ঢাকা, বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ কার্তিক ১৪৩২

ঢাবিতে পার্বত্য চট্টগ্রামের সুরক্ষার দাবিতে  ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ

২০২৫ অক্টোবর ২৯ ১৭:১৭:১৯

ঢাবিতে পার্বত্য চট্টগ্রামের সুরক্ষার দাবিতে  ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক :২৮ অক্টোবর মঙ্গলাবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদ সমিতির স্টুডেন্টস ইউনিট মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত করে। খাগড়াছড়ি জেলার লক্ষ্মীছড়ির বর্মাছড়ি এলাকায় সেনা ক্যাম্প স্থাপন রোধ ও উপজাতীয় উগ্রপন্থীদের সরকারি খাস জমি দখলের বিরুদ্ধে এ কর্মসূচি করা হয়। মানববন্ধনে শতাধিক ছাত্র-জনতা অংশগ্রহণ করে এবং পরে শাহবাগ পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।

সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন লে. কর্নেল (অব.) ফরিদুল আকবর এবং সঞ্চালনা করেন খাগড়াছড়ি আন্দোলনের নেতা জালাল আহমদ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি আবদুস সালাম মামুন। বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোঃ আরিফ বিল্লাহ, লে. কর্নেল ফেরদৌস আজিজ (অব.), লে. কর্নেল (অব.) হাসিনুর রহমান, মেজর (অব.) মিজানুর রহমান, মেজর (অব.) রেজাউল হান্নান শাহীন, চাকরি সংস্কার আন্দোলনের আহ্বায়ক ও ছাত্র নেতা জালাল আহমদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল মাহমুদ, মঞ্চ চব্বিশের আহ্বায়ক ডিউক হুদা, মুভমেন্ট ফর প্যালেস্টাইন অব বাংলাদেশ-এর আহ্বায়ক হারুনুর রশিদ খান, গণ অধিকার পরিষদের নেতা ড. মো. ইমরান হোসেন, ন্যাশনাল লেবার পার্টির মুখপাত্র শরীফুল ইসলামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

বক্তারা তাদের বক্তব্যে দাবি করেন, বর্মাছড়ি এলাকা ইউপিডিএফ বা অন্যান্য সশস্ত্র উগ্রপন্থীর গঠিত ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে; এলাকায় অস্ত্রসংগ্রহ, প্রশিক্ষণ এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে। তাই সেখানে সেনাবাহিনীর ক্যাম্প স্থাপন করে নিরাপত্তা জোরদার করা অপরিহার্য। তারা বলেন, “সেনা ক্যাম্প স্থাপিত হলে সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধ হবে এবং সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে বৌদ্ধ ভিক্ষুরা নিরাপদে বিহারে যাতায়াত করতে পারবেন।”

আলোচনায় আরও উল্লেখ করা হয় যে, ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীরা সেনা স্থাপনা ঠেকাতে নিরীহ পাহাড়ি জনগোষ্ঠীকে প্ররোচিত করছে এবং সাম্প্রতিক সময়ে ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসিকে স্মারকলিপি দেওয়ার মাধ্যমে সেনাবিরোধী প্ররোচনা চালাচ্ছে। বক্তারা সেই স্মারকলিপির আভাসকে অযৌক্তিক ও বাস্তবতা বর্জিত বলে খণ্ডন করেন এবং দাবি করেন যে, সশস্ত্র সন্ত্রাস প্রতিহত করা হলে স্থানীয় জনগণের নিরাপত্তা ও চলাচল নির্বিঘ্ন হবে।

সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক মোস্তফা আল ইহযায ব্রিটিশ শাসনকাল থেকে পার্বত্য অঞ্চলের ভূমি-সংক্রান্ত ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, ১৮৮৪ ও ১৮৯২ সালের পাশাপাশি প্রকাশিত নীতিমালা ও বন্দোবস্তগুলো পার্বত্য জনসংখ্যার বিরুদ্ধে অনিয়ম সৃষ্টি করেছে। তিনি দাবি করেন, দীর্ঘকাল ধরে উপজাতিদের নামে করা অবৈধ বন্দোবস্তসমূহ বাতিল করে জমি পুনরুদ্ধার করতে হবে এবং ইতিহাসের এই অনিয়মের পুনরায় নিরীক্ষার দাবি জানান।

সমাবেশে মোস্তফা আল ইহযায আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে সীমান্ত সড়ক নির্মাণ, কাঁটাতারের বেড়া ও ড্রোন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টা নজরদারি চালিয়ে সন্ত্রাসীদের দমন করা উচিত; পাশাপাশি প্রতিটি মৌজায় ন্যূনতম একটি করে সেনা ক্যাম্প স্থাপন ও বিশেষ মাউন্টেইন ডিভিজন গঠন করার প্রস্তাব রাখা হয়। তিনি আগামী সাত দিনের মধ্যে বারমাছড়ি এলাকায় সন্ত্রাস দমন এবং শুকনাছড়ি গ্রামে সেনা ক্যাম্প স্থাপনের কাজ শুরু করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, না হলে আরও তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

মানববন্ধন ও আলোচনা শেষে অংশগ্রহণকারীরা রাজু ভাস্কর্য থেকে শাহবাগ পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল পরিচালনা করে। মিছিলে কয়েক শতাধিক ছাত্র-জনতা অংশ নেয় এবং কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়।

ডুয়া/নয়ন

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত

বিশ্ববিদ্যালয় এর অন্যান্য সংবাদ