ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২

৬০% ব্রোকার এখনো জমা দেয়নি প্রভিশনিং কর্মপরিকল্পনা

২০২৫ ডিসেম্বর ২৬ ২১:১২:৩৪

৬০% ব্রোকার এখনো জমা দেয়নি প্রভিশনিং কর্মপরিকল্পনা

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারের দীর্ঘদিনের বিষফোড়া 'নেগেটিভ ইক্যুইটি'র বোঝা কমাতে উদ্যোগ নেওয়া হলেও অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান এখনো নিষ্ক্রিয়। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সূত্রে জানা গেছে, নেগেটিভ ইক্যুইটি থাকা ১৪৬টি ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান এখন পর্যন্ত তাদের সমন্বয় ও প্রভিশনিংয়ের কর্মপরিকল্পনা জমা দেয়নি।

তথ্যমতে, ৮৬টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাদের বোর্ড-অনুমোদিত পরিকল্পনা জমা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে কমিশন সাফ জানিয়ে দিয়েছে, আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে কর্মপরিকল্পনা জমা দিতে না পারলে ওইসব প্রতিষ্ঠানকে নেগেটিভ ইক্যুইটির বিপরীতে শতভাগ প্রভিশন বা সঞ্চিতি রাখতে হবে। তবে যেসব প্রতিষ্ঠান বাস্তবায়নযোগ্য পরিকল্পনা জমা দিচ্ছে, তাদের পরিস্থিতি বিবেচনায় ২০৩২ সাল পর্যন্ত সময় দিচ্ছে বিএসইসি। এখন পর্যন্ত ৩৯টি ব্রোকারেজ হাউস এবং ২১টি মার্চেন্ট ব্যাংক এই বর্ধিত সময়সীমার সুবিধা পেয়েছে।

বিএসইসি'র নথিপত্র অনুযায়ী, ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এখাতে মোট নেগেটিভ ইক্যুইটির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৮ হাজার ৫ কোটি টাকা মূল মার্জিন ঋণ এবং ২ হাজার ৪২০ কোটি টাকা অর্জিত সুদ। মূলত ২০১০ সালের শেয়ারবাজার ধসের পর 'ফোর্সড সেল' বা শেয়ার বিক্রিতে অলিখিত নিষেধাজ্ঞার কারণে এই সমস্যার সৃষ্টি হয়, যা বছরের পর বছর ধরে কাঠামোগত সমস্যায় পরিণত হয়েছে।

নেগেটিভ ইক্যুইটির বড় অংশই ব্রোকারদের দখলে: পরিসংখ্যান বলছে, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ১০২টি ব্রোকারেজ হাউসের ঘরেই রয়েছে ৫ হাজার ৯৪২ কোটি টাকার নেগেটিভ ইক্যুইটি। এর মধ্যে পিএফআই সিকিউরিটিজের ৬৭৯ কোটি ৬৬ লাখ টাকা এবং ফারইস্ট স্টক অ্যান্ড বন্ডসের ৬৬৯ কোটি ২৩ লাখ টাকা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। এছাড়া আইসিবি সিকিউরিটিজ, আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট এবং আভিভা ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্টের মতো সাতটি প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেকের নেগেটিভ ইক্যুইটি ৪০০ কোটি টাকার উপরে।

বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় বিএসইসি বারবার সময় দিলেও কোম্পানিগুলোর প্রভিশন ঘাটতি এখনো ৫ হাজার ৫৮ কোটি টাকা। যদি আগামী নির্বাচনের পর শেয়ারবাজার ইতিবাচক ধারায় ফেরে, তবেই এই বিশাল আর্থিক ঘাটতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

এএসএম/

শেয়ারবাজারের বিশ্লেষণ ও ইনসাইড স্টোরি পেতে আমাদের পেজ ফলো করুন।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত