ঢাকা, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৭ আশ্বিন ১৪৩২

ইরানি এলপিজি জাহাজ চট্টগ্রামে, যুক্তরাষ্ট্রের সতর্কতা

২০২৫ অক্টোবর ১৩ ০০:০০:০৭

ইরানি এলপিজি জাহাজ চট্টগ্রামে, যুক্তরাষ্ট্রের সতর্কতা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ইরানের পেট্রোলিয়াম ও এলপিজি রপ্তানিতে সহায়তার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র ৫০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি ও জাহাজের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এই নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত একটি জাহাজ বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর করা অবস্থায় আছে। মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের দাবি, জাহাজটি আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে ইরান থেকে অপরিশোধিত তেল পরিবহন করেছে।

মার্কিন অর্থ বিভাগীয় সংস্থা (ওএফএসি) গত বৃহস্পতিবার এই নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি করে, যার লক্ষ্য ইরানের 'নগদ অর্থ প্রবাহ কমানো' এবং সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর অর্থায়ন বন্ধ করা। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা জাহাজ ও প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ইরানের এলপিজির দুটি চালান বাংলাদেশে পৌঁছেছে।

তবে এলপিজি অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (লোয়াব) সভাপতি আমিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, এই নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশের এলপিজি ব্যবসায় তেমন প্রভাব ফেলবে না। তিনি বলেন, বাংলাদেশের আমদানিকারকরা সরাসরি ইরান থেকে এলপিজি কেনেন না, এবং ট্রেডিং কোম্পানিগুলো ইরানের সঙ্গে বাণিজ্য করে কিনা তা জানার সুযোগ নেই।

নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্তদের মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক স্লোগাল এনার্জি ডিএমসিসি এবং মারকান হোয়াইট ট্রেডিং ক্রুড অয়েল অ্যাবরোড কোম্পানি এলএলসি রয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে ২০২৪ সাল থেকে দক্ষিণ এশিয়ায় ইরানের এলপিজি চালানে সহায়তার অভিযোগ রয়েছে। মার্কিন অর্থ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, পানামা পতাকাবাহী 'গ্যাস ডিওর' জাহাজ এবং কোমোরোস পতাকাবাহী 'আদা' জাহাজ বাংলাদেশে ইরানি এলপিজি সরবরাহ করেছে, এবং সেগুলোকে এখন নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বছর 'ক্যাপ্টেন নিকোলাস' নামের একটি জাহাজে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে এলপিজি খালাসের সময় আগুন ধরে গিয়েছিল, যা আইনি জটিলতায় আটকে ছিল এবং বর্তমানেও চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর করা অবস্থায় আছে। নিষেধাজ্ঞার তালিকায় কোনো বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের নাম না থাকলেও, এসব চালানের উল্লেখের মাধ্যমে বাংলাদেশকেও ওয়াশিংটনের সম্প্রসারিত নজরদারি ও বাস্তবায়ন ব্যবস্থার আওতায় দেখা হচ্ছে। মার্কিন আইনে বলা হয়েছে, নিষিদ্ধ লেনদেনে জড়িত বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো 'সেকেন্ডারি স্যাংশনের' ঝুঁকিতে থাকে, যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক ব্যবস্থায় প্রবেশাধিকার হারানোর মতো কঠোর পদক্ষেপও রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই নিষেধাজ্ঞার ফলে বাংলাদেশের জ্বালানি সরবরাহে সম্ভাব্য বিঘ্ন, ব্যাংকিং ও পেমেন্ট জটিলতা, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও কূটনৈতিক চাপে পড়ার সম্ভাবনা, এবং বাণিজ্যিক সুনাম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে।

এসপি

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত