ঢাকা, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

দশ হাজার কোটি ঋণের বোঝায় আইসিবি, প্রস্তাব বিশেষ তহবিলের

২০২৫ মে ২৩ ১২:৩৪:২২
দশ হাজার কোটি ঋণের বোঝায় আইসিবি, প্রস্তাব বিশেষ তহবিলের

ডুয়া নিউজ: ঋণের ভারে জর্জরিত হয়ে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)। প্রতিমাসে প্রায় ৭০ কোটি টাকার সুদ পরিশোধ করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এই ঋণের বোঝা কমাতে এবং আবারও শেয়ারবাজারে সক্রিয় বিনিয়োগের সক্ষমতা ফিরে পেতে সরকারের কাছে বিশেষ তহবিল গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে আইসিবি।

গত ২২ মে (বৃহস্পতিবার) প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরীর সঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে আইসিবির একটি প্রতিনিধিদল এই প্রস্তাব তুলে ধরে। বৈঠকে আইসিবির ঋণের বর্তমান চিত্র, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং শেয়ারবাজারে বাজার স্থিতিশীল রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হয়।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, বৈঠকে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী শেয়ারবাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত এবং বিষয়টি গুরুত্বসহকারে পর্যালোচনা করছেন। তিনি বিনিয়োগকারীসহ অন্যান্য অংশীজনদের সঙ্গে আরও আলোচনার পরিকল্পনা করেছেন।

আইসিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিগত সরকারের সময় বিএসইসি ও সরকারের নির্দেশনায় আইসিবি বিভিন্ন উৎস থেকে উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে বাধ্য হয়েছিল। বাজারে পতনের ফলে সেই বিনিয়োগ থেকে এখন পর্যন্ত সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার বেশি লোকসান হয়েছে। এই ক্ষতির বিপরীতে প্রভিশন করতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটিকে।

আইসিবির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে আইসিবির প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার ঋণ রয়েছে, যার গড় সুদের হার ১২ শতাংশ। আয় কমে যাওয়ায় এই ঋণের সুদপরিশোধও কঠিন হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে ২ হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করা হলেও মাসিক ৭০ কোটি টাকার সুদ বহন করা সম্ভব নয়।

এই পরিস্থিতিতে সরকারকে একটি স্বতন্ত্র ও নিরপেক্ষ পরিচালনা কমিটি গঠনের মাধ্যমে বিশেষ বিনিয়োগ তহবিল গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে আইসিবি। প্রস্তাব অনুযায়ী, তহবিলটি পরিচালনা করবে সরকারি মনোনীত একটি নিরপেক্ষ বোর্ড এবং বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী তারা সিদ্ধান্ত নেবে তহবিল ব্যবহারের বিষয়ে—যখন প্রয়োজন, তখন বাজারে হস্তক্ষেপ করবে; আর মন্দাবস্থার পর বিক্রয় বা লাভ তুলে নেবে।

আইসিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু আহমেদ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “আমরা আশা করছি, আগামী বাজেটে কিছু প্রণোদনা আসবে, বিশেষ করে তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির করহারে ১০ শতাংশ পার্থক্য রাখার প্রস্তাব দিয়েছি। এছাড়া চলতি অর্থবছরের মুনাফার ২০ শতাংশ প্রভিশনের জন্য রেখে বাকি ৮০ শতাংশ মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিটহোল্ডারদের মাঝে ডিভিডেন্ড বিতরণের প্রস্তাব দিয়েছি।”

তিনি আরও বলেন, “আইসিবির আর্থিক সংকট অতীত সরকারের সময়ের ভুল সিদ্ধান্ত ও নিয়ন্ত্রণহীন ঋণের ফল। বর্তমান সরকার ও আমাদের নেতৃত্বে এখনও কোনো অনিয়ম হয়নি। আর্থিক সংকট কাটিয়ে উঠতে ইতোমধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা অর্থ মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে।”

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে