ঢাকা, সোমবার, ৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৯ কার্তিক ১৪৩২

হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর শিক্ষায় মুসলমানের সঠিক জীবনপথ

২০২৫ নভেম্বর ০২ ১৯:৪৩:২১

হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর শিক্ষায় মুসলমানের সঠিক জীবনপথ

ডুয়া ডেস্ক :মহান আল্লাহ হজরত মোহাম্মদ (সা.)-কে সৃষ্টিকুলের মধ্যে সর্বোচ্চ মর্যাদা ও সম্মানের অধিকারী করে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তা’য়ালা বলেন, “(হে রসুল!) আপনি বলুন, হে মানবমণ্ডলী আমি তোমাদের সকলের জন্যই আল্লাহর রসুল।” (সুরা আল আ’রাফ ৭:১৫৮)। এই মহামানবের উম্মত হওয়াটাই মুসলমানদের জন্য এক গৌরবের বিষয়। প্রকৃত উম্মতে মোহাম্মদী হওয়ার জন্য বিশেষ গুণাবলী ও নৈতিক বৈশিষ্ট্য ধারণ করা অপরিহার্য। হজরত রসুল (সা.)-এর সুদৃঢ় আদর্শ ও চমৎকার চরিত্রে অনুপ্রাণিত ব্যক্তি প্রকৃত উম্মতে মোহাম্মদী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।

আল্লাহ তা’য়ালা বলেন, “তোমাদের জন্য তো আল্লাহর রসুল (সা.)-এর জীবনে রয়েছে উত্তম আদর্শ।” (সুরা আল আহজাব ৩৩:২১)। হজরত রসুল (সা.) শান্তির দূত, যিনি গোটা পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে প্রেরিত হন। তাঁর অনুসারীরা মুসলিম বা মুসলিম জাতি নামে পরিচিত। ইসলাম শব্দের অর্থ হলো আত্মসমর্পণ এবং শান্তিতে বসবাস করা। মুসলমান অর্থাৎ আল্লাহর প্রতি সমর্পিত, বশ্যতা স্বীকারকারী ও শান্তিপ্রিয় ব্যক্তি।

উম্মতে মোহাম্মদীর আচরণ, চিন্তাভাবনা, মানসিকতা ও কর্মস্পৃহা হজরত রসুল (সা.)-এর শিক্ষা অনুযায়ী হওয়া আবশ্যক। আল্লাহ তা’য়ালা বলেছেন, “হে রসুল (সা.), অবশ্যই আপনি মহান চরিত্রের অধিকারী।” (সুরা আল কলম ৬৮:৪)। হজরত রসুল (সা.)-এর সুন্দর চরিত্র বা আখলাকে হামিদাহ, যা আখলাকে হাসানাহ বা হুসনুল খুলক নামেও পরিচিত, সততা, সত্যবাদিতা, দয়া, ক্ষমা, সদাচার, সৌজন্য, সহানুভূতি ও সহমর্মিতা প্রতিফলিত করে। তাঁর অনুসরণ করে একজন মুসলমান এই গুণাবলী অর্জন করতে সক্ষম হন।

পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, “হে মাহবুব (সা.), আপনি বলে দিন, তোমরা যদি আল্লাহকে ভালোবাসতে চাও, তবে আমার অনুসরণ করো। তাহলে আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের পাপরাশি ক্ষমা করে দেবেন।” (সুরা আলে ইমরান ৩:৩১)। এছাড়া, “রসুল (সা.) তোমাদের যা দেন, তা গ্রহণ করো, যা থেকে নিষেধ করেছেন, তা থেকে বিরত থাকো।” (সুরা হাশর ৫৯:৭)। হজরত রসুল (সা.) মানবজাতিকে নৈতিকতার শিক্ষা দিয়েছেন এবং নিজেকে সর্বোচ্চ নৈতিক গুণাবলিতে পরিপূর্ণ করতে প্রেরিত হয়েছেন।

তিনি বলেছেন, “চরিত্রের বিচারে যে লোকটি উত্তম, মুমিনের মধ্যে সেই পূর্ণ ইমানের অধিকারী।” (তিরমিজি শরিফ) এবং “তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি আমার কাছে অধিক প্রিয়, যার আখলাক সবচেয়ে সুন্দর।” (বুখারি শরিফ)। প্রকৃত মুসলমান হওয়ার জন্য নৈতিক চরিত্র বিকাশ অপরিহার্য। মুসলমান হলো আল্লাহর প্রতি সম্পূর্ণ আত্মসমর্পিত এবং শান্তিতে বসবাসকারী। হজরত রসুল (সা.) বলেছেন, “মুসলমান সেই ব্যক্তি, যার জবান ও হাত থেকে অন্য মুসলমান নিরাপদ থাকে।” (বুখারি ও মুসলিম শরিফ)।

পবিত্র কোরআনে আরও বলা হয়েছে, “পৃথিবীতে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করো না।” (সুরা বাকারা ২:১১) এবং “কেউ কাউকে হত্যা করলে সে যেন সব মানুষকে হত্যা করল, আর কেউ কারও প্রাণ রক্ষা করলে, সে যেন সব মানুষের প্রাণ রক্ষা করল।” (সুরা মায়িদা ৫:৩২)। হজরত মোহাম্মদ (সা.) দয়া, মায়া, প্রেম, ভালোবাসা ও করুণার রসুল। তাঁর শিক্ষায় চলতে চলতে আইয়ামে জাহেলিয়া যুগের মানুষরা আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে সত্যের আলোয় আলোকিত হয়ে শ্রেষ্ঠ জাতির মর্যাদা অর্জন করেন।

ডুয়া/নয়ন

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত