ঢাকা, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২

জিডিপির ৫% প্রতিরক্ষায় ব্যয়ের ঘোষণা ন্যাটোর

ডুয়া নিউজ- আন্তর্জাতিক
২০২৫ জুন ২৫ ২০:৫৬:৫০
জিডিপির ৫% প্রতিরক্ষায় ব্যয়ের ঘোষণা ন্যাটোর

বিশ্বজুড়ে নিরাপত্তা পরিস্থিতির দ্রুত পরিবর্তন, রাশিয়ার আগ্রাসী ভূমিকায় বাড়তি উদ্বেগ এবং ন্যাটো জোটের সদস্যদের মধ্যে দীর্ঘদিনের প্রতিরক্ষা ব্যয় নিয়ে মতানৈক্যের প্রেক্ষাপটে, অবশেষে প্রতিরক্ষা খাতে বড় ধরনের সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে সামরিক জোটটি।

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০৩৫ সালের মধ্যে প্রতিটি সদস্য রাষ্ট্র তাদের বার্ষিক জিডিপির অন্তত ৫ শতাংশ প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা খাতে ব্যয় করতে সম্মত হয়েছে। বুধবার (২৫ জুন) নেদারল্যান্ডসের হেগে অনুষ্ঠিত এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। নয় মাসের দীর্ঘ কূটনৈতিক প্রচেষ্টা শেষে সদ্য দায়িত্ব পাওয়া ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুটে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সফল হন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, বৈঠক শেষে এক যৌথ বিবৃতিতে জোট সদস্যরা জানিয়েছেন, নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা ব্যয়ে জিডিপির ৫ শতাংশ বরাদ্দের এই লক্ষ্য শুধু প্রতিশ্রুতি নয়— বরং এটি ভবিষ্যতের জন্য একটি কৌশলগত রূপরেখা।

বিশ্লেষকদের মতে, এ সিদ্ধান্ত শুধু ব্যয়ের পরিমাণ বাড়ানোর ঘোষণা নয়, বরং প্রতিরক্ষা সক্ষমতা, প্রযুক্তি উদ্ভাবন, রসদ সংরক্ষণ এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় ন্যাটো এক নতুন যুগে প্রবেশ করছে। বাস্তবায়ন হলে এ খাতে জোটের সম্মিলিত ব্যয় দ্বিগুণেরও বেশি হতে পারে।

সংবাদ সম্মেলনে ন্যাটো মহাসচিব রুটে বলেন, “আমার দৃষ্টিতে এটা পরিষ্কার— যুক্তরাষ্ট্র এখনও পঞ্চম অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ন্যাটো চুক্তির প্রতিরক্ষা নীতির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

এই বক্তব্য এমন সময় এলো, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি চুক্তির পঞ্চম অনুচ্ছেদ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন। ট্রাম্প বলেন, “চুক্তির ভাষা ব্যাখ্যাসাপেক্ষ, এবং তার অর্থ ভিন্নভাবে নেওয়া যেতে পারে।”

তবে রুটে আরও বলেন, ইউরোপীয় ও কানাডীয় সদস্যদের এখন নিজেদের নিরাপত্তার দায়িত্ব আরও বেশি করে নিতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছে, ইউরোপীয় দেশগুলো নিজ নিজ প্রতিরক্ষায় যথেষ্ট ব্যয় করছে না, বরং পুরো কাঠামোই মার্কিন অর্থনির্ভর।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পাঁচ শতাংশ ব্যয়ের এই লক্ষ্য শুধু যুক্তরাষ্ট্রের সেই দাবির প্রতিফলন নয়— বরং এটি রাশিয়ার সামরিক হুমকি, চীনের নিরাপত্তা প্রভাব, মধ্যপ্রাচ্য ও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চলমান উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে একটি বাস্তব ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত