ঢাকা, সোমবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
আজ বিশ্ব এইডস দিবস
পার্থ হক: আজ সোমবার পালিত হচ্ছে বিশ্ব এইডস দিবস। প্রতি বছর ১ ডিসেম্বর মরণব্যাধি এইডসের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম জোরদার করতে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন আয়োজন করা হয়। ২০২৫ সালের দিবসের মূল বার্তা হলো ‘চ্যালেঞ্জ পেরিয়ে, নতুনভাবে এইডস প্রতিরোধ গড়ে তোলা’, যা দেখায় সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক সংকট, যুদ্ধ, জলবায়ুজনিত দুর্যোগ ও স্বাস্থ্যখাতে অর্থের ঘাটতি আমাদের অগ্রগতিকে ধীর করেছে। তবে বার্তাটি আশা জাগায় যে আমরা চাইলে আরও শক্তিশালী ও আধুনিক এইডস প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারি।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যে দেখা গেছে, রোগী শনাক্তের দিক থেকে ঢাকার পরে রাজশাহী বিভাগ এবং এরপর চট্টগ্রাম। সম্প্রতি সিরাজগঞ্জে অস্বাভাবিক হারে রোগী শনাক্ত হচ্ছে; গত এক বছরে সেখানে ১৪৪ জন এইডস রোগী ধরা পড়েছে, যাদের ৯৮ শতাংশই সুঁই-সিরিঞ্জ ব্যবহারকারী মাদকসেবী। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রোগের নিয়ন্ত্রণে ৯৫-৯৫-৯৫ নীতির লক্ষ্য অর্জন করা জরুরি: ৯৫ শতাংশ মানুষকে সচেতন করা, ৯৫ শতাংশ রোগীকে এআরটি সেন্টারে আনা এবং তাদের ভাইরাল লোড ৫০ কপি/মিলিলিটারের নিচে রাখা।
দেশে বর্তমানে অনুমিত রোগীর সংখ্যা ১৪,৬০০। ১৯৮৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ৯,৭০৮ জন শনাক্ত হয়েছেন এবং মারা গেছেন ১,৮২০ জন। প্রাদুর্ভাবের হার বর্তমানে ০.০১ শতাংশের কম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের শেষে বিশ্বজুড়ে প্রায় ৪ কোটি ৮ লাখ মানুষ এইচআইভি নিয়ে বেঁচে ছিলেন। একই বছরে ১৩ লাখ নতুন সংক্রমণ এবং ৬ লাখ ৩০ হাজার মৃত্যু ঘটে। তবে এখনও প্রায় ৯২ লাখ মানুষ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সুবিধা পাচ্ছে না। আক্রান্তদের ৬১ শতাংশ সাবসাহারা আফ্রিকায় বসবাস করছে, এবং ১৫ বছরের নিচে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতি দিন প্রায় ৫০০।
বিশেষ করে শিশু, কিশোর-কিশোরী, অন্তঃসত্ত্বা নারী এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠী সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে। সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য এখনও বড় বাধা হিসেবে রয়ে গেছে। ২০২৫ সালের গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘমেয়াদি ইনজেকশনভিত্তিক অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল ওষুধ অনেকের জন্য সহজ ও টেকসই চিকিৎসার সুযোগ তৈরি করছে। নতুন মডেল গবেষণা ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীতে সংক্রমণ আরও নির্ভুলভাবে নির্ণয় করতে সাহায্য করছে।
আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সতর্ক করেছে যে অর্থসংকট ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর চাপ অগ্রগতিকে ধীর করতে পারে, এবং ৯৫-৯৫-৯৫ লক্ষ্যে পৌঁছানো কঠিন করতে পারে। তাই ২০২৫ সালের বিশ্ব এইডস দিবস আমাদের জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। এটি স্মরণ করায়, বিজ্ঞান, চিকিৎসা এবং সচেতনতার কারণে আমরা অনেক অগ্রগতি করেছি, তবে সমান স্বাস্থ্যসেবা এবং বৈষম্য দূরীকরণ ছাড়া এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।
এইডস মোকাবিলা শুধুই চিকিৎসার বিষয় নয়, এটি মানবিক অধিকার, ন্যায়, সমতা এবং সম্মানের বিষয়। দিবসটি আমরা সেই সব মানুষকে স্মরণ করি যারা আর আমাদের মাঝে নেই, যারা এইচআইভি নিয়ে লড়াই করছেন তাদের পাশে দাঁড়াই এবং প্রতিজ্ঞা করি একসঙ্গে কাজ করে একদিন একটি এইডস-মুক্ত পৃথিবী গড়ে তোলা সম্ভব।
এই দিবস আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে একক প্রচেষ্টা যথেষ্ট নয়; সমাজের প্রতিটি স্তরে সচেতনতা, সমবায় ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি ছাড়া এইডস মোকাবিলা অসম্পূর্ণ। পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্য সংস্থা এবং সরকার মিলিতভাবে কাজ করলেই আমরা সংক্রমণ কমাতে পারব, আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াতে পারব এবং একদিন একটি এইডস-মুক্ত পৃথিবী নিশ্চিত করতে পারব।
ইএইচপি
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- বাংলাদেশ বনাম আয়ারল্যান্ড ২য় T-20: খেলাটি সরাসরি(LIVE) দেখুন এখানে
- চলছে ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকার ২য় টেস্ট: খেলাটি সরাসরি দেখুন এখানে
- শীতকালীন ছুটি বহাল থাকছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে
- বাংলাদেশ বনাম আয়ারল্যান্ড: টি-২০ ম্যাচটি শেষ-দেখুন ফলাফল
- বাংলাদেশ বনাম আয়ারল্যান্ড টি-২০ ম্যাচ: কবে, কখন, কোথায়-যেভাবে দেখবেন
- বাংলাদেশ বনাম আয়ারল্যান্ড ২য় টি-টোয়েন্টি: কবে, কোথায়, কখন-দেখুন সময়সূচি
- শুক্রবার গ্যাসের চাপ কম থাকবে যেসব এলাকায়
- কিছুক্ষণ পর বাংলাদেশ বনাম আয়ারল্যান্ড ২য় T-20-সরাসরি দেখার উপায়
- বাংলাদেশ বনাম আয়ারল্যান্ড: ব্যাটিংয়ে আয়ারল্যান্ড, দেখুন স্কোর-LIVE
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
- বাংলাদেশ বনাম মালয়েশিয়া: দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু-দেখুন ফলাফল-LIVE
- বাংলাদেশ বনাম মালয়েশিয়া: ফুটবল ম্যাচটি সরাসরি দেখুন(LIVE)
- ব্রাজিল বনাম পর্তুগাল: খেলাটি সরাসরি দেখুন এখানে(LIVE)
- আজ বাংলাদেশ বনাম আয়ারল্যান্ড T20 ম্যাচ: যেভাবে দেখবেন সরাসরি(LIVE)
- বাংলাদেশ বনাম আয়ারল্যান্ড: ব্যাটিংয়ে টাইগাররা-সামনে চ্যালেঞ্জিং স্কোর-LIVE