ঢাকা, শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণার দাবি জানাল সিপিডি

নির্বাচনের নির্দিষ্ট সময়সূচি ঘোষণার সময় এখনই—এমন মত জানিয়েছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। তাদের মতে, নির্বাচিত সরকার এলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে, এমন ভাবাও ঠিক নয়।
মঙ্গলবার (২৭ মে) রাজধানীর ধানমন্ডিতে নিজস্ব কার্যালয়ে এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন সংস্থাটির বিশেষ ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান ও নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।
সিপিডির মতে, দেশের রাজস্ব আয়ে ভয়াবহ দুষ্টচক্র তৈরি হয়েছে। চলতি অর্থবছর (২০২৪–২৫) শেষে ঘাটতি দাঁড়াতে পারে ১ লাখ ৫ হাজার কোটি টাকা। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে তাঁরা চিহ্নিত করেছেন বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার।
নির্বাচন ও বিনিয়োগ নিয়ে উদ্বেগ
ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, "নির্বাচন নিয়ে অনেক ধোঁয়াশা তৈরি হচ্ছে। সরকার কখনো বলছে ডিসেম্বর, কখনো ২০২৬ সালের জুনের কথা। এখানে নির্দিষ্ট দিনক্ষণ দেওয়া দরকার। তবে নির্বাচিত সরকার এলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে এমন নয়।"
তিনি আরও বলেন, “দেশে বিনিয়োগে চাঞ্চল্য ফেরাতে না পারায় অর্থনীতিতে স্থবিরতা চলছে। শুধু সংস্কার কার্যক্রম নয়, জ্বালানি সংকট, দুর্বল প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা এবং স্বচ্ছতার অভাব বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
মূল্যস্ফীতি ও কর্মসংস্থানের চ্যালেঞ্জ
উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে উঠেছে বলেও মন্তব্য করেন ড. মোস্তাফিজ। তাঁর মতে, এই চাপ থেকে বেরিয়ে আসতে হলে শোভন কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে হবে, যা বিনিয়োগ বাড়ানো ছাড়া সম্ভব নয়।
সংস্কারে বাধা ও রাজস্ব ঘাটতির শঙ্কা
ড. ফাহমিদা খাতুন জানান, অন্তর্বর্তী সরকার কিছু সংস্কার প্রক্রিয়া হাতে নিলেও তা সমন্বিতভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এমনকি ভিতর থেকেই প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে এনবিআরকে দুটি বিভাগে ভাগ করার উদ্যোগের কথাও তুলে ধরেন তিনি, যা প্রশাসনের অভ্যন্তরেই প্রতিরোধের মুখে পড়েছে।
রাজস্ব আদায়ের তথ্য দিয়ে তিনি বলেন, "মার্চ পর্যন্ত এনবিআরের রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ২.৮ শতাংশ, যেখানে গত বছর একই সময়ে তা ছিল ১০.৭ শতাংশ। বর্তমান প্রবণতা অব্যাহত থাকলে চলতি অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন অসম্ভব।"
সুশাসনের ঘাটতি ও সুস্পষ্ট রূপরেখার দাবি
সিপিডির মতে, ব্যাংক খাত ও পুঁজিবাজারে কাঠামোগত দুর্বলতা এবং সুশাসনের ঘাটতি এখনো বড় বাধা। বিনিয়োগকারীদের আস্থার সংকট কাটেনি। এসব সমস্যার সমাধানে সরকারের উচিত খণ্ড খণ্ড পদক্ষেপ না নিয়ে সমন্বিত, সাহসী সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দেওয়া।
সংস্থাটি মনে করে, আগামী অর্থবছরে তিনটি খাতে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন: ১. প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, ২. সুশাসনের কাঠামো উন্নয়ন ও ৩. নীতিমালার বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।
সিপিডির মতে, এসব উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলেই অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আসবে, বাড়বে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- বাতিল হচ্ছে ২০ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স, তালিকায় শেয়ারবাজারের ১৪টি
- সরকারি কোম্পানি শেয়ারবাজারে আনার উদ্যোগ, তালিকায় ২১ প্রতিষ্ঠান
- ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর ১.৪ বিলিয়ন ডলারের শেয়ার বিক্রির ঘোষণা
- শেয়ারবাজারের ৬৬ কোম্পানির প্রতি বিএসইসি’র কঠোর বার্তা
- গভীর রাতে ঢাবি শিবির সভাপতির ফেসবুক পোস্টে তোলপাড়
- দশ হাজার কোটি ঋণের বোঝায় আইসিবি, প্রস্তাব বিশেষ তহবিলের
- শেয়ারবাজারের ৯ ব্যাংক এমডিবিহীন, নেতৃত্ব সংকট তীব্র
- শেয়ারবাজারের ১৮ ব্যাংককে ডিভিডেন্ড না দেওয়ার নির্দেশ
- ড. ইউনূসকে রাষ্ট্রপতি, তারেক রহমানকে প্রধানমন্ত্রী করার প্রস্তাব
- ঢাবির পীরগাছা উপজেলা সংগঠনের নেতৃত্বে রবিউল ও সৈকত
- বনানীতে ঢাবির সাবেক ছাত্রীর ম’রদেহ উদ্ধার
- নানামুখী চেষ্টার পরও ভেঙে পড়ছে দেশের শেয়ারবাজার
- জেড ক্যাটাগরি ও ন্যুনতম শেয়ারধারণে ব্যর্থ কোম্পানিতে বসছে স্বতন্ত্র পরিচালক
- মন্দার বাজারে আলো ছড়িয়েছে ২০ শেয়ার
- ঈদের ছুটি নিয়ে নতুন প্রস্তাবনা