ঢাকা, বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

তবে কি বিএনপির ৪০ আসনে প্রার্থী রদবদল চূড়ান্ত?

২০২৫ নভেম্বর ২৫ ০১:১৪:২০

তবে কি বিএনপির ৪০ আসনে প্রার্থী রদবদল চূড়ান্ত?

সরকার ফারাবী: আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপির ঘোষিত প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা দলটির অভ্যন্তরে বড় ধরনের অন্তর্দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করেছে। ২৩৬টি আসনের মধ্যে কমপক্ষে ৪০টি আসনে বিভেদের মাত্রা সর্বাধিক, যা পার্টি হাইকমান্ডকে সমস্যা সমাধানের জন্য তৎপর করেছে। বিদ্রোহী নেতাদের একত্রিত করতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিশেষ বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে।

মাঠ পর্যবেক্ষণ: ঐক্যহীনতা ও অর্থব্যয়ের চাপ

দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারকদের স্পষ্ট নির্দেশ থাকলেও কিছু নির্বাচনী এলাকায় ঐক্যবদ্ধ থাকার নির্দেশ উপেক্ষিত হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, প্রাথমিকভাবে মনোনয়নপ্রাপ্ত অনেক নেতা বঞ্চিত নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় বা সহযোগিতায় আগ্রহী হননি, যা বিভেদকে আরও গভীর করেছে। এদিকে মনোনীত ও বঞ্চিত নেতারা শেষ মুহূর্তের সিদ্ধান্তের আশায় প্রচারণায় প্রচুর অর্থ ও শ্রম ব্যয় করছেন। বঞ্চিত নেতাদের সমর্থকরা সড়ক অবরোধ, মিছিল ও সমাবেশের মাধ্যমে প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিও তুলছেন। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, এই অভ্যন্তরীণ বিভেদ বিএনপির ক্ষতি করছে, যেখানে প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলো সুবিধা নিতে পারছে।

৪০ আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের দাবি: কারণ ও প্রেক্ষাপট

তৃণমূলের মনোনয়ন বঞ্চিত নেতারা অভিযোগ করেছেন যে একক প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে স্থানীয় জনপ্রিয়তা এবং গ্রহণযোগ্যতা সঠিকভাবে যাচাই করা হয়নি। তাদের ধারণা, জরিপের সঙ্গে যুক্ত কিছু ব্যক্তি হাইকমান্ডকে ভুল তথ্য প্রদান করেছেন। এই কারণে প্রার্থিতা নিয়ে অভ্যন্তরীণ বিরোধ তৈরি হয়েছে। বিএনপি ইতিমধ্যে একটি বিশেষ দল গঠন করেছে, যা প্রার্থীদের দুর্বলতা এবং বঞ্চিতদের জনসমর্থন পুনর্মূল্যায়ন করবে। দলের তথ্য বিশ্লেষণের ভিত্তিতে চূড়ান্ত মনোনয়ন তালিকা নির্ধারণ করা হবে।

স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু জানান, “এটি চূড়ান্ত তালিকা নয়, বরং সম্ভাব্য খসড়া। যদি কোনো এলাকায় পরিবর্তনের প্রয়োজন হয়, তা বিশদভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর করা হবে।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, একাধিক যোগ্য নেতা থাকার কারণে কিছু স্থানীয় ক্ষোভ স্বাভাবিক, যা আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত সমাধান করা হচ্ছে।

তীব্র বিরোধপূর্ণ আসনসমূহ

প্রার্থী পরিবর্তনের চাপ সবচেয়ে বেশি যেসব আসনে প্রাথমিক মনোনীত প্রার্থীর অবস্থান তুলনামূলক দুর্বল এবং বঞ্চিত প্রার্থীরা বেশি জনপ্রিয়, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য: চাঁদপুর-২, সুনামগঞ্জ-৫, কুষ্টিয়া-১ ও ৪, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪, নরসিংদী-৪, নাটোর-১, নারায়ণগঞ্জ-২, গাইবান্ধা-২, চট্টগ্রাম-১২ ও ১৩। প্রায় ৪০টিরও বেশি আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে তীব্র আন্দোলন চলছে।

তবে গাজীপুর-২ ও বরিশাল-৫-এর মতো কিছু আসনে মনোনীত প্রার্থীরা বঞ্চিত নেতাদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নেমে ইতিবাচক উদাহরণ স্থাপন করেছেন।

চূড়ান্ত তালিকায় এই ৪০টি আসনে বিএনপি কী সিদ্ধান্ত নেবে, তা নিয়মিতভাবে দলীয় নেতাকর্মী এবং সাধারণ জনগণ হাইকমান্ডের দিকে তাকিয়ে থাকবে।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত