ঢাকা, শনিবার, ৯ আগস্ট ২০২৫, ২৫ শ্রাবণ ১৪৩২

অর্ধযুগ পর ড্যাবের নির্বাচন, দুই প্যানেলের ভোটযুদ্ধ

ডুয়া নিউজ- জাতীয়
২০২৫ আগস্ট ০৯ ১৫:১৫:৩৬
অর্ধযুগ পর ড্যাবের নির্বাচন, দুই প্যানেলের ভোটযুদ্ধ

জাতীয়তাবাদী চিকিৎসক সংগঠন ‘ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’ (ড্যাব) কেন্দ্রীয় কাউন্সিল দীর্ঘ পাঁচ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আগামী শনিবার (৯ আগস্ট) রাজধানীর কাকরাইলস্থ উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে চিকিৎসকরা তাদের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন। ভোটগ্রহণ দুপুর ১টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিজন কান্তি সরকার জানান, কাউন্সিলের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে এবং নির্ধারিত সময়ে ভোট গ্রহণ শুরু হবে। এ নির্বাচনে পাঁচটি পদে—সভাপতি, সিনিয়র সহসভাপতি, মহাসচিব, কোষাধ্যক্ষ এবং সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিভ—নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত আছেন ৩ হাজার ১৩১ জন চিকিৎসক।

এবারের নির্বাচনে দুই প্রধান প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। হারুন-শাকিল প্যানেলের সভাপতি পদে অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ, মহাসচিব পদে ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, সিনিয়র সহসভাপতি পদে ডা. আবুল কেনান, কোষাধ্যক্ষ পদে ডা. মো. মেহেদী হাসান এবং সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব পদে ডা. এ কে এম খালেকুজ্জামান দিপু প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

অপর প্যানেল আজিজ-শাকুর প্যানেল, যেখানে সভাপতি পদে অধ্যাপক ডা. এ কে এম আজিজুল হক, মহাসচিব পদে ডা. আব্দুস শাকুর খান, সিনিয়র সহসভাপতি পদে ডা. সাইফ উদ্দিন নিসার আহমেদ তুষার, কোষাধ্যক্ষ পদে ডা. তৌহিদ উল ইসলাম এবং সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব পদে ডা. আবু মো. আহসান ফিরোজ লড়াই করছেন।

এছাড়া ডা. ওবায়দুল কবিরও সভাপতি পদে একক প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। উল্লেখ্য, অধ্যাপক হারুন আল রশিদ ২০১৯ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত ড্যাবের নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং ডা. আজিজুল হক ২০০৫ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ড্যাবের সভাপতি ছিলেন।

ভোট নিয়ে অধ্যাপক হারুন আল রশিদ বলেন, “আমরা ভালো সাড়া পাচ্ছি। বিগত সময়ে আমরা মাঠে সক্রিয় ছিলাম, তাই আমাদের বিজয় নিশ্চিত।”

অন্যদিকে, অধ্যাপক এ কে এম আজিজুল হক বলেন, “আমি আশাবাদী, ইনশাআল্লাহ আমরা ভালো ফলাফল করব। মাঠের পরিবেশ ইতিবাচক।”

সর্বশেষ ড্যাবের নির্বাচন হয়েছিল ২০১৯ সালের ২৪ মে, যেখানে হারুন আল রশিদ সভাপতি এবং আব্দুস সালাম মহাসচিব নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০২৪ সালের ২৫ মে ড্যাবের কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ায় গত ২৪ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত করা হয়।

নির্বাচনের প্রাক্কালে হারুন-শাকিল প্যানেল জাতীয় প্রেস ক্লাবে ০৮ আগস্ট এক সংবাদ সম্মেলনে তাদের পরিচিতি অনুষ্ঠান এবং তিন স্তরের নির্বাচনী ইশতেহার ও কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করে। মহাসচিব প্রার্থী সদ্য সাবেক কোষাধ্যক্ষ ডা. মো. জহিরুল ইসলাম শাকিল বলেন, “আমাদের প্যানেলের সদস্যরা গত ১৭ বছর ধরে নানা প্রতিকূলতার মধ্যে রাজপথে ছিলেন এবং বিএনপির সহযোগী সংগঠন হিসেবে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। করোনাকালীন মহামারী, ডেঙ্গু প্রতিরোধ, প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ বিভিন্ন সময় দেশের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি।”

ডা. শাকিল আরও বলেন, “সরকারবিরোধী আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসায় আমরা জীবন বাজি রেখে সেবা দিয়েছি। আহত নেতাকর্মীদের চিকিৎসাসেবায় আমরা সর্বদা সচেষ্ট ছিলাম এবং নিহত পরিবারকে আর্থিক সাহায্য করেছি।”

সংবাদ সম্মেলনে ড্যাবের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি ডা. এম এ সেলিম, সহসভাপতি ডা. মোসাদ্দেক হোসেন বিশ্বাস ডাম্বেল, ডা. মো. সিরাজুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর উত্তর ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. সাঈদ মেহবুব উল কাদির, ডা. আদনান মাসুদ এবং ডা. রাকিবুল ইসলাম আকাশ উপস্থিত ছিলেন।

ডা. হারুন আল রশিদ সাংবাদিকদের জানান, “আমরা কাউকে সদস্য পদ থেকে বাদ দিইনি। যাদের সদস্যপদ বাতিল হয়েছে, তারা ফ্যাসিবাদের সহযোগী। নির্বাচন কমিশন এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে।” তিনি মৃত্যুবরণকারী সদস্যদের ভোটার তালিকায় রাখার বিষয়েও জানান, “পৃথিবীর কোনো ভোটার তালিকা শতভাগ নিখুঁত নয়।”

ড্যাবের নেতা তারেক রহমানের নির্দেশনার আলোকে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে এবং যারা বিগত আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন, তাদের নেতৃত্বেই ড্যাব এগিয়ে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত