ঢাকা, বুধবার, ৪ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ভারতের সীমান্ত এলাকায় ১০ হাজারেরও বেশি ঘরবাড়ি ধ্বংস

ডুয়া নিউজ- আন্তর্জাতিক
২০২৫ মে ১৯ ১১:১৭:১৯
ভারতের সীমান্ত এলাকায় ১০ হাজারেরও বেশি ঘরবাড়ি ধ্বংস

ডুয়া ডেস্ক: কয়েকদিন ধরে চলমান গোলাবর্ষণ, পাল্টা হামলা ও সামরিক উত্তেজনার পর অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছেছে ভারত ও পাকিস্তান। বর্তমানে দুই দেশের সামরিক কর্মকর্তারা নিয়মিত যোগাযোগে রয়েছেন এবং যুদ্ধবিরতির সময়সীমাও ধীরে ধীরে বাড়ানো হচ্ছে।

তবে সাম্প্রতিক সংঘর্ষের ক্ষত এখনো স্পষ্ট সীমান্তবর্তী এলাকায়। আনন্দবাজার পত্রিকার ১৯ মে’র একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, পাকিস্তানের গোলাবর্ষণে ভারতের সীমান্ত অঞ্চলে ধ্বংস হয়েছে ১০ হাজারেরও বেশি ঘরবাড়ি।

সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা জম্মুর পুঞ্চ জেলা

‘অপারেশন সিন্দুর’ এবং এর পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় কাশ্মিরের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর শত শত গ্রাম চরমভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে। স্থানীয় নেতারা পরিদর্শন করে জানিয়েছেন, পরিস্থিতি অত্যন্ত শোচনীয়। বিশেষ করে পুঞ্চ, কুপওয়ারা, বারামুলা এবং রাজৌরি জেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জম্মুর পুঞ্চ জেলা সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত—এখানেই নিহতদের মধ্যে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

ন্যাশনাল কনফারেন্সের সংসদ সদস্য আজাজ জান জানান, পুঞ্চ জেলার ৯০টি পঞ্চায়েতের মধ্যে অন্তত ৬০টি পঞ্চায়েতে হাজার হাজার ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে। তিনি বলেন, “এই অঞ্চলে এত বড় মাপের হামলা আগে কখনও হয়নি। অধিকাংশ বাড়িই টিনের ছাউনি দিয়ে তৈরি, যা শেলিংয়ের মুখে কিছুই রক্ষা করতে পারেনি।”

তিনি আরও বলেন, “ভূকম্পনপ্রবণ এই এলাকায় এখন ঘরগুলোর অবস্থা এতটাই খারাপ যে, সামান্য ভূমিকম্পেই বাড়িগুলো ধসে পড়তে পারে।” তাই তিনি কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের কাছে দ্রুত পুনর্গঠনের জন্য ক্ষতিপূরণের আবেদন জানিয়েছেন।

উরি ও কারনাতেও বিপুল ক্ষয়ক্ষতি

পাকিস্তানি সেনার গোলাবর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত উরি ও কারনা অঞ্চলও ব্যাপকভাবে ধ্বংস হয়েছে। উরিতে ৪৫৮টি এবং কারনায় একশোরও বেশি ঘরবাড়ি গুঁড়িয়েছে।

ন্যাশনাল কনফারেন্সের আরেক সাংসদ জাভিদ আহমেদ বলেন, “সম্পূর্ণ ধ্বংস হওয়া বাড়ির জন্য ১০ লাখ এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ৫ লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।”

স্থানীয় বাসিন্দা জাহিদ রাশিদ জানান, গোলাবর্ষণের সময় তারা বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছিলেন। বাইরে এসে দেখেন, সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে। এখন বহু মানুষ আত্মীয়স্বজন কিংবা প্রতিবেশীদের বাড়িতে আশ্রয় নিচ্ছেন।

সরকারি সহায়তার আশ্বাস

পাকিস্তানের হামলায় এই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি স্বীকার করেছেন জম্মু-কাশ্মিরের উপর প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা মাসির আসলাম ওয়ানি। তিনি জানান, দুর্গতদের পুনর্বাসনের জন্য আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে এবং পুনর্বাসন প্রকল্প থেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে স্থানীয় বাসিন্দাদের একটাই দাবি—দ্রুত ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন এবং পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা হোক।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত