ঢাকা, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫, ২৬ আশ্বিন ১৪৩২

আজ বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস

ইনজামামুল হক পার্থ
ইনজামামুল হক পার্থ

রিপোর্টার

২০২৫ অক্টোবর ১০ ০৯:০২:২৫

আজ বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস

ইনজামামুল হক পার্থ: আজ ১০ অক্টোবর বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস। বাংলাদেশেও নানা সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান দিবসটি উদ্‌যাপন করছে সচেতনতামূলক নানা আয়োজনের মাধ্যমে। এদিনে মানসিক সুস্থতার গুরুত্ব তুলে ধরে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা হয় নিজের ও অন্যের মানসিক যত্নে সচেতন হতে।

১৯৯২ সাল থেকে প্রতি বছর ১০ অক্টোবর বিশ্বব্যাপী মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে এই দিবসটি পালিত হচ্ছে। ২০১৮–১৯ সালের জরিপ অনুযায়ী, বাংলাদেশের ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক কোনো না কোনোভাবে মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি দেখা যায় ডিপ্রেশন (বিষণ্নতা) ও অ্যাংজাইটি (উদ্বেগ)–এ আক্রান্তদের মধ্যে।

শিশু-কিশোরদের মধ্যে মানসিক সমস্যার হার প্রায় ১২ দশমিক ৬ শতাংশ, তবে চিকিৎসা নিচ্ছেন খুবই কম মানুষ। গবেষণায় দেখা গেছে, আক্রান্তদের ৯২ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক এবং ৯৪ শতাংশ শিশু কখনও মানসিক স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আসেননি। অর্থাৎ, তারা না ওষুধ খান, না কাউন্সেলিং করেন।

মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নের উপায়

জাতীয় জরিপ অনুসারে বাংলাদেশের প্রাপ্তবয়স্কদের প্রায় ১৯% জন মানসিক রোগে ভুগছেন। তাই শারীরিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি নজর দেওয়া প্রয়োজন, কারণ মন ও শরীর একে অপরের সাথে জড়িত। গবেষণা অনুযায়ী মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নে পাঁচটি ধাপ অনুসরণ করা যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, নিয়মিত মননশীলতা (মাইন্ডফুলনেস) মেডিটেশন বর্তমান মুহূর্তে মনোযোগ বাড়িয়ে উদ্বেগ এবং মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।

অন্য কার্যকর অভ্যাসের মধ্যে রয়েছে নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম, পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস এবং পর্যাপ্ত ঘুম। নিয়মিত ব্যায়াম এন্ডোরফিন নিঃসরণ বাড়িয়ে স্ট্রেস হরমোন কমায়। এছাড়া সুষম খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা ও পর্যাপ্ত ঘুম নেওয়া মানসিক সুস্থতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ। বন্ধু বা পরিবারের সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক গড়ে তোলা এবং আবেগ ভাগাভাগি করাও উদ্বেগ ও বিষণ্ণতা কমাতে সহায়তা করে। প্রয়োজনে পেশাদার কাউন্সেলিং বা থেরাপি গ্রহণ করলে মানসিক সমস্যা সমাধানে সহায়তা পাওয়া যায়।

কর্মক্ষেত্রে মানসিক সুস্থতা বজায় রাখার পদক্ষেপসমূহ

শুভ্র ও সহযোগিতামূলক কর্মপরিবেশ কর্মীদের মানসিক সুস্থতায় সহায়ক: কাজে ব্যস্ত থাকা মন ভালো রাখে এবং সুস্থ মন কর্মজীবনকে আনন্দময় করে। তবে অতিরিক্ত কাজের চাপ, নিরাপত্তাহীনতা, সহকর্মীদের মধ্যে অসুস্থ প্রতিযোগিতা ও স্বীকৃতির অভাব কর্মীদের মানসিক চাপ বাড়িয়ে দেয়। বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবসের ২০২৪ সালের প্রতিপাদ্যও ছিল ‘কর্মস্থলে মানসিক স্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দেওয়ার এখনই সময়’ , যা কর্মপরিবেশে সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করে।

করনীয় পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে কর্মক্ষেত্রে সহযোগিতামূলক পরিবেশ গড়ে তোলা এবং কর্মীদের অর্জন স্বীকৃতি দেওয়া, যাতে চাপ কমে। প্রতি কর্মী নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা মেনে কাজ করবে, নিয়মিত গঠনমূলক পরামর্শ পাবে এবং পর্যাপ্ত ছুটি নিশ্চিত করা হলে কাজ-জীবন ভারসাম্য বজায় থাকে। এছাড়া কর্মীদের মানসিক চাপ মোকাবিলা বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান এবং প্রয়োজনে কর্মক্ষেত্রে পরামর্শদাতার সহায়তা নিশ্চিত করাও জরুরি। এসব পদক্ষেপ মানসিক সহায়তা বৃদ্ধির পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে সহায়ক হিসেবে কাজ করে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত কাজের চাপ, কম বেতন, চাকরির অনিশ্চয়তা, কর্মক্ষেত্রে অসন্তুষ্টি, সহকর্মীদের অসহযোগিতা ও সামাজিক অবস্থান হারানোর ভয় কর্মীদের মানসিকভাবে দুর্বল করে তোলে। পরিসংখ্যান বলছে, কর্মক্ষেত্রে প্রতি পাঁচজনের একজন মানসিক সমস্যায় ভোগেন, আর তাদের মধ্যে ৮০ শতাংশ গুরুতর মানসিক সমস্যার কারণে কাজ হারান।

ইএইচপি

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত

আজকের (১০ অক্টোবর) মুদ্রা বিনিময় হার

আজকের (১০ অক্টোবর) মুদ্রা বিনিময় হার

ডুয়া ডেস্ক: বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের সঙ্গে সঙ্গে বিদেশি মুদ্রার সঙ্গে টাকার বিনিময় হারও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। প্রতিদিনের লেনদেনে ব্যবসায়ী... বিস্তারিত