ঢাকা, বুধবার, ১ অক্টোবর ২০২৫, ১৬ আশ্বিন ১৪৩২

পেটের মেদ বাড়া কতটা বিপজ্জনক, যে উপায়ে কমাবেন

২০২৫ সেপ্টেম্বর ৩০ ১৭:৩৯:২৫

পেটের মেদ বাড়া কতটা বিপজ্জনক, যে উপায়ে কমাবেন

লাইফস্টাইল ডেস্ক: পেটের চারপাশে বাড়তে থাকা চর্বি বা বেলি ফ্যাট নিয়ে অনেকেই চিন্তিত। একে কেউ কেউ জিমের মাধ্যমে কমানোর চেষ্টা করেন, আবার কেউ গুরুত্বই দেন না। তবে এই অতিরিক্ত চর্বি শুধু সৌন্দর্য নষ্ট করে না, বরং স্বাস্থ্যের জন্যও হতে পারে গুরুতর হুমকি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, পেটের চর্বি বেড়ে গেলে পোশাক পরার স্বাচ্ছন্দ্য কমে যায় এবং শরীর নানা রোগের ঝুঁকিতে পড়ে। উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে অতিরিক্ত শর্করা, কোলেস্টেরল সমস্যা ছাড়াও এটি টাইপ-টু ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের সম্ভাবনা বাড়ায়।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় উঠে এসেছে, পেটের চর্বি শরীরে সাইটোকাইন নামক প্রোটিন বাড়ায় যা প্রদাহ সৃষ্টি করে। একই সঙ্গে এটি অ্যাঞ্জিওটেনসিন নামক প্রোটিনের মাত্রা বাড়ায়, যা রক্তনালী সংকুচিত করে এবং রক্তচাপ বাড়ায়। এছাড়া এ কারণে ডিমেনশিয়া, হাঁপানি এমনকি ক্যান্সারের ঝুঁকিও বেড়ে যায়।

দিল্লির ফোর্টিস এসকর্টস হাসপাতালের সিনিয়র কার্ডিওলজিস্ট ডা. শিব কুমার চৌধুরী বলেন, পেটের চর্বি শরীরের অন্যান্য অংশের চর্বির তুলনায় বেশি বিপজ্জনক। যখন এটি ভাঙে, তখন বিষাক্ত উপাদান বের হয়ে ধমনিতে প্রদাহ সৃষ্টি করে, হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়।

কেন বাড়ে পেটের চর্বি

এই চর্বি বাড়ার পেছনে রয়েছে নানা কারণ জেনেটিক বৈশিষ্ট্য, বয়স, হরমোনজনিত পরিবর্তন, মেনোপজ, অতিরিক্ত ওজন, অগোছালো জীবনযাপন ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস।

নিয়ন্ত্রণে রাখতে যা করতে হবে

বিশেষজ্ঞদের মতে, সুষম খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনই পেটের চর্বি নিয়ন্ত্রণের মূল উপায়।

রাতের খাবার ও ঘুম

ঘুমানোর অন্তত ২–৩ ঘণ্টা আগে খাওয়া শেষ করতে হবে। নাহলে অব্যবহৃত ক্যালরি চর্বি হিসেবে জমে ওজন বাড়ায়।

খাদ্যাভ্যাস

বেশি ফাইবার ও প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। এগুলো দীর্ঘসময় পেট ভরা রাখে ও ক্ষুধা কমায়। ডিম, দুধ, ডাল, দই, মাছ, মুরগি, সয়া জাতীয় খাবার কার্যকর।

প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলা

সাদা পাউরুটি, চিপস, ক্র্যাকার্স দ্রুত হজম হয়ে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায় এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি তৈরি করে। এর বদলে হোল গ্রেইন, বাদাম, ফল ও স্বাস্থ্যকর নাশতা বেছে নিতে হবে।

চিনি, অ্যালকোহল ও ধূমপান থেকে বিরত থাকা: এগুলো সরাসরি ওজন বাড়ায় এবং শরীরের ক্ষতি করে।

ঘুম ও মানসিক চাপ

ঘুম কম হলে ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণকারী হরমোন প্রভাবিত হয়। মানসিক চাপ কর্টিসল হরমোন বাড়িয়ে অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার প্রবণতা বাড়ায়।

শারীরিক পরিশ্রম

হাঁটা, দৌড়, সাঁতার, সাইক্লিং, যোগব্যায়াম ইত্যাদি ক্যালরি খরচ করে, পেশি শক্তিশালী করে এবং বিপাকক্রিয়া বাড়ায়। এতে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমে।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত