ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৭ আগস্ট ২০২৫, ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২
দ. কোরিয়ার বিনিয়োগের নতুন ঠিকানা বাংলাদেশ
.jpg)
শ্রমনির্ভর অর্থনীতির খোলস ছেড়ে বাংলাদেশ এখন দক্ষিণ কোরিয়ার মতো উন্নত দেশের কৌশলগত বিনিয়োগের কেন্দ্রে পরিণত হচ্ছে। রাজনৈতিক সংস্কার, প্রযুক্তি খাতে বিপুল সম্ভাবনা এবং তরুণ জনশক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশটি পোশাক শিল্পের বাইরেও সেমিকন্ডাক্টর, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও ডিজিটাল অর্থনীতির মতো ভবিষ্যৎমুখী খাতে কোরিয়ান বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে।
বর্তমানে বাংলাদেশে দক্ষিণ কোরিয়ার মোট বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ১.৫৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে, যা দেশটিকে বাংলাদেশের তৃতীয় শীর্ষ বিনিয়োগকারী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
২০২৪ সালে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে। সরকারের সংস্কারপন্থী মনোভাব এবং বিনিয়োগবান্ধব নীতি কোরিয়ান বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন করে আস্থা তৈরি করেছে। এর বড় প্রমাণ হলো ২০২৫ সালের সফল ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট’, যেখানে প্রায় আড়াই হাজার দেশি-বিদেশি প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।
কোরিয়ান বিনিয়োগ এখন আর শুধু তৈরি পোশাক খাতে সীমাবদ্ধ নেই। স্যামসাং, হুন্দাই ও এলজি’র মতো বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ডগুলো বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম সম্প্রসারিত করছে। স্যামসাং দেশের ফেয়ার গ্রুপের সঙ্গে যৌথভাবে মোবাইল ফোন, টেলিভিশন ও এসি উৎপাদন করছে, অন্যদিকে হুন্দাই ডিএক্স গ্রুপের সঙ্গে হাত মিলিয়ে দেশের বাজারে ইলেকট্রনিক পণ্য আনার ঘোষণা দিয়েছে। এছাড়া এলজি’র মতো প্রতিষ্ঠানও চট্টগ্রামের কোরিয়ান এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনে (কেইপিজেড) নতুন বিনিয়োগের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে।
বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়া সরকার যৌথভাবে দেশের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমকে শক্তিশালী করতে কাজ করছে। বাংলাদেশের আইসিটি বিভাগ ও ‘কোরিয়া প্রডাক্টিভিটি সেন্টার’-এর যৌথ মেন্টরিং উদ্যোগে ‘এমএফএম কোরিয়া’ এবং ‘চারদিকে’র মতো একাধিক সফল স্টার্টআপ গড়ে উঠেছে। পাশাপাশি, কোরিয়ান ‘হাইসুং টিএনএস’ এবং ‘উরি ব্যাংক’ দেশের ব্যাংকিং অবকাঠামো ও ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থাকে আধুনিক করতে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করছে।
দুই দেশের অংশীদারত্বের সবচেয়ে বড় উদাহরণ হতে চলেছে চট্টগ্রামের মীরসরাই জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এনএসইসি)। কোরিয়ার সহায়তায় এই অঞ্চলটিকে একটি পূর্ণাঙ্গ স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তোলার কাজ চলছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৮ সালের মধ্যে এটিকে দক্ষিণ কোরিয়ার উলসান বা চীনের শেনজেন শহরের আদলে একটি শিল্প ও প্রযুক্তি হাবে রূপান্তর করা হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশ এখন দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য শুধু একটি বিনিয়োগের গন্তব্য নয়, বরং এশিয়ার উদীয়মান অর্থনীতির এক কৌশলগত অংশীদার। জনসংখ্যা, ভৌগোলিক অবস্থান এবং ডিজিটাল রূপান্তরের সম্মিলিত শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার এই অর্থনৈতিক সহযাত্রা আগামী দিনের বৈশ্বিক অর্থনীতিতে এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চলেছে।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- ভারতে ঢাবির দুই ছাত্রীর ছবি নিয়ে তোলপাড়, ক্ষোভ
- শেয়ারবাজারে আসছে রাষ্ট্র ও বহুজাতিক ১৫ কোম্পানি
- ১১'শ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দিবে ঘুড্ডি ফাউন্ডেশন
- স্কয়ার ফার্মার বাজার মূলধনে নতুন মাইলফলক
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ৭ প্রতিষ্ঠান
- অস্বাভাবিক শেয়ার দাম: ডিএসইর সতর্কবার্তা জারি
- ‘এ’ ক্যাটাগরিতে ফিরেছে আর্থিক খাতের কোম্পানি
- নতুন সিনেট সদস্য হলেন ঢাবির ৫ অধ্যাপক
- ক্যাশ ডিভিডেন্ড পেল দুই কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা
- সর্বোচ্চ উচ্চতায় ১৭ কোম্পানির শেয়ার
- চলতি সপ্তাহে ঘোষণা আসছে ১২ প্রতিষ্ঠানের ডিভিডেন্ড-ইপিএস
- গেস্ট হাউজ থেকে সাবেক সেনাপ্রধান হারুনের মরদেহ উদ্ধার
- ‘মুজিব’স ব্লান্ডার্স’: নেপথ্যের ষড়যন্ত্র উন্মোচন
- ৩ আগস্টের আগাম বার্তায় উত্তাপ ছড়াচ্ছে এনসিপি
- ‘৪ আগস্ট রাতেই হাসিনা পতনের পরিকল্পনায় শিবির নেতা সিবগাতুল্লাহ’