ঢাকা, রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

ভারতের সহায়তায় বুদ্ধিজীবীদের হ’ত্যা করা হয়েছে: গোলাম পরওয়ার

২০২৫ ডিসেম্বর ১৪ ২১:৪৩:৪৯

ভারতের সহায়তায় বুদ্ধিজীবীদের হ’ত্যা করা হয়েছে: গোলাম পরওয়ার

নিজস্ব প্রতিবেদক: জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার মন্তব্য করেছেন, ভারতের পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী এবং জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করে দেশকে মেধাশূন্য করার চেষ্টা চালানো হয়েছে।

রোববার বিকালে রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর শাখার আয়োজিত শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন এবং সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান।

সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা-১২ আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী সাইফুল আলম খান মিলন এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মোবারক হোসাইন।

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড রহস্যময়। স্বাধীনতার পর কোনো সরকারই এ হত্যার বিচার কার্যকরভাবে করেনি। বরং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ক্ষতিগ্রস্ত করার উদ্দেশ্যে সব দোষ পরিকল্পিতভাবে জামায়াতের ওপর চাপিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ভারত ও তাদের দেশীয় এজেন্টদের জড়িত থাকার প্রমাণ ভারতীয় বিশিষ্ট ব্যক্তি ও লেখকদের লেখায় পাওয়া যায়। মূলত ১৪ ডিসেম্বর পাকবাহিনীর আত্মসমর্পণের কথা থাকলেও ভারতীয় পরিকল্পনায় তা দুই দিন বিলম্বিত করা হয়। এই সময়েই শিক্ষক, কবি, সাহিত্যিক, প্রকৌশলী ও আইনজীবীসহ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করা হয়।

জামায়াত নেতা বলেন, যারা হত্যা করা হয়েছিল তারা স্বাধীনতার পক্ষে ছিলেন, তবে ভারত ও তাদের এদেশীয় এজেন্টদের আদর্শের বিরোধী ছিলেন। ভারতের প্রভাব এড়াতে এবং ভবিষ্যতের পথ নির্বিঘ্ন রাখতে পরিকল্পিতভাবে বুদ্ধিজীবী নিধন চালানো হয়। কিন্তু স্বাধীনতার পর কোনো সরকারই হত্যার সত্য উদঘাটন করেনি; বরং আওয়ামী লীগ সরকার তা গোপন রেখেছে।

গোলাম পরওয়ার উল্লেখ করেন, চলচ্চিত্রকার শহীদুল্লাহ কায়সারের ভাই জহির রায়হানের অন্তর্ধানের ঘটনাও এখনো রহস্যময়। বুদ্ধিজীবী হত্যার প্রকৃত সত্য উদঘাটনের জন্য স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করা প্রয়োজন।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, জুলাই বিপ্লবকে নস্যাৎ করতে এবং দেশের অগ্রগতির পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে জুলাই বিপ্লবের অন্যতম সিপাহসালার ওসমান হাদীর ওপর বর্বর হামলা চালানো হয়েছে। একাধিকবার প্রাণনাশের হুমকি সত্ত্বেও সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।

ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক প্রসঙ্গে গোলাম পরওয়ার বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক সমতা ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে হতে হবে। প্রভু-ভৃত্যের সম্পর্ক কখনোই গ্রহণযোগ্য নয় এবং দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ভারতের অনাকাঙ্ক্ষিত হস্তক্ষেপ কাম্য নয়।

সভায় মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, বুদ্ধিজীবীরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাদের রাজনৈতিকভাবে বিভাজন করা উচিত নয় এবং সকলকে সর্বোচ্চ সম্মান প্রদান করা উচিত। দেশের বৃহত্তর স্বার্থে রাজনৈতিক বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, বিজয়ের পাঁচ দশক পার হলেও বুদ্ধিজীবী হত্যার কুশীলবরা এখনো ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। জহির রায়হানের হত্যার রহস্যও এখনও উদঘাটিত হয়নি।

সভায় উপস্থিত ছিলেন মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমীর আব্দুর রহমান মূসা, ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, সহকারী সেক্রেটারি নাজিম উদ্দিন মোল্লা, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য জিয়াউল হাসান, মো. আতাউর রহমান সরকার, জামাল উদ্দিন, মুহিবুল্লাহ ও নাসির উদ্দিন প্রমুখ।

ইএইচপি

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত