ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২
অবশেষে ‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষণা করলো বিএনপি
.jpg)
বিএনপির কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয় থাকা সুবিধাবাদী ও হাইব্রিড নেতাদের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। অন্যদিকে আন্দোলন-সংগ্রামে ত্যাগী নেতাকর্মীরা তাদের ষড়যন্ত্রে কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন। অভিজ্ঞ নেতাদের যথাযথ মূল্যায়ন না হওয়ায় কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত ক্ষোভ বাড়ছে।
দুঃসময়ে মামলাহামলা ও হুমকির ভয়ে গুটিয়ে থাকা অনেক নেতা এখন সক্রিয় হলেও তাদের অনেকে রাজনৈতিক ও সামাজিক মঞ্চে বিএনপির নামে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারে ব্যস্ত। এতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলেও মনে করা হচ্ছে।
অভিযোগ রয়েছে, ৫ আগস্টের রাজনৈতিক ঘটনার পর বিদেশ থেকে ফিরে এসে কিছু নেতা নিজেদের ‘নির্যাতিত’ দাবি তুলে মনোনয়ন পেতে লবিং-তদবিরে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এরই প্রেক্ষিতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সুবিধাবাদীদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছে এবং অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিচ্ছে।
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সুবিধাবাদীদের ‘বসন্তের কোকিল’ আখ্যায়িত করে সতর্ক করেছেন। তবে প্রভাবশালী কয়েকজন নেতার ছত্রছায়ায় এদের প্রভাব ও লবিং কার্যক্রম বেড়েই চলছে।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি মাঠে সক্রিয় হচ্ছে। ত্যাগী নেতারা আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়লেও সুবিধাবাদী ও হাইব্রিড নেতারাও নানা কর্মকাণ্ড বাড়াচ্ছেন। অভিযোগ উঠেছে, তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করে দলে প্রভাব বিস্তার করছেন এবং কমিটিতে নিজেদের লোক বসাচ্ছেন যা ত্যাগী নেতাদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করছে।
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলা বিএনপির কমিটিতে অধিকাংশ সদস্য আন্দোলনে নিষ্ক্রিয় ও সুবিধাবাদী বলে অভিযোগ উঠেছে। একইভাবে ময়মনসিংহের এক উপজেলা কমিটির আহ্বায়কের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানোর অভিযোগ রয়েছে।
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, “ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বারবার এসব নেতাদের বিষয়ে সতর্ক করেছেন, সাংগঠনিক শাস্তিও দেওয়া হয়েছে। দলের ছাঁকনি দিয়ে এসব ‘আবর্জনা’ ঝেড়ে ফেলতেই হবে।”
সুনামগঞ্জ, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুরসহ বিভিন্ন জায়গায় আওয়ামী লীগ নেতাদের বিএনপির কমিটিতে জায়গা দেওয়ায় ত্যাগী নেতাদের মধ্যে ক্ষোভ তীব্র হয়েছে। বিরোধিতা সত্ত্বেও সুবিধাবাদীরা বিভিন্নভাবে দলীয় কার্যক্রমে প্রভাব বিস্তার করছে।
ত্যাগী নেতাদের অভিযোগ, সুবিধাবাদীদের কারণে তারা অনেক সময় নয়াপল্টনে প্রবেশের সুযোগ পান না, যা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের জন্যও বিব্রতকর হয়ে উঠছে।
ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল বলেন, “যারা দুর্দিনে দালালি করেছে, নিষ্ক্রিয় থেকেছে, তারা এখন দলের নামে অপকর্ম করছে। ত্যাগী নেতাদের বঞ্চিত করা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়।”
স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী জানান, “দলের কাছে আন্দোলনের অবদানই মুখ্য। মনোনয়ন ও মূল্যায়নে সেটিই প্রতিফলিত হবে। তবে সুবিধাবাদী নেতা যে থাকবে, সেটাও বাস্তবতা।”
সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “দলের নাম ভাঙিয়ে অপকর্মকারীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অব্যাহত থাকবে। অভিযোগ পেলেই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে কয়েক হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে ধারাবাহিকভাবে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- তিন কোম্পানির কারখানা বন্ধ, ক্ষোভ বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের
- আইসিবি’র বিশেষ তহবিলের মেয়াদ ২০৩২ সাল পর্যন্ত বৃদ্ধি
- কেয়া কসমেটিক্সের ৮ হাজার কোটি টাকা উধাও, চার ব্যাংককে তলব
- সম্ভাবনার নতুন দিগন্তে শেয়ারবাজারের খান ব্রাদার্স
- ব্লুমবার্গের টেকসই তালিকায় বাংলাদেশের ১১ তালিকাভুক্ত কোম্পানি
- মূলধন ঘাটতিতে দুই ব্রোকারেজ হাউজ, ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ
- দুই খবরে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ শেয়ারের চমক
- ২৩ আগস্ট : শেয়ারবাজারের সেরা ৮ খবর
- সাকিবের মোনার্কসহ ৮ ব্রোকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ
- চলতি বছর শেয়ারবাজারে আসছে রাষ্ট্রায়াত্ব দুই প্রতিষ্ঠান
- হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে প্রতারণা, বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করল ডিএসই
- বিএসইসির নতুন মার্জিন বিধিমালার খসড়া অনুমোদন
- কোম্পানির অস্বাভাবিক শেয়ারদর: ডিএসইর সতর্কবার্তা
- শেয়ারবাজারের জন্য সুখবর: কমছে ট্রেজারি বিল ও বন্ডের সুদ
- বিমা আইন সংস্কার: বিনিয়োগ ও আস্থায় নতুন দিগন্ত