ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর ২০২৫, ২২ আশ্বিন ১৪৩২

৪৪ মিটারের মহড়া: প্যারিসের মাঠে নতুন উত্তেজনা

২০২৫ অক্টোবর ০৭ ১৭:২৭:০১

৪৪ মিটারের মহড়া: প্যারিসের মাঠে নতুন উত্তেজনা

স্পোর্টস ডেস্ক :প্যারিসের ফুটবলে এক নতুন ধারা সৃষ্টি হচ্ছে। প্যারিস সেইন্ট জার্মেইর (পিএসজি) দীর্ঘদিন ধরে শহরের ফুটবলের একক রাজত্ব বজায় রেখেছে। পার্ক দেস প্রিন্সেসের গায়ে লেখা ‘প্যারিস ইজ ম্যাজিক’ এখনো রাজধানীর ফুটবলে ক্লাবের আধিপত্যের প্রতীক। কিন্তু সেই আধিপত্য এখন প্রশ্নবিদ্ধ হতে শুরু করেছে। পিএসজির মাত্র ৪৪ মিটার দূরে নবাগত ক্লাব প্যারিস এফসি তাদের নিজস্ব গল্প গড়ে তুলছে।

শহরের নতুন ক্লাব শুক্রবার রাতে তাদের নতুন স্টেডিয়াম ‘স্টেদ জিন বুইনে’ লরিয়েন্তেকে ২-০ গোলে হারিয়েছে। লিগে নবাগত এই দল বর্তমানে পয়েন্ট টেবিলের অষ্টম স্থানে, আর শীর্ষে থাকা পিএসজির থেকে পিছিয়ে মাত্র ছয় পয়েন্টে। যদিও এখনই পিএসজিকে চ্যালেঞ্জ করার পর্যাপ্ত বাস্তবতা নেই, তবে প্যারিসের ফুটবলে সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের হাওয়া বইতে শুরু করেছে।

ইতিহাসের দিকে চোখ রাখলে দেখা যায়, ১৯০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘স্তেদ সেইন্ট জার্মেইর’ এবং ১৯৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘প্যারিস এফসি’ ১৯৭০ সালে একীভূত হয়ে পিএসজি তৈরি করেছিল। তবে দুই বছরের মধ্যে চুক্তি ভেঙে গেলে ১৯৭২ সাল থেকে প্যারিস এফসি স্বাধীনভাবে নিজস্ব পথ চলা শুরু করে। নবাগত এই ক্লাব কখনো নগর প্রতিদ্বন্দ্বীর মতো নাম বা সুনাম অর্জন করতে পারেনি।

সম্প্রতি ক্লাবটি আরনো পরিবারের হাতে এসেছে। লুই ভিতো, ডিওর ও টিফানির মতো বিশ্বখ্যাত ফ্যাশন জগতের কর্ণধাররা ২০২৪ সালের শেষের দিকে ক্লাবের মালিকানা নিয়েছেন। পরিবারটি ধীর ও স্থিতিশীল কৌশল অবলম্বন করছে; লিগে টিকে থাকা ও ধীরে ধীরে ভিত্তি মজবুত করাই তাদের মূল লক্ষ্য। প্যারিস এফসির প্রেসিডেন্ট পিয়ের ফেরাচ্চি জানিয়েছেন, “আগামী কয়েক বছর সতর্কতার সঙ্গে লিগে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের দলে টানা হবে।”

দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বার্সেলোনার একাডেমি মডেল থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ফ্রান্সের যুব প্রতিভাদের জন্য নতুন একাডেমি গঠন করা হচ্ছে। বায়ার্ন মিউনিখের সাবেক টেকনিক্যাল ডিরেক্টর মার্কো নেপ্পেকে নতুন ক্রীড়া পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ক্লাবের নিয়ন্ত্রণ এখন পুরোপুরি আরনো পরিবারের হাতে চলে এসেছে।

মাঠে খেলোয়াড়রাও নিজেদের ছাপ রাখছে। ফিলিপ ক্রাসো ও ইলান কেব্বাল গোল করেছেন, যা ক্লাবের জয়ের মূল চাবিকাঠি। মিডফিল্ডার ম্যাকসিম লোপেজের পারফরম্যান্সও নজর কাড়ছে। গোলপোস্টে তরুণ ওবেদ নকামবাদির দুর্দান্ত পারফরম্যান্স পিএসজির সাবেক গোলরক্ষক কেভিন ট্র্যাপকে বেঞ্চে বসিয়েছে। নতুন সাইনিং মজেস সাইমন ও হামারি ট্রাওরেও দলের শক্তি যোগ করেছে।

ক্লাবের উন্নয়ন পরিকল্পনায় সাবেক লিভারপুল কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপেরও অবদান রয়েছে। রেড বুলের মালিকানাধীন ছোট শেয়ার এবং গ্লোবাল সকারের প্রধান হিসেবে তিনি দলের কৌশলগত দিক পরিচালনা করছেন। যদিও পিএসজির আধিপত্য এখনো কমেনি, তবে শুক্রবারের পূর্ণ দর্শক উপস্থিতি এবং প্যারিস এফসির শক্তিশালী দৃষ্টান্ত দেখিয়েছে যে শহরে আর একক রাজত্বের দিন শেষ হতে পারে। নবাগতরা ‘প্যারিস ইজ ম্যাজিক’-এর মতো স্লোগানে নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।

ডুয়া/নয়ন

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত