ঢাকা, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৭ আশ্বিন ১৪৩২

শেয়ারবাজারের ৬ খাতের শেয়ারে বড় বিপর্যয়

মোবারক হোসেন
মোবারক হোসেন

সিনিয়র রিপোর্টার

২০২৫ অক্টোবর ১২ ১৫:৪৭:২৫

শেয়ারবাজারের ৬ খাতের শেয়ারে বড় বিপর্যয়

মোবারক হোসেন: সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রবিবার শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা এক ভয়াবহ ধাক্কায় পড়েছেন। এদিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স একদিনে ৮১ পয়েন্ট কমে গিয়ে বাজারে নিন্দনীয় পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। পতনের এই ধাক্কায় বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৬ খাত। যেখানে শতভাগ কোম্পানির শেয়ার বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। খাতগুলো হলো-তথ্যপ্রযুক্তি, সিমেন্ট, পেপার অ্যান্ড প্রিন্টিং, টেলিযোগাযোগ, ভ্রমণ ও অবকাশ এবং পাট খাত।

এই ছয় খাতের মধ্যে মোট ২৭টি কোম্পানির শেয়ারই পতনের ধাক্বায় বেসামাল অবস্থায় ছিল। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ১১টি, পেপার অ্যান্ড প্রিন্টিং খাতে ৬টি, টেলিযোগাযোগ খাতে ৩টি, ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে ৪টি এবং পাট খাতে ৩টি কোম্পানি পতনের মুখোমুখি হয়েছে। প্রতিটি কোম্পানির শেয়ারই আজ দিনের শেষে বড় আকারে হ্রাস পেয়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ব্যাপক হতাশা সৃষ্টি করেছে।

তথ্যপ্রযুক্তি খাতের আইএসএন আজ সবচেয়ে বেশি ধসের মুখোমুখি হয়েছে, ৬.৫১ শতাংশ দরপতনের সঙ্গে। একই খাতের ড্যাফোডিল কম্পিউটার্সের শেয়ার ৫.৯৯ শতাংশ কমেছে। সিমেন্ট খাতের অ্যারামিট সিমেন্টের শেয়ার ৬.০৯ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে, যা কোম্পানির দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগকারীদের জন্য বড় ধাক্কা।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, একক খাতের নয়, একাধিক খাতের একসাথে পতন শেয়ারবাজারের সামগ্রিক আস্থা দুর্বল করছে। বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও আর্থিক ঝুঁকি বিবেচনা করেও এই পতনের ফলে অপ্রত্যাশিত ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

অন্যদিকে, বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, ভৌগোলিক, রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বর্তমানে স্থিতিশীল থাকলেও বাজারে উদ্বেগ এবং অস্বাভাবিক লেনদেনের কারণে এই ধরনের পতন ঘটতে পারে। বিশেষ করে তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিযোগাযোগ খাতের মতো সংবেদনশীল খাতের শেয়ার দর কমে বিনিয়োগকারীরা চরম মনস্তাত্ত্বিক চাপের মুখে পড়েছেন।

বাজারে বিনিয়োগকারীদের আশঙ্কা, এই পতনের ধাক্কা দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগকারীর আস্থা হ্রাস করতে পারে। বিশেষ করে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা, যারা এই ছয় খাতের শেয়ার ধরেছিলেন, তারা আর্থিকভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধসের পেছনে কারসাজিকারীদের হাত আছে, যারা বিএসইসিকে চাপে রাখতে ধারাবাহিকভাবে বাজারে পতনের ছক কষছে।

আজকের এই পতনের পর বাজারে সুরাহার জন্য বিনিয়োগকারীরা আরও স্বচ্ছতা এবং লেনদেন নিয়ন্ত্রণের আহ্বান জানাচ্ছেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বাজারে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে হলে দুই স্টক এক্সচেঞ্জ এবং বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায়, কারসাজিকারীরা বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি করে আবারও বাজারে বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে।

এএসএম/

শেয়ারবাজারের বিশ্লেষণ ও ইনসাইড স্টোরি পেতে আমাদের পেজ ফলো করুন।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত