ঢাকা, শনিবার, ৮ নভেম্বর ২০২৫, ২৪ কার্তিক ১৪৩২

অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে আলমগীর কবিরসহ পরিবারের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু

২০২৫ নভেম্বর ০৮ ১৯:০৪:২৭

অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে আলমগীর কবিরসহ পরিবারের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বেসরকারি ব্যাংক সাউথইস্ট ব্যাংক–এর সাবেক চেয়ারম্যান আলমগীর কবির, তার ছেলে রাইয়ান কবির, পুত্রবধূ নুসরাত নাহার এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তদন্ত শুরু করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ফাইনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) এক গোয়েন্দা প্রতিবেদনে প্রি-আইপিও প্লেসমেন্ট ও সেকেন্ডারি মার্কেটে লেনদেনের আড়ালে ঋণ জালিয়াতি, সন্দেহজনক লেনদেন ও অর্থ আত্মসাৎ–এর অভিযোগ উঠে আসে। এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে বিএসইসি তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, যাদের ৬০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন—অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া, উপ-পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান এবং সহকারী পরিচালক রানা দাশ। তদন্তের বিষয়ে আভিভা ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালককেও অবহিত করা হয়েছে।

কমিটি তদন্ত করবে—সাউথইস্ট ব্যাংকের অভিযুক্ত কর্মকর্তারা কী পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন এবং তাদের কর্মকাণ্ডে শেয়ারবাজার ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বিএসইসি মনে করে, বিনিয়োগকারীদের বৃহত্তর স্বার্থে এই অভিযোগ তদন্ত করা প্রয়োজন। সে লক্ষ্যে কমিশন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স ১৯৬৯-এর ধারা ২১, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

প্রসঙ্গত, আলমগীর কবির গত ২০ জুলাই ব্যক্তিগত ও অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে সাউথইস্ট ব্যাংকের পরিচালক পদ থেকে পদত্যাগ করেন। তিনি ২০০৪ সাল থেকে টানা ২০ বছর ব্যাংকটির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন। তার মেয়াদকালে স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের পরিচালনা পর্ষদে যুক্ত করা, অনিয়মের মাধ্যমে ঋণ বিতরণ ও বিধিবহির্ভূত সিদ্ধান্ত নেওয়ার অভিযোগ ওঠে।

সরকার পরিবর্তনের পর ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে বড় ধরনের রদবদল আসে। গত ২৯ সেপ্টেম্বর এম এ কাশেম নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হন। তবে চেয়ারম্যান পদ ছাড়লেও আলমগীর কবির পরিচালক হিসেবেই দায়িত্ব পালন করছিলেন।

এর আগেও বিএসইসি তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছিল। ২০২৪ সালের ১৯ নভেম্বর বে লিজিংয়ের শেয়ার লেনদেনে সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের দায়ে তাকে ১২ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়। একই ঘটনায় তার স্ত্রী সুরাইয়া বেগমকে পাঁচ কোটি টাকা এবং জামাতা তুষার এল কে মিয়াকে আড়াই কোটি টাকা জরিমানা করে কমিশন।

এ ছাড়া, ২০২৫ সালের ১৪ জুলাই আলমগীর কবিরকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পৃথক দুটি আবেদনের প্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন আদালত।

এএসএম/

শেয়ারবাজারের বিশ্লেষণ ও ইনসাইড স্টোরি পেতে আমাদের পেজ ফলো করুন।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত