ঢাকা, রবিবার, ৮ জুন ২০২৫, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

মণিপুরে অনির্দিষ্টকালের কারফিউ জারি, বন্ধ ইন্টারনেট

ডুয়া নিউজ- আন্তর্জাতিক
২০২৫ জুন ০৮ ১৪:৫৬:৩০
মণিপুরে অনির্দিষ্টকালের কারফিউ জারি, বন্ধ ইন্টারনেট

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুর আবারও সহিংস অস্থিরতায় বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছে। রাজ্যের কুখ্যাত সশস্ত্র চরমপন্থি সংগঠন ‘আরমবাই তেঙ্গোল’-এর কথিত ‘আর্মি চিফ’ কানন মেইতেই গ্রেফতার হওয়ার পর পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেয়।

শনিবার রাতে ইম্ফাল ওয়েস্ট এলাকায় জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) ও রাজ্য পুলিশের যৌথ অভিযানে গ্রেফতার হন কানন মেইতেই। এর পরপরই শত শত বিক্ষুব্ধ মানুষ রাস্তায় নেমে পড়ে, পুলিশের গাড়িবহর থামিয়ে গ্রেফতার নেতাকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গুলি চালায়।

এ অবস্থায় মণিপুর সরকার রাজ্যের পাঁচটি জেলা—বিষ্ণুপুর, ইম্ফাল ইস্ট, ইম্ফাল ওয়েস্ট, থৌবল ও কাকচিংয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করেছে। পাশাপাশি সাতটি জেলায় মোবাইল ইন্টারনেট ও ডেটা সেবা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।

এর আগে জিরিবাম জেলার বরাক নদী থেকে আট মাস বয়সী এক শিশুসহ ছয়জনের মরদেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে রাজ্যজুড়ে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। নিহতদের কুকি বিদ্রোহীদের দ্বারা অপহৃত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এই ঘটনায় উত্তাল হয়ে ওঠে ইম্ফাল। বিক্ষোভকারীরা মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের বাসভবনে প্রবেশের চেষ্টাও করে। টার্গেটে ছিলেন রাজ্য সরকারের একাধিক মন্ত্রী ও বিজেপি বিধায়ক। বিধায়ক আরকে ইমো সিংহের বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ হয়। একই ধরনের হামলার শিকার হন মন্ত্রী ইয় কেমচন্দ ও এল সুসিন্দ্রো সিংহ। স্বাস্থ্যমন্ত্রী সপাম রঞ্জনের বাড়ি ঘিরে ধরে বিক্ষোভকারীরা। পরে তিনি ঘোষণা দেন সরকার কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে তিনি পদত্যাগ করবেন।

এ অবস্থায় রাজ্যের নাগরিক সংগঠন ‘কোকোমি’-এর মুখপাত্র খুরাইজাম অথোবা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “সরকার যদি জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী পদক্ষেপ না নেয় তার পরিণতি ভোগ করতে হবে। আমরা ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছি সরকার যেন সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালায়।”

প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, চার বা ততোধিক মানুষের জমায়েত নিষিদ্ধ এবং যে কোনো ধরনের অস্ত্র, লাঠি কিংবা পাথর বহনেও নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের মে মাসে কুকি-জো এবং মেইতেই সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ২৫০ জন নিহত হয়েছেন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হলেও সংঘাতের আগুন এখনও নিভেনি। বরং সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে বিভাজন ও অবিশ্বাস আরও তীব্র হয়েছে।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত