ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ৮ কার্তিক ১৪৩২

মার্জারের ৫ ব্যাংকের নাম 'সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক'

২০২৫ অক্টোবর ২৩ ০৬:৪৫:৩৫

মার্জারের ৫ ব্যাংকের নাম 'সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক'

নিজস্ব প্রতিবেদক: সংকটে থাকা বেসরকারি খাতের পাঁচটি ইসলামী ব্যাংককে মার্জার বা একীভূত করে যে নতুন ব্যাংক গঠনের প্রক্রিয়া চলছে, তার নতুন নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে 'সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক'। এই নামেই নতুন ব্যাংকটি গঠিত হবে এবং পাঁচটি ব্যাংকের সম্পদ ও দায়দেনা একীভূত করে এই ব্যাংকের নামে হস্তান্তর করা হবে। সরকারের পক্ষে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ এই নতুন ব্যাংকের মালিক হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে এই তথ্য জানা গেছে।

নতুন ব্যাংক গঠনের প্রক্রিয়া ইতোমধ্যেই অর্থ মন্ত্রণালয় শুরু করেছে। প্রথমে 'সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক' নামে ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণ করা হবে। এরপর জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ ও ফার্মগুলোর থেকে কোম্পানির নিবন্ধন নেওয়া হবে এবং সবশেষে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে নতুন ব্যাংক ব্যবসার লাইসেন্স নেওয়ার জন্য আবেদন করা হবে।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নজিরবিহীন লুটপাটের কারণে দুর্বল হয়ে পড়া পাঁচটি ইসলামী ব্যাংক—ফাস্ট সিকিউরিটি ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংক—একীভূতকরণ ও নতুন ব্যাংক গঠনের প্রস্তাব ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয় ও উপদেষ্টা পরিষদ অনুমোদন দিয়েছে।

ব্যাংকগুলো বর্তমানে আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে এবং দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনা করতে হিমশিম খাচ্ছে, যার কারণেই পাঁচটি ব্যাংক একীভূত করে একটি বড় ইসলামী ব্যাংক গঠনের এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

পাঁচ ব্যাংক একীভূত করার প্রক্রিয়ার শুরুতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নতুন ব্যাংকের জন্য 'ইউনাইটেড ইসলামী ব্যাংক' নাম রাখার প্রস্তাব করেছিল। তবে উপদেষ্টা পরিষদ সেই নামের পাশাপাশি 'সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক' নামটিও প্রস্তাব করে, যা শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত করা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে একটি নতুন ব্যাংক স্থাপন করতে কমপক্ষে ৫০০ কোটি টাকার মূলধন প্রয়োজন হলেও, প্রস্তাবিত নতুন ব্যাংকের মূলধন হবে অনেক বেশি। এর পরিশোধিত মূলধন হবে ৩৫ হাজার কোটি টাকা এবং অনুমোদিত মূলধন হবে ৪০ হাজার কোটি টাকা। মূলধনের দিক থেকে এটিই হবে দেশের সবচেয়ে বড় ব্যাংক। এর মধ্যে সরকার থেকে দেওয়া হবে ২০ হাজার কোটি টাকা। এই অর্থের ১০ হাজার কোটি টাকা নগদ আকারে এবং বাকি ১০ হাজার কোটি টাকা সুকুক বন্ড ছেড়ে বাজার থেকে সংগ্রহ করা হবে। বাকি ১৫ হাজার কোটি টাকা আমানত সুরক্ষা তহবিল এবং করপোরেট আমানতকারীদের শেয়ার দেওয়ার মাধ্যমে সংগ্রহ করা হবে।

তবে নতুন ব্যাংকের এই বিপুল পরিমাণ মূলধনের বড় অংশই ব্যয় হবে আমানতকারীদের বকেয়া অর্থ পরিশোধের কাজে। এর মধ্যে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত আমানতের অর্থ আমানত সুরক্ষা তহবিল থেকে সংগ্রহ করা হবে এবং বাকি আমানতের অর্থ পর্যায়ক্রমে দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক আশা করছে, সরকারি মালিকানায় নতুন এই ব্যাংক গঠিত হলে মানুষ নতুন করে আমানত রাখতে উৎসাহিত হবে, যা ব্যাংকের তহবিলের ঘাটতি দূর করবে। এছাড়া রেমিট্যান্স সংগ্রহ বাড়ানোর জন্যও ব্যাংকটি নানামুখী পদক্ষেপ নেবে।

এএসএম/

শেয়ারবাজারের বিশ্লেষণ ও ইনসাইড স্টোরি পেতে আমাদের পেজ ফলো করুন।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত