ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০ ভাদ্র ১৪৩২

বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের বিষয়ে কোরআনের কঠোর হুঁশিয়ারি

২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৩ ১১:৫৬:২৫

বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের বিষয়ে কোরআনের কঠোর হুঁশিয়ারি

নিজস্ব প্রতিবেদক: পৃথিবীতে অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করাকে ইসলামে সবচেয়ে নিকৃষ্ট কাজ হিসেবে গণ্য করা হয়। এই ধরনের জঘন্য কাজ কেউ পেশিশক্তি দিয়ে করে, আবার কেউ করে কূটবুদ্ধি ও বাকপটুতার মাধ্যমে। তাদের বাহ্যিক রূপ, কথা বা পোশাকে অনেক সময় তাদের আসল উদ্দেশ্য বোঝা যায় না। তারা নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য মানুষের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ তৈরি করে এবং সব মহলে ভালো সেজে থাকে। পবিত্র কোরআনে এমন ফিতনাবাজদের সম্পর্কে কঠোর সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে।

পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেছেন, "মানুষের মধ্যে এমন লোকও আছে, পার্থিব জীবন সম্পর্কে যার কথাবার্তা তোমাকে মুগ্ধ করে, আর সে ব্যক্তি তার অন্তরে যা আছে সে সম্পর্কে আল্লাহকে সাক্ষী রাখে, অথচ সে বড়ই ঝগড়াটে। আর যখন সে ফিরে যায়, তখন পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টির এবং শস্য ও প্রাণী ধ্বংস করার চেষ্টা করে। আল্লাহ অশান্তি পছন্দ করেন না।" (সুরা বাকারা, আয়াত: ২০৪-২০৬)

তাফসিরবিদদের মতে, এই আয়াতটি মুনাফিকদের আচরণ সম্পর্কে সতর্ক করার জন্য নাজিল হয়েছিল। মহানবী (সা.)-এর সময়ে আখনাস ইবনে শুরাইক নামে এক ব্যক্তি এমন বাকপটু ছিলেন যে তিনি নিজেকে মুসলমান বলে কসম খেতেন, কিন্তু পরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, অন্যায়-অনাচার এবং আল্লাহর বান্দাদের কষ্ট দেওয়ার কাজে লিপ্ত হতেন।

পবিত্র কোরআনে পেশিশক্তি ব্যবহার করে নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের ব্যাপারেও সতর্ক করা হয়েছে। আল্লাহ বলেন, "যারা আল্লাহর সঙ্গে দৃঢ় অঙ্গীকারে আবদ্ধ হওয়ার পর তা ভঙ্গ করে, যে সম্পর্ক অক্ষুণ্ন রাখতে আল্লাহ আদেশ করেছেন তা ছিন্ন করে এবং পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করে বেড়ায়, তাদের জন্য রয়েছে অভিসম্পাত এবং মন্দ আবাস।" (সুরা রাদ, আয়াত: ২৫)

এই আয়াত থেকে বোঝা যায়, যারা পৃথিবীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে, তাদের বাহ্যিকভাবে প্রভাবশালী ও সুখী মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে তারা আল্লাহর দরবারে অভিশপ্ত। সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও নাশকতা জঘন্যতম পাপ। আর যদি তা মানুষ হত্যার পর্যায়ে চলে যায়, তাহলে তা আরও ভয়ংকর রূপ নেয়।

ইসলামে একজন নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করাকে সমগ্র মানবতাকে হত্যার সমতুল্য বলা হয়েছে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেছেন, "এ কারণেই আমি বনি ইসরাঈলের ওপর এই আদেশ দিলাম, যে ব্যক্তি কাউকে হত্যা করা কিংবা জমিনে ফাসাদ সৃষ্টি করা ছাড়া যে কাউকে হত্যা করল, সে যেন সব মানুষকে হত্যা করল। আর যে তাকে বাঁচাল, সে যেন সব মানুষকে বাঁচাল।" (সুরা মায়িদা, আয়াত: ৩২)

হাদিসেও নিরপরাধ মুসলিমকে হত্যা করাকে কুফরির সমতুল্য পাপ বলা হয়েছে। আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, "কোনো মুসলিমকে গালি দেওয়া ফাসেকি কাজ (জঘন্য পাপ) আর কোনো মুসলিমকে হত্যা করা কুফরি।" (বুখারি, হাদিস: ৭০৭৬)

এজন্য একজন মুমিনের কর্তব্য হলো সব ধরনের নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা থেকে নিজেকে দূরে রাখা। মানুষের ক্ষতি করার প্রবণতা ছেড়ে দিয়ে উপকারের চেষ্টা করা, কারণ ক্ষণিকের এই পৈশাচিক আনন্দ শেষ পর্যন্ত স্থায়ী বিষাদের কারণ হবে।

ইএইচপি

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

সর্বোচ্চ পঠিত

টাকার বিনিময়ে আজকের বৈদেশিক মুদ্রার রেট

টাকার বিনিময়ে আজকের বৈদেশিক মুদ্রার রেট

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য দিন দিন সম্প্রসারণের সঙ্গে সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেনও বাড়ছে। ব্যবসায়, আমদানি-রপ্তানি এবং আন্তর্জাতিক বিনিয়োগের কার্যক্রম... বিস্তারিত