ঢাকা, শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৮ ভাদ্র ১৪৩২

সুস্থ থাকতে জীবনধারায় দরকার যেসব পরিবর্তন

২০২৫ সেপ্টেম্বর ১২ ১৯:৩৬:১২

সুস্থ থাকতে জীবনধারায় দরকার যেসব পরিবর্তন

নিজস্ব প্রতিবেদক: শরীর সুস্থ রাখা শুধু চিকিৎসা বা ওষুধের ওপর নির্ভর করে না, বরং প্রতিদিনের জীবনযাপনের ধরন এর সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। চিকিৎসক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অল্প কিছু নিয়ম মেনে চললেই ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ কিংবা স্থূলতার মতো দীর্ঘমেয়াদি রোগের ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো সম্ভব।

নিয়মিত ব্যায়ামের গুরুত্ব

বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা বা হালকা ব্যায়াম করলে রক্তসঞ্চালন ভালো থাকে, শরীরে অক্সিজেনের সরবরাহ বাড়ে এবং মানসিক চাপও কমে যায়। যারা ডেস্ক জবে দীর্ঘ সময় বসে থাকেন, তাদের জন্য ব্যায়াম আরও বেশি প্রয়োজন। ব্যায়ামের অভাবে ওজন বেড়ে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট, জয়েন্টে ব্যথা এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বহুগুণে বেড়ে যায়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিক্যাল এডুকেশন বিভাগের এক শিক্ষক বলেন, “আমরা প্রতিদিনই ছাত্রছাত্রীদের বলি—অন্তত আধাঘণ্টা দ্রুত হাঁটুন। এতে শুধু শরীর নয়, মনও সতেজ থাকে।”

সুষম খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা

শুধু ব্যায়াম নয়, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসও সুস্থতার অন্যতম শর্ত। ভাজা ও অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। এর পরিবর্তে শাকসবজি, ফলমূল, ডাল, আঁশযুক্ত শস্য ও পর্যাপ্ত পানি খেতে হবে।

পুষ্টিবিদদের মতে, দিনে অন্তত পাঁচ রকমের সবজি ও ফল খাওয়ার অভ্যাস করা উচিত। এতে শরীরে ভিটামিন ও খনিজ উপাদানের ঘাটতি থাকে না। পাশাপাশি লবণ ও চিনি কম খাওয়ার পরামর্শও দেন তারা। অতিরিক্ত লবণ উচ্চ রক্তচাপ বাড়ায়, আর অতিরিক্ত চিনি ডায়াবেটিস ও স্থূলতার কারণ হয়।

পর্যাপ্ত ঘুমের উপকারিতা

শরীর ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য পর্যাপ্ত ঘুম অপরিহার্য। প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে প্রতিদিন অন্তত ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন ঘুমানো উচিত। ঘুম কম হলে একদিকে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, অন্যদিকে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঘুমের ঘাটতি থেকে ডিপ্রেশন, উদ্বেগ, স্মৃতিশক্তি হ্রাসের মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে।

নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা

বিশেষজ্ঞরা মনে করিয়ে দেন, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা (চেকআপ) সুস্থ জীবনের অন্যতম শর্ত। অনেক সময় রোগ প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা না পড়ায় তা গুরুতর আকার ধারণ করে। বছরে অন্তত একবার রক্তচাপ, রক্তের শর্করা ও কোলেস্টেরলের মাত্রা পরীক্ষা করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।

সচেতনতার অভাব বড় চ্যালেঞ্জ

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, আমাদের সমাজে সচেতনতার অভাবই বড় সমস্যা। অনেকেই অসুস্থ না হওয়া পর্যন্ত জীবনধারায় পরিবর্তন আনতে চান না। অথচ প্রতিরোধই সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি।

একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক বলেন, “আমরা যদি আগে থেকেই সচেতন হই, তাহলে ওষুধের ওপর নির্ভরশীলতা কমবে, চিকিৎসা খরচও বাঁচবে। সুস্থতা তখন সবার নাগালের মধ্যেই থাকবে।”

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

সর্বোচ্চ পঠিত