ঢাকা, সোমবার, ৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৯ কার্তিক ১৪৩২

নিয়ন্ত্রক সংস্থার নানা সিদ্ধান্তে ঘুরতে পারছে না শেয়ারবাজার

২০২৫ নভেম্বর ০৩ ১৬:৩২:১৯

নিয়ন্ত্রক সংস্থার নানা সিদ্ধান্তে ঘুরতে পারছে না শেয়ারবাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক : শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নানা সিদ্ধান্তের কারণে বেহাল দশা সৃষ্টি হয়েছে শেয়ারবাজারে। যে কারণে ডিভিডেন্ড মৌসুমেও দরপতন থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না দেশের শেয়ারবাজার। একদিন নামে মাত্র উত্থান ঘটলেও পরবর্তীতে উল্লেখযোগ্য হারে পতন ঘটছে। এর জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার বিভিন্ন সময়ের অদক্ষ সিদ্ধান্তকে দায়ী করছেন বাজার সংশ্লিষ্ট ও বিনিয়োগকারীরা।

বাজার সংশ্লিষ্ট ও বিনিয়োগকারীদের মতে, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের কথা বলে কিছু সিদ্ধান্ত নিচ্ছে যা সত্যিকারভাবে বাজার পরিপন্থী। ওই সিদ্ধান্তগুলো বাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা হচ্ছে না। এর মধ্যে মার্জিন ঋণ ও আইপিও ইস্যু অন্যতম।

জানা যায়, নতুন মার্জিন বিধিমালা ২০২৫ অনুযায়ী মার্জিন ঋণ কেবল ‘এ’ ক্যাটাগরির শেয়ারে সীমাবদ্ধ করা হচ্ছে। কোনো শেয়ার ‘বি’ বা ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে নেমে গেলে দ্রুত বিক্রির বাধ্যবাধকতা এবং দাম কমে গেলে জোরপূর্বক বিক্রির বিধান রাখা হচ্ছে। এই নীতিমালা বাস্তবায়িত হলে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী থেকে শুরু করে ব্রোকারেজ হাউস পর্যন্ত সবার জন্যই মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি হবে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

তাদের মতে, “সংস্কারের নামে বিএসইসি-এর কিছু কর্মকর্তা এমন উদ্ভট নীতিমালা প্রণয়ন করছেন যা লক্ষাধিক বিনিয়োগকারীর ক্ষতি ডেকে আনবে। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের কথা বললেও আসলে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের বিরুদ্ধেই কাজ চলছে। এমন সংস্কার করতে হবে, যেগুলো বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের অনুকূল হয়। বর্তমান কমিশন সংস্কারের নামে যেসব সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, তা কোনোভাবেই সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা হবে না। বরং তাদের ক্ষতি ও বিপর্যয় আরও বাড়বে। বিনিয়োগকারীরা বলছেন, কমিশনে শেয়ারবাজার সংক্রান্ত দক্ষ কর্মকর্তা না থাকার কারণেই আজগুবি সংস্কারের চিন্তা-ভাবনা চলছে।

আগের দিনের মতো আজ সোমবারও (০৩ নভেম্বর) শেয়ারবাজারে পতন হয়েছে। আজ পতনের মাত্রা অনেক বেশি বেড়েছে। আগেরদিন ডিএসইরস প্রধান সূচক কমেছিল ৬ পয়েন্টের বেশি। আজ কমেছে প্রায় ৫৫ পয়েন্ট। এতে ডিএসইর প্রধান সূচক আজ দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৬১.০১ পয়েন্টে। এদিন অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস ১২.৩৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬৬.৬২ পয়েন্টে। আর ডিএসই-৩০ সূচক ২১.৯৪ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৯৬০.৯৯ পয়েন্টে।

আজ ডিএসইতে মোট ৩৯৮টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নেয়। এর মধ্যে ৪৫টির দর বেড়েছে, ৩০০টির দর কমেছে এবং ৫৩টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

ডিএসইতে এদিন ৫১৮ কোটি ৬২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৫৪৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকার। আগের দিনের তুলনায় লেনদেন কমেছে ২৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা।

এদিকে, অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম এক্সচেঞ্জে (সিএসই) আজ ২৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগেরদিন সিএসইতে ১৬ কোটি ৫১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছিল।

আজ সিএসইতে লেনদেন হওয়া ১৯৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ৪২টির, কমেছে ১২৬টির এবং পরিবর্তন হয়নি ২৫টির।

এদিন সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৮৭.৯৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৩১৭.২৬ পয়েন্টে। আগেরদিন সূচক সিএএসপিআই ৩১.২০ পয়েন্ট বেড়েছিল।

এসএখান/

শেয়ারবাজারের বিশ্লেষণ ও ইনসাইড স্টোরি পেতে আমাদের পেজ ফলো করুন।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত