ঢাকা, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫ পৌষ ১৪৩২

জোটের সমঝোতায় যেসব আসন ছাড়ল জামায়াত

২০২৫ ডিসেম্বর ২৯ ২২:৩৩:১৭

জোটের সমঝোতায় যেসব আসন ছাড়ল জামায়াত

নিজস্ব প্রতিবেদক: আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জামায়াতে ইসলামি এবং এর মিত্র দলসমূহের মধ্যে ব্যাপক আসন সমঝোতা হয়েছে। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), কর্নেল অলির এলডিপি ও এবি পার্টির সঙ্গে এই সমঝোতার ফলে বিএনপির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াতকে শতাধিক আসন ছেড়ে দিতে হচ্ছে।

রোববার (২৮ ডিসেম্বর) এনসিপি, এলডিপি ও এবি পার্টি আনুষ্ঠানিকভাবে এই সমঝোতায় যুক্ত হওয়ার পর জামায়াতের বিভিন্ন প্রার্থী দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্বেচ্ছায় প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে শুরু করেন। অনেকেই এই বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেছেন।

প্রথম ধাপ হিসেবে ঢাকার ১১ নম্বর আসনে জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে শুভকামনা জানিয়ে আতিকুর রহমান নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন। একই দিনে কুমিল্লা-৪ আসনের এনসিপি দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর পক্ষে জামায়াতের প্রার্থী সাইফুল ইসলাম শহীদ প্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়ান। তিনি বলেন, “সংগঠনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালাম। জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হয়তো করতে পারব না, তবে দেবিদ্বারের মানুষের পাশে থাকতে পারলে নিজেকে কৃতজ্ঞ মনে করব।”

এছাড়া, ফেনী-২ আসনে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান মঞ্জুকে সমর্থন দিয়ে জামায়াতের নেতা লিয়াকত আলী ভূঁইয়া প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন। রংপুর-৪ আসনে এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেনকে সমর্থন জানিয়ে জামায়াতের এটিএম আজম খানও নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন। ঢাকা-১৩ আসনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হককে সমর্থন জানিয়ে জামায়াতের মো. মোবারক হোসাইন প্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়ান।

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি মো. আবদুল জব্বার। তিনি সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে এ তথ্য জানান।

জামায়াতের এমন উদারতার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বগুড়া-৩ আসনের মনোনীত প্রার্থী নূর মোহাম্মদ আবু তাহের বলেন, “আসন ছেড়ে দিতে হচ্ছে, যা চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর অনেকের দীর্ঘশ্বাস বাড়াবে। তবে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে এটিকে হাসিমুখে মেনে নেওয়া উচিত।”

নূর মোহাম্মদ আবু তাহের আরও জানান, “আসন বণ্টন মোটামুটি চূড়ান্ত হয়ে গেছে। বর্তমানে মাত্র ১০-১২টি আসনে শেষ মুহূর্তের সমন্বয় চলছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের হাহুতাশ বা উত্তেজনাপূর্ণ বক্তব্য কোনো প্রভাব ফেলছে না। প্রত্যেক দল বাস্তবতার আলোকে দরকষাকষি করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে।”

তিনি বলেন, “এই সমঝোতা দীর্ঘমেয়াদি এবং এর প্রভাব আগামী সংসদ নির্বাচনসহ সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও দেখা যাবে। যারা বর্তমানে ত্যাগ স্বীকার করছেন, তাদের মাঠে সক্রিয় থাকার আহ্বান জানাই। জোট সম্প্রসারণ বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা, এবং ফলাফল সময়ই প্রকাশ করবে।”

নূর মোহাম্মদ আবু তাহের রোববার ১০ দলীয় নির্বাচনি মোর্চাকে অভিনন্দন জানিয়ে সবাইকে একসাথে দেশ গড়ার আহ্বান জানান।

ইএইচপি

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত