ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২
সেন্ট মার্টিন ভ্রমণে লাগবে পরিবেশ সংরক্ষণ ফি

বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বড় ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এবার দ্বীপটিতে ভ্রমণ করতে গেলে পর্যটকদের দিতে হবে ‘পরিবেশ সংরক্ষণ ফি’। পাশাপাশি স্থানীয়দের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।
শনিবার (১২ জুলাই) পরিবেশ অধিদপ্তরে অনুষ্ঠিত এক সভায় সেন্ট মার্টিনের সমন্বিত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
তিনি জানান, সেন্ট মার্টিনের বাস্তুতন্ত্র সুরক্ষায় তিন বছর মেয়াদি একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে যা আগস্ট থেকে শুরু হবে। প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে পর্যটকদের কাছ থেকে ফি আদায় করা হবে যা দ্বীপের পরিবেশ রক্ষায় ব্যবহার হবে। তবে ফি’র পরিমাণ এখনো নির্ধারণ করা হয়নি।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রাথমিকভাবে দ্বীপের ৫০০ পরিবারকে হাঁস-মুরগি পালন, চিপস তৈরি এবং কৃষিভিত্তিক প্রশিক্ষণ দিয়ে বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ দেওয়া হবে। কৃষি মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে দুজন কৃষি কর্মকর্তা নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার সময় জেলেদের জন্য বাড়ানো হবে সহায়তা।
উপদেষ্টা আরও জানান, আগামী অক্টোবর থেকে সেন্ট মার্টিনে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করা হবে এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিকল্প পণ্য উৎপাদনের নির্দেশ দেওয়া হবে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক এ কে এম রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রায় ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে বিকল্প কর্মসংস্থান প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে যার আওতায় ১০ হাজার বাসিন্দা উপকৃত হবেন। এছাড়া নিয়োগ দেওয়া হবে পরিবেশ প্রহরী, শুরু হবে জলবায়ু-সহিষ্ণু ধান চাষ, সুপেয় পানি সরবরাহ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সাগরলতা রোপণ ও কেয়া বন গঠনের কাজ।
সভায় সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিস (সিইজিআইএস) সেন্ট মার্টিনের ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা উপস্থাপন করে। এতে দ্বীপটিকে চারটি জোনে ভাগ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়:
জোন-১: মাল্টিপল ইউজ জোন – পরিবেশবান্ধব অবকাঠামোর অনুমোদনযোগ্য।
জোন-২: বাফার জোন – দ্বীপের দক্ষিণে সংবেদনশীল অঞ্চল রক্ষায় ব্যবহৃত হবে।
জোন-৩: জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এলাকা – শর্তসাপেক্ষে স্থানীয়দের প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণে সুযোগ থাকবে।
জোন-৪: সম্পূর্ণ সংরক্ষিত এলাকা – যেখানে সব ধরনের প্রবেশ ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকবে।
সিইজিআইএস-এর জ্যেষ্ঠ গবেষক এইচ এম নুরুল ইসলাম বলেন, অতিরিক্ত পর্যটনের ফলে সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে। হোটেল-রিসোর্ট নির্মাণে বিদেশি প্রজাতির গাছপালার বিস্তার ঘটছে। অতিরিক্ত লবস্টার আহরণে প্রজাতিটি প্রায় বিলুপ্ত এবং জাহাজের নোঙর কোরাল রিফে ক্ষতির কারণ হচ্ছে।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ সচিব ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব ফাহমিদা খানম, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. কামরুজ্জামান এবং বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি। টেকনাফের ইউএনও ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- তিন কোম্পানির কারখানা বন্ধ, ক্ষোভ বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের
- আইসিবি’র বিশেষ তহবিলের মেয়াদ ২০৩২ সাল পর্যন্ত বৃদ্ধি
- কেয়া কসমেটিক্সের ৮ হাজার কোটি টাকা উধাও, চার ব্যাংককে তলব
- সম্ভাবনার নতুন দিগন্তে শেয়ারবাজারের খান ব্রাদার্স
- ব্লুমবার্গের টেকসই তালিকায় বাংলাদেশের ১১ তালিকাভুক্ত কোম্পানি
- মূলধন ঘাটতিতে দুই ব্রোকারেজ হাউজ, ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ
- দুই খবরে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ শেয়ারের চমক
- চলতি বছর শেয়ারবাজারে আসছে রাষ্ট্রায়াত্ব দুই প্রতিষ্ঠান
- সাকিবের মোনার্কসহ ৮ ব্রোকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ
- ২৩ আগস্ট : শেয়ারবাজারের সেরা ৮ খবর
- হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে প্রতারণা, বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করল ডিএসই
- বিএসইসির নতুন মার্জিন বিধিমালার খসড়া অনুমোদন
- বিমা আইন সংস্কার: বিনিয়োগ ও আস্থায় নতুন দিগন্ত
- কোম্পানির অস্বাভাবিক শেয়ারদর: ডিএসইর সতর্কবার্তা
- শেয়ারবাজারের জন্য সুখবর: কমছে ট্রেজারি বিল ও বন্ডের সুদ