ঢাকা, সোমবার, ৭ জুলাই ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২
পশ্চিমবঙ্গের দম্পতিকে বাংলাদেশে পুশইন! পরিবারের অন্যদের হুমকি
.jpg)
পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমের এক দম্পতি গত পাঁচ বছর ধরে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে কাজ করছিলেন। তবে গত মাসে দিল্লি পুলিশ তাদের ‘বাংলাদেশি’ হিসেবে চিহ্নিত করে আটক করে। পরে তাঁদের পাঁচ বছরের ছেলেসহ বাংলাদেশে জোরপূর্বক পাঠিয়ে দেওয়া হয়, যাকে ‘পুশ-ইন’ বলা হয়ে থাকে। দিল্লি পুলিশের দাবি, ওই দম্পতি বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন।
এদিকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, 'এই ঘটনা বাংলাভাষী ভারতীয় শ্রমিকদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর সাম্প্রতিক ঘটনার নতুন সংযোজন। বিষয়টি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস বড় ধরনের আন্দোলনের পরিকল্পনা করছে।'
পরিবারের সদস্যদের বরাতে জানা গেছে, ২৬ বছর বয়সী দানিশ শেখ, তাঁর ২৪ বছর বয়সী স্ত্রী সোনালি খাতুন এবং তাঁদের পাঁচ বছরের ছেলে সাবিরকে ১৮ জুন দিল্লির রোহিণী এলাকার ভাড়া বাসা থেকে আটক করে পুলিশ।
সোনালির চাচাতো বোন রশ্মি বিবিও দিল্লিতে বসবাস করেন। তিনি বলেন, "আমরা যখন দিল্লি পুলিশের সঙ্গে দেখা করি, তখন তারা জানায়—এই পরিবার বাংলাদেশি এবং তাদের 'নিজ দেশে' ফেরত পাঠানো হবে। আমরা সমস্ত প্রয়োজনীয় নথিপত্র নিয়ে যাই এবং অনুরোধ করি যেন আমাদের বীরভূমের আদি বাড়ির তদন্ত করা হয়। পুলিশ আশ্বস্ত করেছিল, খুব তাড়াতাড়ি পরিবারটিকে ছেড়ে দেওয়া হবে।"
রশ্মি বিবি আরও বলেন, "গত সপ্তাহে আবার যখন আমরা পুলিশের সঙ্গে দেখা করি তখন তারা জানায়, তিনজনকেই বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদেরও হুমকি দেওয়া হয়েছে—যদি আমরা আর কোনো পদক্ষেপ নেই, তাহলে আমাদেরও একই পরিণতি হতে পারে।"
রশ্মি জানান, "সম্প্রতি সোনালি অন্য একজনের ফোন থেকে তাঁকে কল করে জানিয়েছেন, তারা এখন ঢাকার আশপাশে কোথাও রয়েছেন এবং ‘এক সহৃদয় স্থানীয় বাসিন্দার সাহায্যে কোনোভাবে বেঁচে আছেন।"
তাদের গ্রামের আরও তিনজন দানিশ-সোনালির সঙ্গে আটক করা হয়, তাদেরও বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
এর আগে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-এর ওপর চাপ সৃষ্টি করে সাতজন অভিবাসী শ্রমিককে দেশে ফেরত আনতে সক্ষম হয়। তাঁদের মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার এক দম্পতিও ছিলেন। ওই সাতজনকে মহারাষ্ট্র পুলিশ আটক করে পরে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করলে, বিএসএফ তাদের বাংলাদেশে পুশ-ইন করে দেয়।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের অভিবাসী শ্রমিক কল্যাণ বোর্ডের চেয়ারম্যান ও তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম এই জোরপূর্বক বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া পরিবারগুলোর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখছেন। সামিরুল বলেন, "আমি অত্যন্ত বিস্মিত যে, কেন্দ্রীয় সরকার শুধু বাংলায় কথা বলার কারণে ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে। এটা গরিব বাংলা-শ্রমিকদের পরিকল্পিতভাবে হেনস্তার একটা কৌশল ছাড়া আর কিছু নয়। আমি এই নতুন ঘটনাটির ব্যাপারে জেনেছি এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলছি।"
সামিরুল আরও বলেন, "আমি দেশের শিক্ষিত মানুষদের অনুরোধ করছি, এই ধরনের অগণতান্ত্রিক ঘটনার বিরুদ্ধে সবাইকে একযোগে আওয়াজ তুলতে হবে। দেশের ইতিহাসে আগে কখনো এমনটা দেখা যায়নি।"
তিনি জানান, "অন্য রাজ্যে বেআইনি আটক নিয়ে তারা এরই মধ্যে আদালতে গিয়েছেন। খুব দ্রুত এই নতুন ঘটনাটিও আদালতে তোলা হবে এবং ভারতীয় নাগরিকদের ফেরানোর দাবি জানানো হবে।"
এর আগে, গত মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাভাষী অভিবাসী শ্রমিকদের আটক ও বাংলাদেশে পুশ-ইনের ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি এ বিষয়ে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোর সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে কঠোর ভাষায় সমালোচনা করে বলেন, "বাংলায় কথা বলার কারণে শ্রমিকদের বাংলাদেশি বলে চিহ্নিত করে তাদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে। এটা বরদাশত করা হবে না।"
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- আট কোম্পানির উদ্যোক্তাদের নিয়ন্ত্রণে ৮০ শতাংশের বেশি শেয়ার
- ঢাবি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের বৃত্তি : সাক্ষাৎকার যেদিন শুরু
- শেয়ারবাজারের পাঁচ কোম্পানিতে বেড়েছে বিদেশি বিনিয়োগ
- নভেম্বর-ডিসেম্বরে হতে পারে ঢাবির ৫৪তম সমাবর্তন
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ১২ কোম্পানি
- ঢাবি অ্যালামনাইয়ের বৃত্তির সাক্ষাৎকার নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
- প্রথম প্রান্তিকের ইপিএস প্রকাশ করেছে পাঁচ কোম্পানি
- ২১ বস্ত্র কোম্পানিতে প্রাতিষ্ঠানিক মালিকানা নজরকাড়া তলানিতে
- ভারতের ২৫০ সেনা নিহত
- ‘শেয়ারবাজারের মাঠ খেলার জন্য পুরোদমে প্রস্তুত’
- ১৭ কোম্পানি শেয়ারে সফল বিনিয়োগ, ২০ শতাংশের বেশি মুনাফা
- হিরোশিমার চেয়ে ৬ গুণ শক্তিশালী বোমা ফেললো ইসরাইল
- শেয়ারবাজারের ৯ ব্যাংকের সম্পদ যাচাই করবে বাংলাদেশ ব্যাংক
- ১৩ বীমায় প্রাতিষ্ঠানিক মালিকানা তলানিতে, ১০% শতাংশের নিচে শেয়ার
- সুনামির আশঙ্কা, প্রাণ হারাতে পারেন প্রায় ৩ লাখ মানুষ!