হেঁটে পৌঁছানো যেত। এখন সেগুলোকেও রাস্তার সঙ্গে সংযুক্ত করা হচ্ছে।
এই উন্নয়ন ভারতীয় সেনাবাহিনীর চলাচল, লজিস্টিক সাপোর্ট এবং সীমান্ত নজরদারিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে। চীনের প্রতিটি সীমান্তবর্তী বিমানঘাঁটি আধুনিকায়নের প্রতিক্রিয়ায় ভারতও সীমান্তরক্ষা ও প্রতিরোধে নিজেদের প্রস্তুতির বার্তা দিচ্ছে নিওমার এই সুসজ্জিত বিমানঘাঁটির মাধ্যমে।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে শেয়ারবাজারের ১১ কোম্পানিতে
- কোম্পানি পুরোদমে উৎপাদনে, তারপরও শঙ্কায় বিনিয়োগকারীরা!
- বিও অ্যাকাউন্টের ফি নিয়ে বিনিয়োগকারীদের সুখবর দিল বিএসইসি
- মার্জারের সাফল্যে উজ্জ্বল ফার কেমিক্যাল
- এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ উচ্চতায় ৫ কোম্পানি
- শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পর প্রথম ‘নো ডিভিডেন্ড’
- শেয়ারবাজারে মিডল্যান্ড ব্যাংকের নতুন যাত্রা
- তদন্তের খবরে থামছে দুই কোম্পানির ঘোড়দৌড়
- আট কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কাড়াকাড়ি
- নতুন উচ্চতায় অগ্রসর হচ্ছে দেশের শেয়ারবাজার
- সর্বনিম্ন দামে আটকে গেল ৭ কোম্পানির শেয়ার
- ডেনিম উৎপাদন বাড়াতে এভিন্স টেক্সটাইলসের বড় পরিকল্পনা
- চলতি সপ্তাহে ঘোষণা আসছে ৫ কোম্পানির ডিভিডেন্ড-ইপিএস
- পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কার পথে এগোচ্ছে বাংলাদেশের শেয়ারবাজার
- তিন কোম্পানির অস্বাভাবিক শেয়ারদর: ডিএসইর সতর্কবার্তা