ঢাকা, রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

ফ্যাক্ট-চেকার ও কনটেন্ট মডারেটরদের ভিসা দেবে না যুক্তরাষ্ট্র

২০২৫ ডিসেম্বর ০৭ ২১:১৪:৪৪

ফ্যাক্ট-চেকার ও কনটেন্ট মডারেটরদের ভিসা দেবে না যুক্তরাষ্ট্র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:অনলাইন প্ল্যাটফর্মে তথ্য যাচাই, কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণ বা নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট কাজের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের প্রতি যুক্তরাষ্ট্র কড়া অবস্থান নিয়েছে। নতুন নির্দেশনায় এসব খাতের পেশাজীবীদের ভিসা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মার্কিন দূতাবাসগুলোকে এ বিষয়ে আলাদা করে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।

বাকস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় নিয়ন্ত্রণ এবং ফ্যাক্ট-চেকিংয়ের সঙ্গে যুক্তদের ভিসা বাতিলের নির্দেশনা সম্বলিত একটি স্মারক রয়টার্স দেখেছে। প্রযুক্তি খাতের কর্মীদের ওপর বিশেষ করে ভারত, চীনসহ বিভিন্ন দেশের আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞার প্রভাব বড় ধরনের হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

স্মারকটিতে কনস্যুলার কর্মকর্তাদের বলা হয়েছে, ‘‘সুরক্ষিত মতপ্রকাশের সেন্সরশিপ বা সেন্সরশিপের প্রচেষ্টায় জড়িত’’ ব্যক্তিদের ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যান করতে। এই সিদ্ধান্ত সাংবাদিক, পর্যটকসহ সব ধরনের ভিসার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। তবে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এইচ-১বি ভিসায়, যা মূলত প্রযুক্তি খাতের উচ্চ দক্ষ কর্মীদের জন্য প্রদান করা হয় এবং যার বড় অংশই ভারত-চীনের নাগরিকরা পেয়ে থাকেন।

নির্দেশনা অনুসারে আবেদনকারীদের পেশাগত অভিজ্ঞতা, লিংকডইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্টও যাচাই করা হবে। এর মাধ্যমে তাঁরা ফ্যাক্ট-চেকিং, ট্রাস্ট অ্যান্ড সেফটি, কমপ্লায়েন্স বা কনটেন্ট মডারেশনের মতো খাতে কাজ করেছেন কি না তা শনাক্ত করা হবে। সংশ্লিষ্টতা মিললে আবেদনকারীকে ভিসার অযোগ্য হিসেবে গণ্য করা হবে।

অনলাইন সেফটি সংক্রান্ত পেশাজীবীরাও এই নীতির আওতায় পড়বেন বলে মনে করা হচ্ছে। শিশু সুরক্ষা, ইহুদিবিরোধী কনটেন্ট প্রতিরোধ, যৌন হয়রানি বা সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে যারা কাজ করেন, তারাও সমস্যায় পড়তে পারেন। এমনকি যুক্তরাজ্যের ২০২৩ সালের অনলাইন সেফটি অ্যাক্ট বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তারাও ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রে ভিসা জটিলতায় পড়তে পারেন।

এদিকে ট্রাম্প প্রশাসন দাবি করছে, এই ভিসা নীতি আসলে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষারই অংশ। ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারির ক্যাপিটল হামলার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাম্পকে নিষিদ্ধ করার মতো ঘটনা বিবেচনায় নিয়েই এই নীতি তৈরি করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

তবে পার্টনারহিরোর ট্রাস্ট অ্যান্ড সেফটির ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যালিস গগুয়েন হান্সবার্গার বলেছেন, ট্রাস্ট অ্যান্ড সেফটির মতো জীবনরক্ষাকারী কাজকে সেন্সরশিপের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা বিস্ময়কর। তাঁর দাবি, এসব খাতের বৈশ্বিক কর্মীদের উপস্থিতি বরং আমেরিকানদের আরও নিরাপদ রাখে।

এর আগে চলতি বছর বিদেশি সাংবাদিকদের ভিসা সীমিত করা, সরকারি ওয়েবসাইট থেকে জলবায়ু সংশ্লিষ্ট তথ্য সরানো এবং কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ায়ও ট্রাম্প প্রশাসন সমালোচনার মুখে পড়ে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এক্স এ পোস্ট দিয়ে সতর্ক করে বলেন, ‘‘যারা আমেরিকানদের অধিকার ক্ষুণ্ন করে, তারা যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের যোগ্য নয়।’’

ইএইচপি

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত