ঢাকা, সোমবার, ১৮ আগস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২

শেয়ারবাজার বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ নিস্পত্তির গতি ফিরেছে

ডুয়া নিউজ- শেয়ারবাজার
২০২৫ আগস্ট ১৭ ১৯:২৪:৩৩
শেয়ারবাজার বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ নিস্পত্তির গতি ফিরেছে

শেয়ারবাজাার বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ নিষ্পত্তির গুরুত্বপূর্ণ অনলাইন প্ল্যাটফর্ম কাস্টমার কমপ্লেইনস অ্যাড্রেস মডিউল (সিসিএএম) এই বছরের প্রথম সাড়ে সাত মাসে প্রায় ৪৩ শতাংশ অভিযোগের সমাধান করেছে। এটি বিনিয়োগকারী সুরক্ষা ও প্রতিকার নিশ্চিত করতে একটি কার্যকর মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্টের মাঝামাঝি পর্যন্ত বিনিয়োগকারীরা সিসিএএম-এর মাধ্যমে মোট ২২৭টি অভিযোগ দায়ের করেছেন। এর মধ্যে ৯৮টি অভিযোগের সমাধান হয়েছে এবং বাকি ১২৯টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

বিএসইসি ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে এই অনলাইন প্ল্যাটফর্মটি চালু করে। এর মাধ্যমে ক্যাশ ও স্টক ডিভিডেন্ড পরিশোধ না করা, বিক্রি হওয়া শেয়ারের অর্থ না পাওয়া এবং অননুমোদিত শেয়ার বিক্রির মতো বিভিন্ন অভিযোগের সমাধান করা হয়।

মাসভিত্তিক হিসাবে, জানুয়ারিতে ২৮টি অভিযোগ জমা পড়ে, যার মধ্যে ২৩টির (যা এ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ) সমাধান করা হয়েছে। অন্যদিকে, আগস্টে এ পর্যন্ত ১১টি অভিযোগ জমা পড়লেও মাত্র দুটির সমাধান হয়েছে। গত সাড়ে তিন মাসে মোট ১০৪টি অভিযোগের মধ্যে ৩২টির বা ৩০.৭৪ শতাংশের সমাধান হয়েছে।

সিসিএএম-এর দীর্ঘমেয়াদি কার্যকারিতা বেশ শক্তিশালী। বিএসইসি-এর তথ্য অনুযায়ী, এটি চালু হওয়ার পর থেকে মোট ২ হাজার ৯৯টি অভিযোগ পেয়েছে, যার মধ্যে ১ হাজার ৯৩৬টি বা ৯২.২ শতাংশ অভিযোগের সমাধান করা হয়েছে।

সিসিএএম চালু হওয়ার আগে বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ দায়ের করার জন্য বিএসইসি বা স্টক এক্সচেঞ্জে সরাসরি যেতে হতো, যা অনেক সময়সাপেক্ষ ছিল। তখন একটি অভিযোগের সমাধান পেতে কয়েক মাস বা এমনকি বছরও লেগে যেত এবং এর অবস্থা সম্পর্কে কোনো তথ্য জানা যেত না। এখন সিসিএএম-এর মাধ্যমে অভিযোগ সমাধানের গড় সময় কমে মাত্র ৩৩.৭ দিন হয়েছে। এটি বিদেশে বসবাসরত বাংলাদেশিদের জন্য বিশেষভাবে সহায়ক হয়েছে, কারণ এখন তারা ওয়েবসাইটেই অভিযোগ দায়ের করতে পারেন।

বিএসইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, প্ল্যাটফর্মটির স্বচ্ছতা এর সাফল্যের একটি বড় কারণ। তিনি জানান, এখন বিনিয়োগকারীরা তাদের অভিযোগের অবস্থা অনলাইনে দেখতে পারেন এবং সমাধান হলে ইমেল নোটিফিকেশন পান। যদি কোনো অভিযোগ দীর্ঘ সময় ধরে আটকে থাকে, তাহলে নিয়ন্ত্রক সংস্থাও সে বিষয়ে সতর্কবার্তা পায়।

বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বিএসইসি স্টক এক্সচেঞ্জ এবং স্টকব্রোকারসহ সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে সিসিএএম নেটওয়ার্কের আওতায় এনেছে। স্টক এক্সচেঞ্জগুলো তাদের ট্রেক হোল্ডারদের বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগগুলো পরিচালনা করে, আর সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল) ডিপোজিটরি পার্টিসিপেন্টদের (ডিপি) বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগগুলো নিয়ে কাজ করে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অভিযোগের সমাধান না হলে সিসিএএম থেকে বিএসইসি-কে সতর্ক করা হয়।

সিসিএএম-এর মাধ্যমে শেয়ার লেনদেনের বিলম্বিত নিষ্পত্তি, মার্জিন ঋণ, জোরপূর্বক শেয়ার বিক্রি এবং শেয়ার হস্তান্তরে ব্যর্থতার কারণে আর্থিক ক্ষতির মতো অভিযোগও জানানো যায়।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত