ঢাকা, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২
ট্রাম্পের প্রেমের তালিকায় প্রিন্সেস ডায়ানা!

নারীদের ঘিরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অতীত জীবন বরাবরই ছিল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। একাধিক বিয়ে, পরকীয়া কেলেঙ্কারি ও বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে প্রায়শই তিনি গণমাধ্যমের শিরোনামে এসেছেন। এবার আলোচনায় এসেছে প্রয়াত প্রিন্সেস ডায়ানার প্রতি তাঁর একতরফা ভালোবাসা—যা নিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে আবারও নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
ট্রাম্প ১৯৭৭ সালে ইভানা ট্রাম্পকে বিয়ে করেন এবং তাদের দাম্পত্য জীবন এক দশকেরও বেশি স্থায়ী হয়। এরপর মডেল মার্লা ম্যাপলসের সঙ্গে তাঁর পরকীয়া প্রকাশ্যে আসায় সেই সংসারের ইতি ঘটে।
১৯৯০ সালে ইভানার সঙ্গে বিচ্ছেদ চূড়ান্ত হওয়ার পর ট্রাম্প ম্যাপলসের সঙ্গে সম্পর্ক চালিয়ে যান। ১৯৯৩ সালে তাঁদের মেয়ে টিফানির জন্ম হয় এবং একই বছর তাঁরা বিয়ে করেন। তবে এই সম্পর্কও দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ১৯৯৭ সালে ‘জগতের প্রতি ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি’র কারণ দেখিয়ে তাঁরা আলাদা হয়ে যান।
দ্বিতীয় বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলাকালীন ১৯৯৮ সালে নিউইয়র্কের এক পার্টিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিচয় হয় স্লোভেনিয়ান-আমেরিকান মডেল মেলানিয়া কনাসের সঙ্গে। এরপর সম্পর্ক গভীর হলে ২০০৪ সালে মেট গালার আসরে ট্রাম্প মেলানিয়াকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। অবশেষে ২০০৫ সালে ফ্লোরিডার পাম বিচে সমুদ্রতীরবর্তী একটি গির্জায় তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। মেলানিয়া ট্রাম্পের তৃতীয় স্ত্রী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি হন।
তবে এই বিবাহের পরও ট্রাম্পের নাম জড়িয়ে পড়ে আরেক আলোচিত ঘটনা। পর্নতারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসের সঙ্গে সম্পর্কের অভিযোগ ওঠে। স্টর্মি দাবি করেন, "২০০৬ সালে ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর এক রাতের সম্পর্ক হয়েছিল। ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ড্যানিয়েলসকে চুপ করাতে ট্রাম্প ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার দিয়েছিলেন।"
সেই অর্থ লেনদেনের অভিযোগে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ৩৪টি গুরুতর অপরাধের রায় হয়েছে।
তবে নারীদের বিষয়ে নিজের ‘একমাত্র আক্ষেপ’ সম্পর্কেও সরাসরি মন্তব্য করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ব্রিটিশ রাজপরিবারের প্রয়াত রাজবধূ প্রিন্সেস ডায়ানার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপনের ইচ্ছা ছিল তার—এ কথা স্বীকার করেছিলেন তিনি নিজেই।
দ্য সান-এর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ১৯৯৭ সালে উপস্থাপক ডিজে হাওয়ার্ড স্টার্নের একটি রেডিও শোতে অংশ নিয়ে ট্রাম্প এই ইচ্ছার কথা প্রকাশ করেছিলেন। সম্প্রতি ওই রেডিও সাক্ষাৎকারটি নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যক্তি ফ্যাক্টবেস ওয়েবসাইটে পাঠালে তা নিয়ে আবার আলোচনা শুরু হয়।
ওই সাক্ষাৎকারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, "প্রিন্সেস ডায়ানা যদি সুযোগ দিতেন, তাহলে তাঁর সঙ্গে শারীরিক সংসর্গ করতে একটুও ভাবতাম না।" এরপরেই হাসতে হাসতে মজা করে ট্রাম্প বলেন, "তবে এর আগে তাঁকে অবশ্যই এইচআইভি পরীক্ষা করাতে বলতাম।"
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, "প্রিন্সেস ডায়ানা একজন 'পাগল'; তবে তিনি অসম্ভব সুন্দরী ও সুপারমডেল ছিলেন। তাঁর উচ্চতা, সৌন্দর্য ও ত্বক সব মিলিয়ে তিনি অসাধারণ ছিলেন।"
সাক্ষাৎকারে উপস্থাপক হাওয়ার্ড স্টার্ন ট্রাম্পকে প্রশ্ন করেন, "আপনার দৃষ্টিতে সবচেয়ে আবেদনময়ী ১০ নারী কে কে?" জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, "তাঁর কাছে সবচেয়ে আবেদনময়ী নারীর তালিকায় প্রিন্সেস ডায়ানার অবস্থান তৃতীয়। প্রথম অবস্থানে তাঁর স্ত্রী ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প ও দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে সাবেক স্ত্রী ইভানা।"
ডেইলি মেইল-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুধু রেডিও সাক্ষাৎকারেই নয়, ১৯৯৭ সালে প্রকাশিত নিজের বই দ্য আর্ট অব কামব্যাক-এও প্রিন্সেস ডায়ানার প্রশংসা করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ডায়ানার মৃত্যুর মাত্র তিন মাস পর বইটি প্রকাশিত হয়।
‘দ্য আর্ট অব কামব্যাক’ বইয়ে ডায়ানা সম্পর্কে ট্রাম্প বলেন, "মানুষকে মুগ্ধ করার অপূর্ব ক্ষমতা ছিল তাঁর। তিনি এলেই যেন ঘর আলোকিত হয়ে ওঠে। তিনি প্রকৃত প্রিন্সেস—স্বপ্নের নারী।"
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, 'ট্রাম্পের সঙ্গে ডায়ানার বিভিন্ন সময়ে দেখা হয়েছে। ১৯৯৫ সালে ম্যানহাটনের হিলটন হোটেলে এক নৈশভোজে তাঁরা এক টেবিলেই বসেছিলেন। সেখানে ট্রাম্পের দ্বিতীয় স্ত্রী মারলাও উপস্থিত ছিলেন। তবে ডায়ানার প্রতি ট্রাম্পের বিপুল আগ্রহ থাকলে তাঁর প্রতি ডায়ানার আগ্রহ ছিল কি না, এর প্রমাণ পাওয়া যায়নি।'
২০১৫ সালে বিবিসির উপস্থাপক সেলিনা স্কট দাবি করেন, "১৯৯৬ সালের জুলাই মাসে যুবরাজ চার্লসের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের ঘোষণা দেন। এর কয়েক মাস পরে ডায়ানার ৩৫তম জন্মদিনে তাঁর কেনসিংটন প্যালেসে অসংখ্য ফুলের তোড়া পাঠিয়ে দেন ট্রাম্প, যার প্রতিটি ফুলের তোড়ার দাম ছিল ১০০ পাউন্ড করে। সে সময় বিবাহবিচ্ছেদের কারণে দুঃখ প্রকাশ করে একটি বার্তাও পাঠিয়েছিলেন ট্রাম্প।"
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ১৯৯৭ সালের ৩১ আগস্ট প্যারিসে সড়ক দুর্ঘটনায় ডায়ানা নিহত হওয়ার পর ট্রাম্প তাঁর বন্ধুদের বলেছিলেন, "ডায়ানার সঙ্গে ‘ডেট’ করতে না পারাটা তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় আক্ষেপ। তিনি সব সময় ভাবতেন, ডায়ানার সঙ্গে রোমাঞ্চ করার সুযোগ একদিন না একদিন তাঁর আসবেই। কিন্তু এর আগেই চলে গেলেন ডায়ানা।"
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- সরাসরি পারমাণবিক অ'স্ত্র পাবে ইরান!
- পাঁচ কোম্পানিতে বেড়েছে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের শেয়ার
- যেসব শর্তে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলো ইরান
- খোঁজ মিলছে না আয়াতুল্লাহ খামেনির!
- ইরানে বড় ধ্বংসলীল : ৬ বিমানবন্দরে একযোগে হামলা
- ভিডিও ফাঁস করার বিষয়ে মুখ খুলেছেন শরীয়তপুরের সেই ডিসি
- হা'মলার পর হন্যে হয়ে ইরানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের
- ঢাবির হলে প্রকাশ্যে ধূমপানে ২০০ টাকা জরিমানার ঘোষণা
- মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা; উত্তেজনা তুঙ্গে
- জবাব দিতে শুরু করেছে ইরান
- প্রাতিষ্ঠানিকদের দখলে ৮ কোম্পানি: ৪০ শতাংশের বেশি বিনিয়োগ
- পর্যাপ্ত রিজার্ভ থাকা সত্বেও ফেসভ্যালুর নিচে ১৬ ব্যাংকের শেয়ার
- মুন্নু সিরামিকের বিনিয়োগকারীদের জন্য দারুণ সুখবর
- সরকারি চাকরিতে আসছে অবসরের নতুন নিয়ম
- ব্যারিস্টার ফুয়াদের বিরুদ্ধে নিলা ইসরাফিলের বিস্ফোরক অভিযোগ